বিজাপুরের সারকেগুড়া গ্রাম। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে।
সতেরো জন নিরীহ গ্রামবাসীকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করে মাওবাদী বলে প্রচার করেছিল পুলিশ— বিচারবিভাগীয় কমিশনের রিপোর্টই বলছে সে কথা। ২০১২ সালে ছত্তীসগঢ়ের বিজাপুরের ওই ঘটনা নিয়ে বিচারক বিজয়কুমার আগরওয়ালের তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়ে অক্টোবর মাসে। সোমবার সেটি ছত্তীসগঢ় বিধানসভায় পেশ করা হয়।
মাওবাদী দমনের নামে নানা রাজ্যেই ভুয়ো সংঘর্ষের অভিযোগ বারবার উঠেছে। বিজাপুরের ঘটনা নিয়েও সাত বছর আগেই তৎকালীন বিরোধী দল কংগ্রেস ভুয়ো সংঘর্ষের অভিযোগ তুলেছিল। ২৮ জুন ২০১২-য় সরকেগুড়া গ্রামে ১৭ জনের মৃত্যু নিয়ে সে সময় হইচই কম হয়নি। রাজ্যে তখন ক্ষমতায় বিজেপি। তারাই এক সদস্যের বিচারবিভাগীয় কমিশন গড়ে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
বিচারক আগরওয়াল অক্টোবর মাসে অবসর গ্রহণের আগে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। সেখানে তিনি পরিষ্কার বলেছেন, নিহতেরা যে মাওবাদী এমন কোনও প্রমাণ পুলিশ দিতে পারেনি। এবং তারা যে পুলিশকে আক্রমণ করেছিল, এমন সাক্ষ্যপ্রমাণও মেলেনি। পুলিশ তার রিপোর্টে ঘটনাস্থল থেকে বন্দুক আর ছররা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে যে দাবি করেছিল, তা-ও সাজানো বলে জানিয়েছেন বিচারক আগরওয়াল।
আরও পড়ুন: কোন কোন ভাষা ২১শের জয়েন্টে, সিদ্ধান্ত হয়নি
ছত্তীসগঢ়ে বিধানসভা ভোটের আগে কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতি ছিল, জনজাতি মানুষদের বিরুদ্ধে ‘ভুয়ো’ মামলার নিষ্পত্তি করে দেওয়া হবে। সমাজকর্মী বেলা ভাটিয়া, জনজাতি নেত্রী সনি সরি প্রশ্ন তুলেছেন, ক্ষমতায় এসে কংগ্রেস এ নিয়ে গড়িমসি করছে। অক্টোবর মাসে জমা পড়া রিপোর্ট পেশ করতে এত দিন সময় নেওয়া হল কেন?
গত শনিবার রাতে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে রিপোর্টটি প্রথমে পেশ করা হয়। রবিবার রিপোর্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁসও হয়ে যায়। কংগ্রেস যাতে তার প্রতিশ্রুতি পালন করে, তার জন্য চাপ বাড়াচ্ছেন দান্তেওয়াড়া, সুকমা, বিজাপুরের গ্রামবাসীরা। আরও যে সব ভুয়ো সংঘর্ষ এবং হয়রানির মামলা জমে আছে, তার দ্রুত ফয়সালা চান তাঁরা।