Fire break out

তিনসুকিয়ায় খনির আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে একমাস, আগুন নেভাতে গিয়ে মৃত ২

জীববৈচিত্রে ভরপুর ওই এলাকা অগ্নিকাণ্ডের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পরিবেশপ্রেমীরা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২০ ১৪:০৩
Share:

বাঘজানের ওই খনি থেকে বেরিয়ে আসছে কালো ধোঁয়া। ছবি: রয়টার্স

মঙ্গলবার দুপুরে আগুনের শিখা দেখা গিয়েছিল অসমের তিনসুকিয়ার বাঘজান এলাকার প্রাকৃতিক গ্যাসের কুয়োয়। তার পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও, এখনও জ্বলছে ওই খনিটি। এর মধ্যেই ওই এলাকা থেকে অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের দুই কর্মীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, আগুন নেভাতে গিয়েই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার ওই খনি এলাকার পাশে একটি জলা জায়গা থেকে দু’জনের দেহ উদ্ধার করা হয়। অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের কর্তাদের মতে, বাঘজানের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি আয়ত্তে আসতে মাস খানেক সময় লাগতে পারে। তাতে ভিন্ন বিপদের আশঙ্কা করছেন পরিবেশপ্রেমীরা। ওই খনি এলাকার খুব কাছেই রয়েছে ডিব্রু সাইখোয়া জাতীয় উদ্যান। জীববৈচিত্রে ভরপুর ওই এলাকায় ভয়াবহ প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

বাঘজানের খনিতে বিধ্বংসী আগুন নেভানোর কাজে নেমেছিলেন সংস্থার নিজস্ব দমকল বিভাগের কর্মীরা। কিন্তু তাঁদের মধ্যে দুর্লভ গগৈ ও টিকেশ্বর গোঁহাই নামে দু’জনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এ দিন সকালে তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের মুখপাত্র ত্রিদিব হাজারিকা সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছেন, ‘‘একটি জলা জায়গা থেকে ওই দু’জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, আগুনের হাত থেকে বাঁচতে ওই জলায় লাফ দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু পরে আর সেখান থেকে আর উঠতে পারেননি। জলে ড়ুবে তাঁদের মৃত্যু হয়। তাঁদের দেহে পুড়ে যাওয়ার কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি।’’

যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে প্রাকৃতিক গ্যাসের ওই কুয়োর আগুন নেভানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আগুন আয়ত্তে আনার কাজে নামানো হয়েছে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ)। তাদের সহযোগিতা করছে সেনাবাহিনীও। আগুন নেভানোর কাজে নামানো হয়েছে বায়ু সেনাকেও। গোটা এলাকা ঘিরে ফেলেছে আধা সামরিক বাহিনী। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, কুয়োর দেড় কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যেই আগুন সীমাবদ্ধ রয়েছে। তবে এখনও তাকে আয়ত্তে আনা যায়নি। কারণ কুয়ো থেকে বেরিয়ে আসা প্রাকৃতিক গ্যাসই এখন ওই আগুনকে ইন্ধন জুগিয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ভারতে এই প্রথম সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা পেরিয়ে গেল সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যাকে​

ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা বাসিন্দাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল আগেই। কিন্তু এই বিধ্বংসী আগুন আশপাশের পরিবেশের উপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে চলেছে বলেই মনে করছেন পরিবেশপ্রেমীরা। অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেড সূত্রে খবর, ওই আগুন আয়ত্তে আসতে এক মাসের কাছাকাছি সময় লাগতে পারে। আর তাতে আশঙ্কা আরও গভীর হয়েছে। ওই খনির পাশেই রয়েছে ডিব্রু সাইখোয়া জাতীয় উদ্যান, মাগুরি-মোটাপাঙ জলা ও বারেকুরি নামে একটি গ্রাম। আগুন দীর্ঘস্থায়ী হলে আশপাশের জীববৈচিত্র দারুণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ওই এলাকা থেকে ইতিমধ্যেই একাধিক প্রজাতির মৃত পাখি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় পরিবেশপ্রেমীরা। এই দুর্ঘটনার ধাক্কা আরও জোরাল হতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: ‘হ্যাঁ, ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করেছে চিন’! অভিনব কৌশলে পাল্টা কংগ্রেসকেই বিঁধলেন লাদাখের সাংসদ

স্থানীয়দের অভিযোগ, অগ্নিকাণ্ডের জেরে আশপাশের বাসিন্দাদের প্রায়। ৫০ থেকে ৬০টি ঘর পুড়ে গিয়েছে। এ নিয়ে ওই সংস্থাটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement