সেনা কনভয়ে হামলা, হত ২০ জওয়ান

আফস্পা প্রত্যাহারের বার্তা নিয়ে ফের যে দিন দিল্লি রওনা হলেন ইরম শর্মিলা চানু, সে দিনই মণিপুরের চান্ডেল জেলায় সেনাবাহিনীর উপরে হামলা চালাল জঙ্গিরা। নিহত ২০ জন জওয়ান। জখম বারো জন। ফলে, মণিপুরে আফস্পা বজায় রাখার জমি আরও মজবুত হল বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর।

Advertisement

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৫ ০৩:৪২
Share:

হামলার পরে কড়া নিরাপত্তা গোটা এলাকায়। বৃহস্পতিবার মণিপুরের চান্ডেল জেলায়। ছবি: পিটিআই।

আফস্পা প্রত্যাহারের বার্তা নিয়ে ফের যে দিন দিল্লি রওনা হলেন ইরম শর্মিলা চানু, সে দিনই মণিপুরের চান্ডেল জেলায় সেনাবাহিনীর উপরে হামলা চালাল জঙ্গিরা। নিহত ২০ জন জওয়ান। জখম বারো জন। ফলে, মণিপুরে আফস্পা বজায় রাখার জমি আরও মজবুত হল বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর।

Advertisement

সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ ভোরবেলা ৬ নম্বর ডোগরা রেজিমেন্টের জওয়ানরা ৫টি গাড়ির কনভয় নিয়ে ইম্ফল থেকে মোটুল যাচ্ছিলেন। ইম্ফল থেকে রেজিমেন্টের বেশ কিছু কর্মী চান্ডেলে বদলি হয়েছিলেন। তাঁরাই ছিলেন এই কনভয়ে। সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ তেংনাউপল-নিউ সোমতালের রোডে পারালং ও চারং গ্রামের মধ্যবর্তী মোলটুক গ্রামের কাছে পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিরা রকেটচালিত গ্রেনেড ছোড়ে। বিস্ফোরণে একটি গাড়িতে আগুন ধরে যায়। গাড়ির ভিতরেও বিস্ফোরণ হয়। এর পর শুরু হয় নাগাড়ে গুলিবর্ষণ। হামলা চলে প্রায় দশটা পর্যন্ত। ঘটনাস্থলেই ১১ জন জওয়ান মারা যান।
জখম হন ২০ জন। জওয়ানরা পাল্টা গুলি চালালেও জঙ্গিদের কেউ হতাহত হয়নি বলে প্রাথমিক খবর। ঘটনাস্থল থেকে জঙ্গিরা একাধিক আগ্নেয়াস্ত্রও লুঠ করে। জখম জওয়ানদের পরে চপারে লেইমাখং সেনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে আরও ৯ জন জওয়ান মারা যান। ১১ জন জওয়ান গুরুতর জখম অবস্থায় এখনও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। পরে সেনাবাহিনী এবং আধা সেনা এলাকা জুড়ে তল্লাশি শুরু করে। তবে, তার আগেই জঙ্গিরা মায়ানামারে পালিয়ে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

সেনাবাহিনী প্রথম থেকেই সন্দেহ করছিল, সংঘর্ষ-বিরতি ভঙ্গ করা খাপলাং বাহিনী ও আলফার সেনাধ্যক্ষ পরেশ বরুয়ার মদতেই মণিপুরের পিএলএ জঙ্গিরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। রাতে যৌথ মঞ্চ ঘটনার দায় নেয়। হামলার নিন্দা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘এই ঘটনা অত্যন্ত হতাশাজনক। নিহত জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।’’ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরও বলেছেন, ‘‘হামলায় জড়িত জঙ্গিদের আইন মেনে কড়া সাজা দেওয়া হবে।’’ কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীও বলেছেন, ‘‘এই দুঃখের দিনে আমরা সবাই নিহত জওয়ানদের পরিবারের পাশে আছি।’’

Advertisement

অরুণাচল ও মণিপুরের পার্বত্য জেলাগুলিতে খাপলাং বাহিনীর প্রভাব রয়েছে। এনএসসিএন খাপলাং বাহিনীকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযানের নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। গতমাসেও মণিপুরের তামেংলং জেলায় সেনাবাহিনী চার খাপলাং জঙ্গিকে মারে। গত তিন মাস ধরে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে জঙ্গি হামলা চলছেই। ৩ মে এক হামলার পরে এনএসসিএন খাপলাং, আলফা, কেএলও ও এনডিএফবির সংযুক্ত মঞ্চ এক যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে সেই হামলার দায় নেয় এবং মিলিত মঞ্চের কথা ঘোষণা করে। চান্ডেলের পিএলএ জঙ্গিরা ওই জোটে না থাকলেও মায়ানমারে খাপলাং শিবিরে থেকেই তারা অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেয় এবং এই শিবির থেকেই অস্ত্র সরবরাহ করা হয়। ওই একই শিবিরে আছেন পরেশ বরুয়াও। এ দিন রাতে এই যৌথ মঞ্চই চান্ডেলে হামলার দায় নিয়ে ঘোষণা করে, এ ভাবেই ভারতীয় বাহিনীর উপরে সশস্ত্র আক্রমণ চলবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement