Himachal Pradesh Crisis

ঘনিয়ে এল সুখুর পতন? হিমাচলে ছ’জন বিদ্রোহীর সঙ্গে আরও পাঁচ কংগ্রেস বিধায়ক বিজেপির আশ্রয়ে

সংবাদ সংস্থা এএনআই জানাচ্ছে, বিজেপি শাসিত আর এক রাজ্য হরিয়ানার নম্বর প্লেটযুক্ত একটি বাসে করে শনিবার সকালে ওই বিধায়কেরা উত্তরাখণ্ডের হৃষিকেশে একটি বিলাসবহুল হোটেলে গিয়েছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৪ ১৩:৩৫
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

ইঙ্গিত মিলেছিল আগেই। তা ফলে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলল এ বার। হিমাচলের বিদ্রোহী ছ’জন কংগ্রেস বিধায়কের দলে যোগ দিলেন আরও পাঁচ জন। সূত্রের খবর, তাঁরা সকলেই পাড়ি দিয়েছেন বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ডে। এর ফলে হিমাচলে মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারের পতনের সম্ভাবনা আরও প্রবল হল বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন। একটি সূত্র জানাচ্ছে, পাঁচ জনের ওই দলে তিন নির্দল বিধায়কও রয়েছেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা এএনআই জানাচ্ছে, বিজেপি শাসিত আর এক রাজ্য হরিয়ানার নম্বর প্লেটযুক্ত একটি বাসে করে শনিবার সকালে ওই বিধায়কেরা উত্তরাখণ্ডের হৃষীকেশে একটি বিলাসবহুল হোটেলে গিয়েছেন। ওই হোটেলে কয়েক জন বিজেপি নেতাকেও দেখা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার দিল্লি গিয়ে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলার পরে সুখু বিদ্রোহী ছ’জন বিধায়ককে ফিরিয়ে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘যদি কেউ নিজের দোষ বুঝতে পারে তবে সেই ব্যক্তি আরও একটি সুযোগ পাওয়ার যোগ্য।’’ কিন্তু বিদ্রোহীদের বিজেপির ‘আশ্রয়ে’ যাওয়া কার্যত সমঝোতার সম্ভাবনায় ইতি টেনে দিল বলে মনে করা হচ্ছে।

দলীয় হুইপ অমান্য করে হিমাচল বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর সরকারের বাজেট প্রস্তাব সংক্রান্ত অর্থবিলের পক্ষে ভোট না-দেওয়ার কারণে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ‘দলত্যাগ বিরোধী আইনে’ হিমাচল বিধানসভা স্পিকার কুলদীপ সিংহ পঠানিয়া বিদ্রোহী ছ’জন বিধায়কের পদ খারিজ করেছিলেন। পদ খারিজ হওয়া বিধায়কেরা হলেন, রবি ঠাকুর (লাহুল-স্পিতি), রাজেন্দ্র রানা (সুজনপুর), সুধীর শর্মা (ধরমশালা), ইন্দ্রদত্ত লক্ষণপাল (বারসার), চৈতন্য শর্মা (গগরেট) এবং দেবেন্দ্র ভুট্টো (কুটলেহা)।

Advertisement

তার আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যসভা ভোটের সময় ওই ছ’জন কংগ্রেস বিধায়ক বিজেপির প্রার্থী হর্ষ মহাজনের সমর্থনে ‘ক্রস ভোটিং’ করেছিলেন। ফলে কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি হেরে যান। ৬৮ সদস্যের বিধানসভায় দু’পক্ষই ৩৪টি করে ভোট পাওয়ায় লটারির মাধ্যমে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়। ঘটনাচক্রে, ওই বিধায়কদের অধিকাংশই পদত্যাগী মন্ত্রী বিক্রমাদিত্য সিংহ এবং তাঁর মা তথা হিমাচল কংগ্রেসের সভানেত্রী প্রতিভা সিংহের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত। রাজ্যসভা ভোটের পরেই সুখুর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারের অভিযোগ তুলে মন্ত্রিত্বে ইস্তফা দিয়েছিলেন বিক্রমাদিত্য।

গত সপ্তাহে বিক্রমাদিত্য দিল্লি গিয়ে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী এবং মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন বলে সূত্রের খবর। তার পরে তিনি জানিয়েছিলেন, বিদ্রোহীদের সঙ্গে মধ্যস্থতার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু তাতে যে ‘কাজ’ হয়নি, তা শনিবারের ঘটনা থেকে স্পষ্ট। ৬৮ আসনের হিমাচল বিধানসভায় কংগ্রেসের আসনসংখ্যা ছিল ৪০। এ ছাড়া তিন জন নির্দল বিধায়ক সুখু সরকারকে সমর্থন করছিলেন। কিন্তু ছ’জন বিদ্রোহীর মতোই তাঁরাও রাজ্যসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দিয়েছিলেন।

হিমাচল বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ‘জাদুসংখ্যা’ ৩৫। ছ’জন বিধায়কের পদ খারিজের ফলে এখন রয়েছেন ৬২ জন। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতার অঙ্ক নেমেছে ৩৩-এ। ছ’জনকে বহিষ্কারের পরে কংগ্রেসের হাতে ছিল ৩৪ বিধায়ক। কিন্তু তাঁদের পাঁচ জন উত্তরাখণ্ডে পাড়ি দেওয়ায় তা ২৯-এ নামতে চলেছে। বিজেপির রয়েছে ২৫ বিধায়ক। অর্থাৎ তিন নির্দলকে পাশে পেলে তাঁ দাঁড়াবে ২৮-এ। বিদ্রোহী ছ’জনকে স্পিকার আস্থাভোটে যোগদান করতে না-দিলেও বাকি পাঁচ জনকে পাশে পেলেই হিমাচলের কংগ্রেস সরকারের পতন ঘটাতে পারবে বিজেপি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement