সাড়ে তিন বছরের জেল আর পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরও ছ’মাস জেল।
নিজের ‘ভবিতব্য’ শুনে নিলেন লালু প্রসাদ। সিবিআই আদালতের ৩২ ইঞ্চি স্ক্রিনে দেখা যাচ্ছিল, রাঁচীর বিরসা মুণ্ডা জেলের ভিডিও কনফারেন্স রুমে দাঁড়িয়ে আছেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। পাশে তাঁরই মতো পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির দেওঘর ট্রেজারি তছরুপ মামলায় দোষী সাব্যস্ত আরও ১৫ জন। পরপর সকলকেই সাজা শুনিয়ে দিলেন বিচারক শিবপাল সিংহ।
জোড়হাতে বিচারককে নমস্কার জানালেন লালু। পরপর দু’বার। তার পর মাথাটা নামিয়ে নিলেন।
বিকেল সাড়ে ৪টে বাজবে বাজবে করছে। রাঁচীর আদালতের ভিডিও কনফারেন্স রুম থেকে বেরিয়েই লালুর আইনজীবী অশোক কুমার ঘেরাও হয়ে গেলেন আরজেডি প্রধানের অনুগামী-সমর্থক আর মিডিয়ার হাতে। ‘‘কী হল? কী হল?’’ রায় জানিয়ে দিলেন অশোক। ক্ষণিক স্তব্ধতা। হতাশা। ‘ব্রেকিং নিউজ’ চালু।
আরজেডির এক নেতা জানালেন, তিন বছর বা তার কম জেল হলে সোমবারই নিম্ন আদালতে জামিনের আবেদন করতে পারতেন লালু। কিন্তু এখন রাঁচী হাইকোর্টে যেতে হবে। লালু-পুত্র তেজস্বী জানিয়ে দিয়েছেন, রায়ের কপি পেলেই হাইকোর্টে যাবেন। সাজাকে চ্যালেঞ্জ করে জামিন চাইবেন বাবার। পটনা থেকে আজই রাঁচীতে এসেছিলেন লালু-ভক্ত বিকাশ কুমার। মুঠোয় তখনও ধরা পুজোর ফুল। বললেন, ‘‘শীতের ভোরে দেউরি মন্দিরে গিয়ে লালুজির সাজা কমানোর জন্য পুজো দিয়েছিলাম। কী যে হল!’’ আরজেডি বিধায়ক ভোলা যাদব বলছিলেন, ‘‘ফাঁসানো হয়েছে লালুজিকে। তবে আদালতের রায়কে সম্মান করি।’’
গত তিন দিনের মতো আজও সংশয় ছিল, রায় বেরোবে কি না। ৬ জনের চূড়ান্ত শুনানি বাকি ছিল। দুপুর ২টোয় ভিডিও কনফারেন্স রুমে এসে কুড়ি মিনিটের মধ্যেই শুনানি সেরে বেরিয়ে বিচারক জানালেন, আজই বিকেল ৪টেয় সাজা শোনাবেন।
৪টে বাজল। উৎকণ্ঠা। জজসাহেব কই? মিনিট দশেক পরেই এলেন তিনি। ফের ভিডিও কনফারেন্স রুমে ঢুকে ১৬ জনকে সাজা শোনাতে বিচারক শিবপাল সিংহ সময় নিলেন আরও বড়জোর দশ মিনিট।