— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে নিখোঁজ অরুণাচল প্রদেশের দুই ব্যক্তি। লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের অদূরেই এক গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন তাঁরা। স্থানীয়দের মত, চিনের পিপল্স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র হাতে বন্দি রয়েছেন তাঁরা।
নিখোঁজ দুই ব্যক্তির নাম বাতেলুম টিকরো (৩৫) ও তার ভাই বাইনসি মান্যু (৩৭)। অরুণাচল প্রদেশের অঞ্জো জেলার চাগলাগ্রাম এলাকা থেকে দু’বছর আগে এক দিন নিখোঁজ হয়ে যান দু’জনেই। ২০২২ সালের ১৯ আগস্ট তাঁদের শেষ বারের মতো দেখা গিয়েছিল। সে দিন পাহাড়ে ওষধি গাছের খোঁজে গিয়েছিলেন ওই দুই ভাই।
(বাঁ দিকে) বাতেলুম টিকরো। বাইনসি মান্যু (ডান দিকে)। — সংগৃহীত।
টিকরোর ভাই সংবাদ সংস্থাকে জানাচ্ছেন, চিনাবাহিনী তাঁদের আটক করে রেখেছে, এমনটাই স্থানীয়দের সন্দেহ। স্থানীয় সেনা কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিক বার ভাইদের সম্পর্কে তথ্য চেয়ে যোগাযোগ করেও কোনও লাভ হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতি বারই শুনতে হয়েছে, পিএলএ-র সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ভারতীয় সেনা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও সাড়া মেলেনি।’’
অঞ্জোর বিধায়ক তথা রাজ্যের নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী দাসাংলু পুল জানাচ্ছেন, চিন সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ওষধি গাছের খোঁজে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলেন ওই দু’জন। দাসাংলু সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, ‘‘চিন এখনও সরাসরি স্বীকার করেনি ওই দুই যুবক তাদের হেফাজতে রয়েছে কি না। তবে আমাকে বলা হয়েছে, বেঁচে আছেন দু’জনেই।’’
২০২২ সালের ৯ অক্টোবর হায়ুলিয়াং থানায় ওই দু’জনের নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, কোনও কোনও গ্রামবাসীর দাবি, ওই দুই ভাইকে ২৪ আগস্ট পর্যন্তও ওই অঞ্চলে দেখা গিয়েছিল। তার পর থেকেই খোঁজ মেলেনি তাঁদের। ওই দু’জনের আধার কার্ডের তথ্য বলছে, বাতেলুমের বাড়ি দোইলিয়াংয়ে, আর বাইনসি চিপরোগামের বাসিন্দা। বাইনসি বিবাহিত, তাঁর দুই সন্তানও রয়েছে।
অঞ্জো জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোবলেম পুল জানাচ্ছেন, ওই দু’জনের পরিবার বার বার তাঁকে কিছু পদক্ষেপ করার জন্য অনুরোধ করেছিল। কিন্তু তাঁরা অসহায়। সোবলেম আরও বলেন, ‘‘এ রকম ঘটনা ঘটেছে এর আগেও। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নিখোঁজ ব্যক্তিরা দিন কয়েকের মধ্যে বাড়ি ফিরে এসেছেন।’’ তবে দু’বছর ধরে কেউ নিখোঁজ, এমন ঘটনা এই প্রথম।
ভারত-চিন সীমান্ত থেকে আগেও নিখোঁজ হয়েছেন একাধিক মানুষ। এর আগে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে সুবানসিরি জেলা থেকে পাঁচ যুবকের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার খোঁজ মেলে। এক সপ্তাহ পিএলএ-র হাতে বন্দি থাকার পর ঘরে ফেরেন তাঁরা। ২০২২ সালেও এক কিশোর ন’দিন চিনা সেনার হাতে বন্দি ছিলেন।