সোন নদীর গর্ভে আটকে থাকা ট্রাক। ছবি: সংগৃহীত।
বিহারের রোহতস জেলার দেহরি এলাকায় সোন নদীতে ডুবে গিয়েছে দু’টি ট্রাক। ক্রমশ বাড়ছে জলস্তর। কাতার বালুঘাটে আটকে অন্তত ২৮ জন। অবিরাম বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি বিহারের বিস্তীর্ণ এলাকায়। ইতিমধ্যেই জলের তলায় চলে গিয়েছে একাধিক জেলার অধিকাংশ নীচু এলাকা। বৃষ্টি চলতে থাকলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হবে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।
বন্যার জলে ভাসা বিহারের বাসিন্দাদের কাছে বাৎসরিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফি বছর বন্যায় রাজ্যের কোথাও না কোথাও বন্যা হয়। নদী দু’কুল উপচে ভাসিয়ে নিয়ে যায় বিস্তীর্ণ এলাকা। এ বছর সদ্য বর্ষা শুরু হয়েছে। যে রূপ দেখাচ্ছে বর্ষা তাতে প্রথম দফাতেই বন্যার ভ্রুকুটি বিহারে। এ বার এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রোহতস জেলা। সোন নদীর জল লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। তিন দিন আগে নদীগর্ভে নেমেছিল ট্রাকগুলি। চলছিল বালি তোলার কাজ। কিন্তু আচমকাই প্রবল বৃষ্টিতে কাজ বন্ধ করে দিতে হয়। সব ট্রাক নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হলেও দু’টি ট্রাক আটকে যায় নদীগর্ভেই। খুব অল্প সময়ের মধ্যে জলস্তর এতটাই বৃদ্ধি পায় যে ট্রাকগুলি ছেড়ে পালিয়ে চলে আসতে বাধ্য হন চালক, সহকারীরা। তিন দিন ধরে সেখানেই আটকে রয়েছে ট্রাক দু’টি।
দেহরির সার্কল অফিসার অনামিকা কুমার বলেন, ‘‘গত কাল (শুক্রবার) থেকেই ট্রাক দু’টি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। সোন নদীর বুকে ১০০ মিটারের একটি রাস্তাও তৈরি করা হয়েছে যাতে ট্রাকগুলিকে তুলে আনা যায়। কিন্তু যে ভাবে জলস্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে খুবই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আমরা এখনও চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রশাসনের সমস্ত বিভাগই আমাদের সাহায্য করছে। আশা করছি, শনিবার সন্ধ্যার মধ্যেই ট্রাক দু’টি নদীগর্ভ থেকে বার করে আনতে পারব।’’
বিহারের আরারিয়া, পূর্ণিয়া, মাধেপুরা, সহরসা, জামুই, কাটিহার এবং বাঙ্কা জেলায় প্রবল বৃষ্টিপাতের জেরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই জেলাগুলির নীচু এলাকা ইতিমধ্যেই জলের তলায় চলে গিয়েছে। আবহাওয়া দফতর অবশ্য আগেই ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছিল। সেই পূর্বাভাসকে অক্ষরে অক্ষরে মিলিয়ে বিহারে বৃষ্টি নামে। সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বিহারের রাজধানী পটনায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৫৩.৪৫ মিলিমিটার। তবে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে রানিগঞ্জে। সেখানে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ৯০.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যদিও পটনার পুরসভা দাবি করছে, গত দু’দিন ধরে প্রবল বৃষ্টি হলেও তারা শহর থেকে সফল ভাবে সমস্ত জল বার করে দিতে সক্ষম হয়েছে।
স্থানীয় মানুষের অবশ্য দাবি, যে হারে গত দু’দিন ধরে বৃষ্টি চলছে তা অব্যাহত থাকলে গোটা রাজ্যেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।