রামকৃষ্ণের তৈরি অভিনব সেই ছাতা। ছবি: ইউটিউবের সৌজন্যে
বৃষ্টির দিন। কিন্তু মাঠের কাজে তো বিরাম নেই। বরং কাজ আরও বেশিই। তাই জল-ঝড়-বৃষ্টির মধ্যেই বাবা যান ফসলের তদারকি করতে। দিনের বেলা তো বটেই, কখনও কখনও অন্ধকার নামার পরও খেতে যেতে হত দেখভাল করতে। বছর চোদ্দর ছোট্ট ছেলেটা ঘরে বসে দেখত। আর ভাবত, বাবার এই কষ্ট লাঘব করা যায় কী করে! মনে হত, যদি ম্যাজিশিয়ন হয়ে এমন কিছু করা যায়, যাতে বাবার কষ্ট ‘ছু-মন্তর’ হয়ে যাবে! শেষ পর্যন্ত ম্যাজিকাল ইলিউশন নয়, সত্যিসত্যিই একটা দারুণ উদ্ভাবনী কাণ্ড ঘটিয়ে তাক লাগিয়ে দিল এই ছেলে। বানিয়ে ফেলল এমন একটা ছাতা, যাতে একই সঙ্গে আছে টর্চ, মোবাইল চার্জার, এমনকী মিউজিক প্লেয়ার পর্যন্ত!
মধ্য প্রদেশের বিদিশা গ্রামের এই খুদে উদ্ভাবকের নাম রামকৃষ্ণ আহিরওয়ার। এই অভিনব ছাতা বানিয়ে সে এখন খবরের শিরোনামে। সম্প্রতি জাপানের সুকুরা এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম-এ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে ‘ইন্সপায়ার’ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে এই খুদে প্রতিভা।
আরও পড়ুন: বাংলা হরফে সাড়া দিতে ‘নলেজ গ্রাফ’ আনল গুগ্ল
দেশ-বিদেশের বেশ কিছু পুরস্কার পকেটস্থ করেছে সে
নিজের এই সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে রামকৃষ্ণ নিজেই জানিয়েছে, আসলে বাবাকে চাষের কাজে যেতে দেখতে দেখতেই ইচ্ছেটা জেগেছিল। বাবার হাতে থাকত ছাতা। অন্ধকারে গেলে আর এক হাতে টর্চ। দু’হাতই তো আটকা। দু’হাতের কাজ এক হাতে করানো যায় কী করে সেটাই ভাবতে থাকে ১৪ বছরের কিশোর। তবে শেষ পর্যন্ত শুধু ছাতা আর টর্চই নয়, আরও অনেক কিছু সে জুড়ে ফেলল এক ছাতার তলায়। অভিনব এই ছাতায় সোলার প্যানেল বসানো। ফলে সূর্যের আলোতে চার্জ হয় সঙ্গে লাগানো ব্যাটারি। সূর্য না উঠলে ঘরের ইলেকট্রেক লাইনেও চার্জ করা যায় এটি। সেই চার্জে দরকার পড়লেই জ্বালানো যাবে ছাতায় লাগানে টর্চ। দরকারে এই ছাতা থেকে চার্জ দেওয়া যাবে ফোনেও। গোটা জিনিসটাকে আরও একটু বিনোদনমূলক করতে একটি মিউজিক প্লেয়ার ইউনিটও রয়েছে এতে। অর্থাত্ বোর লাগলে গানও শোনাবে এই ছাতা।
মে মাসেই জাপানে গিয়ে পুরস্কার আনার কথা রামকৃষ্ণর। শুধু তাই নয়, দেশেও বেশ কিছু পুরস্কার পকেটস্থ করেছে সে।সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে পুঁচকে তারকা বলল, ‘‘ফোন চার্জ দেওয়া, গান শোনানো, টর্চের কাজ করা, রোদ-জল থেকে মাথা বাঁচানোর পাশাপাশি বিপদের সংকেতও দেবে এটি।’’
সবাই বলছে, সাবাস রামকৃষ্ণ। ছোট্ট রামকৃষ্ণ বড় হয়ে আরও বড় বড় উদ্ভাবন করুক। শুভেচ্ছা রইল আমাদেরও।