শবরীমালা মন্দিরে পঞ্চাশোত্তীর্ণ মহিলারা। পিটিআই
আদালত যা-ই বলুক না কেন, ভক্তরা শুনছেন কোথায়! সব বয়সি মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশ আটকাতে কোমর বেঁধে নেমেছেন আয়াপ্পা-ভক্তরা। তাঁদের সামলাতে আজ শবরীমালার আশপাশের এলাকায় দু’দিনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পথে নেমেছে বিজেপি ও বিজেপি যুব মোর্চার সমর্থকেরাও। বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
২৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, সব বয়সি মহিলারা শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন। কিন্তু বুধবার মন্দির খোলার পরে রায়-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের তাণ্ডবে কোনও মহিলাই মন্দিরে ঢুকতে পারেননি। কাল লিবি সিএস নামে এক সাংবাদিক ও মাধবী নামে অন্ধ্রপ্রদেশের বছর চল্লিশের এক মহিলা মন্দিরে ঢোকার জন্য রওনা দিয়েছিলেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা তাঁদের ঘিরে ধরে হেনস্থা করে। পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।
একই ছবি বৃহস্পতিবারেও। আজ ভোরে নিউ ইয়র্ক টাইমসের সাংবাদিক সুহাসিনী রাজ এবং তাঁর এক মহিলা সহকর্মী শবরীমালা পাহাড়ে চড়তে শুরু করেছিলেন। মন্দির থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে মরাকুট্টমে পৌঁছেও গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু হঠাৎ তাঁদের ঘিরে ধরে জনা চল্লিশেকের বিজেপি ও বিজেপি যুব মোর্চা সমর্থকদের একটি দল। আয়াপ্পা-ভক্তের সাজে, পুলিশের নজর এড়িয়ে, তারাও পৌঁছে গিয়েছিল মরাকুট্টমে। সুহাসিনীদের দিকে পাথর ছুড়তে শুরু করে তারা। সঙ্গে গালিগালাজ। মারমুখী সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় পুলিশের। বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতারও করা হয়। বিজেপি যুব মোর্চা নেতা প্রকাশ বাবু হুমকি দেন, ‘‘আমাদের হাজার হাজার
কর্মী শবরীমালা পাহাড়ের আনাচেকানাচে লুকিয়ে রয়েছেন। এক জন মহিলাকেও মন্দিরের কাছে পৌঁছতে দেওয়া হবে না।’’
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শবরীমালা পাহাড়ের আশপাশে পাম্বা, নীলক্কল, সন্নিধনম এবং এলাভুঙ্কল এলাকায় দু’দিনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। গোটা এলাকাটিকে ছ’টি ভাগে ভাগ করে ছ’জন পুলিশ সুপারকে নিরাপত্তা বজায় রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সেঞ্চুরি পেরোল আকবরের উকিলের সংখ্যা, ৩১ অক্টোবর ফের শুনানি
আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত আজ বিজয়া দশমী বক্তৃতায় বলেন, ‘‘বহু দিনের একটি পরম্পরা এ ভাবে কোর্টের নির্দেশে বাতিল করা হয়েছে বলেই অসন্তোষ জন্মেছে। আয়াপ্পা-ভক্ত মহিলারাও এই পরম্পরার সমর্থক। কিন্তু তাঁদের কথাও কেউ শুনছে না।’’