চলছে সেনা টহল। ছবি: পিটিআই।
সবুজ মাঠটা মাঝখানে রেখে ছড়ানো স্কুল চত্বর। খয়েরি রঙা স্কুল বিল্ডিং— পরপর সাতটা। একটার বেশ কিছু জানলার কাচ আপাতত চৌচির। দেওয়ালে পোড়া দাগ। ওই বিল্ডিংয়ে লুকিয়েই গুলি চালাচ্ছে দুই লস্কর জঙ্গি।
ঠিক উল্টো দিকের বিল্ডিংটার দু’পাশে দাঁড়িয়ে দু’টো আর্মি ট্রাক। যুদ্ধ চলছে শ্রীনগরের ‘দিল্লি পাবলিক স্কুলে’। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এর আগে তিরিশেরও বেশি স্কুল জ্বালিয়েছে উপত্যকায়। কিন্তু এ ভাবে স্কুলে ঘাঁটি গেড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের লড়াই, তা-ও আবার শ্রীনগরের প্রথম সারির কোনও স্কুলে— এ নজির স্মরণকালে নেই।
গত সন্ধেয় শ্রীনগরের পান্থা চক এলাকায় সিআরপি-র গাড়ির উপরে হামলা চালিয়েছিল দুই জঙ্গি। নিহত হন সাহেব শুক্ল নামে এক অফিসার। এর পরেই পাশের ‘দিল্লি পাবলিক স্কুলে’ ঢুকে পড়েছিল জঙ্গিরা। রাজ্য পুলিশের ডিজি এস পি বৈদ্যের কথায়, ‘‘এত বড় স্কুলে এমনিতেই অভিযান চালানো শক্ত। উপত্যকার পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে স্কুলের উপরে হামলা চালানো হচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও জঙ্গিরা বেছে বেছে স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিল বলেই আমাদের ধারণা। কারণ, স্কুলের ক্ষতি হলে পড়াশোনা ব্যাহত হবে। আমরা সেটা কিছুতেই হতে দেব না।’’ অভিযানে স্কুলবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি যথাসম্ভব এড়ানোর চেষ্টা ছিল বাহিনীর তরফেও। জঙ্গিরা সন্ধেয় স্কুলে ঢোকায় কিছুটা সুবিধেই হয়েছিল তাদের। কারণ, কোনও পড়ুয়া, শিক্ষক বা কর্মী ছিলেন না স্কুলে।
আরও পড়ুন: ট্রাম্প-সাক্ষাতে দাউদ নিয়েও কথা চান মোদী
অভিযানে আধাসেনার সঙ্গে যোগ দেন সেনার প্যারা কম্যান্ডোরাও। রাতভর লড়াইয়ের পরে আজ খতম হয় দুই জঙ্গি। সেনার দাবি, তাদের নাম আবু হুরেইরা ও আবু তালহা। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ২ নম্বর প্যারা কম্যান্ডো রেজিমেন্টের নায়েক তুষার ওয়াগা ও ক্যাপ্টেন ভিশু দীপক। তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল।
স্কুল চত্বরের এক কিলোমিটারের মধ্যেই সেনার ১৫ নম্বর কোরের সদর দফতর। ইদের আগে কার্যত সেনার নাকের ডগায় হামলা চালিয়ে জঙ্গিরা প্রশাসনকে বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল বলেই ধারণা গোয়েন্দাদের।