১) আমাদের কার্ডিয়াক হার্ট যেখানে অবস্থান করে তার পেছনে সূক্ষ্মদেহে অনাহতচক্র অবস্থান করে থাকে। যাকে আমরা ইমোশনাল হার্ট বলে থাকি। অনাহতচক্র দেখতে সাইকিকদের বা যোগীদের কথানুসারে, ১২ দল পাপড়িবিশিষ্ট পদ্মের মতো গোলাকার, পুরো সবুজ রঙের।
২) এই অনাহত চক্রের পেছনে অবস্থান করে সোল, শ্রীঅরবিন্দের যোগে যাকে সাইকিক বলে, উপনিষদে যাকে সাইকিক ফায়ার বলা হয়েছে, জন্ম থেকে জন্মাতরে এই সাইকিক বির্বরতনে অংশগ্রহণ করে থাকে। এইখানে সাইকিক নিয়ে কোনও আলোচনা করা হবে না, আমরা আমাদের আলোচনাকে অনাহত চক্রের মধ্যে রাখব।
৩) এই অনাহত চক্র ব্লক থাকলে পৃথিবীতে ভালবাসা বলে যা আমরা জেনেছি তা ব্লক হয়ে যায়, যাদের অনাহত ব্লক থাকে তারা ভালবাসা থেকে বঞ্চিত হয়। তারা নিজেরাও কাউকে ভালবাসতে পারে না। ভালবাসাবিহীন ভাবে বাঁচা যে কি কষ্টকর, একমাত্র ভুক্তভোগীরাই জানে।
৪) সোজা কথায় যদি বলা যায়, জগতে যত রকমের প্রেম আমরা চিনি, যেমন, সমস্ত রকম ব্যক্তি প্রেম, নরনারীর মাঝে যে ভালবাসা, মাতৃস্নেহ বা পিতৃস্নেহ বা ভালবাসা,আত্মীয়স্বজনের মধ্যে যে ভালবাসা, বন্ধুর সঙ্গে বন্ধুর যে ভালবাসা, সমাজের প্রতি যে ভালবাসা, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যে ভালবাসার গভীরতা, দেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, সমস্ত রকম জীবপ্রেম, সব শেষে ঈশ্বরের প্রতি যে ভালবাসা- এর উৎসস্থল হচ্ছে অনাহতচক্র।
৫) এই চক্র ব্লক হলে অন্যের সঙ্গে সমস্ত রকম যোগাযোগ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: অশ্বিনী নক্ষত্রের জাতকদের ভবিষ্যৎ কেমন হয়
৬) কাউকে ইমোশনালি আঘাত করলে এই জীবনেও অনাহত চক্র ব্লক হয়ে যেতে পারে।
৭) নানা ভাবে আমাদের অনাহত চক্র ব্লক হতে পারে, তার মধ্যে কোনও ভালবাসা বা প্রেমবিচ্ছেদের কারণে, ছলনা করলে, কোথাও চাকরি থেকে বরখাস্ত হলে বা ছাঁটাই হলে, ছোটবেলা থেকে অন্যের স্নেহ ও ভালবাসা বঞ্চিত হয়ে বড় হলে।
৮) এমন একটা পরিবেশ যেখানে মানসিক সম্পর্কগুলিকে বড় করে দেখা হয়ে থাকে, যেখানে হৃদয় ও মনের মধ্যে মনকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেইরকম পরিবেশে কাটালে অনাহতচক্র ব্লক হয়ে যায়।
৯) অনাহত চক্র ব্লক থাকলে দৈহিক যে সব রোগ বা অসুবিধার সন্মুখীন হয়ে থাকি তা হল:
(ক) হাইপারটেনশন, (খ) শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা, যেমন হাঁপানি, (গ) বুক চেপে ধরা, (ঘ) কারডিওভাস্কুলার ডিজিজ, (ঙ) সমস্ত রকমের কাঁধে ব্যথা।
১০) অসামাজিক ব্যবহার।
১১) খুব বেশি মাত্রায় অন্যকে টানা, অন্যের শক্তিকে শোষণ করা।
১২) নানা ভাবে অন্যের শিকার হওয়া।
১৩) অনাহতচক্র ব্লক থাকলে আর কারও প্রতি ক্ষোভ থাকলে, নিজের ভিতরে ভিতরে গুমরানো, পরিশেষে তা ক্রোধে রূপান্তর হয়ে অবিশ্বাস করা।
১৪) অনাহত চক্র ব্লক থাকলে, সমস্ত রকম বিশ্বাসবোধই নষ্ট হয়ে যায়। বিশ্বাস হারানো যে পাপ –এই কথা আমরা ভুলে যাই। বিশ্বাস ভয়ঙ্কর একটা অস্ত্র- এই সব আমরা ভুলে যাই। বিশ্বাসের কেন্দ্র মন নয়, হৃদয়, সমস্ত রকম বিশ্বাসের কেন্দ্র হচ্ছে অনাহত চক্র বা হৃদয় চক্র।