প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
অধরা নেকড়ের কবলে এ বার ২৮ বছর বয়সি এক মহিলা। রাতের অন্ধকারে এসে মহিলার ঘাড়ে কামড় বসায় ওই নেকড়েটি। তবে টেনে নিয়ে যাওয়ার আগেই ওই মহিলার চিৎকারে সজাগ হয়ে যান গ্রামবাসীরা। তাড়া খেয়ে মহিলাকে ছেড়েই পালায় নেকড়েটি। উত্তরপ্রদেশের বহরাইচে নেকড়ে আতঙ্ক কাটছেই না। শেষ নেকড়েটিকে বাগে আনতে পারছেন না বনকর্মীরা।
বন দফতর জানিয়েছে, বহরাইচ জেলার সিনগিয়া নাসিরপুর গ্রামের এক বাড়িতে বৃহস্পতিবার রাতে হামলা চালায় নেকড়েটি। এই গ্রামে আগেও নেকড়ে হানা দিয়েছে। বেশ কয়েক জন গ্রামবাসীকে জখম করেছে। গ্রামবাসী এবং বনকর্মীরা রাতে গ্রামে টহল দিচ্ছেন। তবুও সকলের নজর এড়িয়ে মহিলাকে জখম করে পালাল ওই মানুষখেকো নেকড়েটি।
জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময় থেকেই বহরাইচে নেকড়ে আতঙ্ক শুরু হয়। প্রথম দিকে স্পষ্ট ছিল না যে, এটি একটি নেকড়ের কাজ, না কি আরও অনেক নেকড়ে রয়েছে সেই দলে। তবে স্থানীয়দের বর্ণনা অনুযায়ী নজরদারি শুরু করে বন দফতর। তখনই তারা জানতে পারে, একা নয়, নেকড়ের একটি দল এই হামলা চালাচ্ছে। সেই দলে ছিল ছ’টি নেকড়ে। তাদের ধরতে বিশাল আয়োজন করে বন দফতর। ‘অপারেশন ভেড়িয়া’ অভিযানে নামে তারা। একে একে পাঁচটি নেকড়েকে ফাঁদ পেতে ধরতে পারলে এখনও অধরা এক। গত কয়েক দিন সেই নেকড়েই তাণ্ডব চালাচ্ছে বহরাইচের বিভিন্ন গ্রামে।
সরকারি হিসাবে, নেকড়ের আক্রমণে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত আরও অনেকে। ৩৫টি গ্রামের মানুষ নেকড়ের আতঙ্ক সিঁটিয়ে রয়েছেন। রাতে না ঘুমিয়ে লাঠিসোঁটা হাতে গ্রাম পাহারার কাজ শুরু করেন ছেলেরা। সর্বদাই ছিল সতর্ক দৃষ্টি। কিন্তু তার পরেও নেকড়ের অতর্কিত হামলা থেকে রক্ষা করা যায়নি শিশু, মহিলাদের।
বহরাইচে নেকড়ে দলের একের পর এক হামলাকে ‘বন্যপ্রাণী বিপর্যয়’ হিসাবে ঘোষণা করেছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। বন দফতরের কর্মীরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে বহরাইচের বিভিন্ন জায়গায় পাহারা দেওয়া শুরু করেছেন। মানুষখেকো নেকড়েদের ধরতে ২৫টি দল গঠন করা হয়েছে। সেই দলে রয়েছেন ১৮ জন শার্প শুটার। যে এলাকাগুলিতে নেকড়ের হামলা হচ্ছে, সেখানে স্থানীয়দের নিরাপত্তার জন্য ২০০ জন পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। তবুও হামলা থামার নাম নেই। ষষ্ঠ নেকড়েটি ধরা না পড়া পর্যন্ত এখনই স্বস্তি ফিরছে না বহরাইচে।