গ্রামে পর পর জ্বলছে চিতা। ছবি: সংগৃহীত।
কেউ সন্তান হারিয়েছেন, কেউ বাবা, কেউ আবার স্বামীকে। গ্রামের যে দিকেই কান পাতা যায়, সে দিক থেকেই কান্নার রোল ভেসে আসছে। তামিলনাড়ুর করুণাপুরম গ্রাম। রাজ্যে বিষমদকাণ্ডে যে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে এই গ্রামেরই ২৪ জন। বৃহস্পতিবার গণচিতা সাজিয়ে সৎকার করা হয়েছে ওই ২৪ জনের। স্বজন হারিয়ে গ্রামে এখন শুধুই হাহাকার।
পুত্রের চিতার সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে মহিলা বলেন, “বাড়িতে ফিরেই ছেলে পেটের যন্ত্রণায় কাতরাতে শুরু করেছিল। চোখ খুলতে পারছিল না। প্রথমে বুঝতে পারিনি এ রকম কেন হচ্ছে। ছেলের মুখে শোনার পরই হাসপাতালে ওকে নিয়ে ছুটেছিলাম। কিন্তু হাসপাতাল থেকে বলা হল, আপনার ছেলে মত্ত। ওকে ভর্তি নেওয়া যাবে না।” চোখের সামনেই ছটফট করতে করতে সন্তানকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখলেন মহিলা। রাজ্যের সমস্ত মদের দোকান, বেআইনি মদ ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলেও দাবি তুলেছেন পুত্রহারা ওই মহিলা।
শুধু তিনি একাই নন, এই ঘটনায় কেউ হারিয়েছেন তাঁর স্বামীকে, কেউ তাঁর দাদা, আবার কেউ বাবাকে হারিয়েছেন। কল্লাকুরিচির এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত একশো জনেরও বেশি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার-সহ পুলিশের একাধিক কর্তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বদলি করা হয়েছে জেলাশাসককেও। মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন বেআইনি মদ ব্যবসার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এই প্রথম নয়, গত বছরেও বিষমদ খেয়ে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছিল তামিলনাড়ুতে। কল্লাকুরিচির এই কাণ্ড প্রশ্ন তুলে দিয়েছে আগের বারের ঘটনা থেকে কেন শিক্ষা নেয়নি রাজ্য সরকার? কেন তার পরেও রাজ্যে রমরমিয়ে বেআইনি মদ ব্যবসা চলেছে? কেন প্রশাসন নজরদারি চালায়নি? এআইএডিএমকে প্রধান ই পলানিস্বামী মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তুলেছেন।