সব পুজোতেই ঘট অপরিহার্য। অর্থাৎ সব পুজোতে ঘট প্রতিষ্ঠা করতেই হয়। এর বিশেষ কারণ রয়েছে। আমরা পুজো আরম্ভের আগেই ঘট প্রতিষ্ঠা করি, কারণ দেবতার ছবি হোক বা মূর্তি, বিধিমতে পুজো সুসম্পন্ন হয় না ঘট ছাড়া। ঘট প্রতিষ্ঠার প্রধান কারণ হল এই যে, ঘট-কে আমাদের দেহের প্রতীক হিসেবে মানা হয়। আমাদের দেহকে দেহ ঘট বলা হয়। তাই দেহের প্রতিরূপ হিসেবে ঘট পুজোয় অপরিহার্য।
প্রথমে পঞ্চগুড়ি দিয়ে পীঠ তৈরি করা হয়। এই পঞ্চগুড়ির অর্থ হল ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ ও ব্যোম-এর প্রতীক অর্থাৎ পঞ্চমহাভূতের।
তার পর মৃত্তিকা পীঠের ওপরে পঞ্চশষ্য দেওয়া হয়। এগুলি কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ ও মৎসর্য্য এই পঞ্চবৃত্তির প্রতীক।
এর পর ঘটের ভেতরে পঞ্চরত্ন দেওয়া হয়। এগুলি চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, ত্বক ও জিহ্বা এই পঞ্চেন্দ্রিয়ের প্রতীক। এর উপরে ঘটটি স্থাপন করা হয়।
আরও পড়ুন: শঙ্খ কেন তিন বারের বেশি বাজাতে নেই এবং তিন বারের বেশি বাজালে কী হয়
ঘট জল পূর্ণ করার অর্থ হল দেহরস অর্থাৎ রক্ত।
তার পর ঘটের ওপর যে পঞ্চ পল্লব দেওয়া হয় তা হল গলা বা গ্রীবা।
ঘটের উপর নারকেল দেওয়া হয় এবং নারকেলে আমাদের মুখের মতো চোখ নাক মুখ দেখা যায় যা আমাদের মুখমণ্ডলের প্রতীক। মস্তক থাকলে তাতে বস্ত্র বা গামছা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এই হল আমাদের দেহের প্রতিরূপ।
** যে কোনও পুজোয় ঘট মাটি বা পিতলের হতে পারে। এতে গঙ্গাজল দিয়ে পূর্ণ করে তবেই ঘট স্থাপন করতে হবে।