সংসদে ফারুক আবদুল্লা। ছবি: পিটিআই
মেরুকরণ নিয়ে এ বার পাল্টা বিজেপি-কেই কার্যত অস্বস্তিতে ফেললেন ফারুক আবদুল্লা। লোকসভায় কৃষক বিলের বিপক্ষে ভাষণ দিতে গিয়ে সর্বধর্ম সমন্বয় বার্তা এবং বিভেদকামী শক্তির বিরুদ্ধে বার্তা দিলেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের বর্ষীয়ান সাংসদ ফারুক। তাঁর মতে, রাম বা কোরান কারও একার নয়, বরং সবার।
রাজ্যসভায় কংগ্রেসের সাংসদ গুলাম নবি আজাদকে মঙ্গলবার বিদায় দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেই দিনই লোকসভায় ফারুকের আবেগঘন এবং ভাষণ শুনল লোকসভা এবং গোটা দেশ। সরকারি অনুষ্ঠানে জয় শ্রীরাম ধ্বনি ওঠায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজির জন্মজয়ন্তীতে ভাষণ দেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ফারুক সেই গেরুয়া শিবিরেই বিড়ম্বনায় ফেলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এই লোকগুলো এমন ভাব করেন, যেন রাম তাঁদের একার সম্পত্তি। রাম বিশ্বের সবার। যদি আমরা বলি কোরান শুধু আমাদের, সেটা ভুল হবে। কোরানও বিশ্ববাসীর।’’
সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ করে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখকে আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। ২০১৯-এর অগস্টের সেই সিদ্ধান্তের পর গোটা উপত্যকায় জারি হয়েছিল কড়া বিধিনিষেধ। দীর্ঘদিন গ্রেফতার বা গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল জম্মু-কাশ্মীরের রাজনৈতিক নেতাদের। সেই দলে ছিলেন ফারুকও। সেই আইনের সঙ্গে কৃষি আইনের প্রাসঙ্গিকতা টেনে ফারুকের অভিযোগ, ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের মতোই কৃষি আইন তৈরির সময়ও কৃষকদের কথা শোনা হয়নি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা কাশ্মীরিরা ভারতকে আমাদের হৃদয়ের অংশ মনে করি। আমরা কখনও বলিনি, ভারতের অংশ নই। আমি আন্তর্জাতিক মঞ্চেও ভারতের মর্যাদা রক্ষা করেছি, কারণ বাইরের কেউ আমার দেশের সমালোচনা করুক এটা মেনে নিতে পারি না।’’
তার পরেই তাঁর উক্তি, ‘‘আমার বয়স এখন ৮৫। এই দেশকে গড়ে উঠতে দেখেছি। আমি এখানেই মরব।’’
ফারুকের বক্তব্যের পরের অংশ কার্যত ভারতীয় সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার কপিবুক সংস্করণ। বিজেপির মেরুকরণের নীতিকে খোঁচা দিয়ে অশীতিপর ফারুকের মন্তব্য, ‘‘ভগবান আর আল্লা একই।’’ জন্মের ভিত্তিতে কাউকে চিহ্নিত করা উচিত নয় বলেও মত ফারুকের।