আত্মাকে আরও পরিণত অবস্থায় নিয়ে যেতে, আমরা সবাই আমাদের প্রকৃতি ও সামর্থ্য অনুযায়ী নিজের মতো করে ধর্মাচরণ করে থাকি। ভারতীয় মতে কালপুরুষের ভাবচক্রে যে ঘরে চন্দ্র অবস্থান করে, সেটাই জাতক/জাতিকার রাশি। রাশি মূলত আমাদের মনকে নিয়ন্ত্রণ করে। যোগশাস্ত্রের মূল কথা হল, মনকে নিয়ন্ত্রণ করে ষড় রিপুকে নিয়ন্ত্রিত করা। এই মনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেই প্রয়োজন ধর্মাচরণের। সবাই এক ভগবানকে ডাকতে পারে না, সবাই একই ভাবে ধর্মাচরণও করতে পারে না,পদ্ধতিগত কিছু পার্থক্য থেকে যায়। সেই পার্থক্য হয় বিভিন্নজনের রাশি বা প্রকৃতি বিভিন্ন বলে। এখানে আমরা দেখাব— রাশি তথা প্রকৃতি অনুযায়ী কে কী ভাবে ধর্মাচরণ করে থাকে। প্রথমে মেষ থেকে সিংহ রাশির জাতক/জাতিকার কথা বলব। পর দিন কন্যা থেকে মীন।
মেষ রাশি: মনের দিক থেকে মেষের জাতক/জাতিকারা প্রচুর প্রাণশক্তি বা এনার্জির অধিকারী। সেই সঙ্গে মনের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। এদের কাছে কর্মই ধর্ম। এরা ধর্ম চর্চাকে আর পাঁচটা কাজের মতোই দেখে থাকে। বেঁচে থাকতে হলে এইগুলি করতেই হয়, এটাই তাদের বিশ্বাস। এরা কাউকে নিজের মতো করে ধর্ম চর্চা করতে জোর করে না। একই ভাবে কেউ যদি ওই রকম কোনও নির্দেশ দেয়, সেটাও তারা ভাল ভাবে নিতে পারে না। প্রচুর প্রাণশক্তি আছে বলে এরা ধর্ম চর্চার চেয়ে কর্ম চর্চায় আগ্রহী বেশি হয়। কিন্তু মুশকিল হল,বহু ক্ষেত্রে উপযুক্ত গাইডের অভাবে এরা ধর্ম চর্চার নাম করে যে সব আচরণ করে থাকে, তা এক ধরনের সময় কাটানো ছাড়া আর কিছু নয়।
বৃষ রাশি: বৃষের জাতক/জাতিকাদের মধ্যে একটা অংশ ধর্ম চর্চা নিয়ে খুব সিরিয়াস। এরা যখন ঠিক করে ধর্ম চর্চা করবে, তখন তার শেষ দেখে ছাড়ে। আর যারা মনে করে, ধর্ম চর্চার কোনও মানেই হয় না, তারা আবার তার ধারে কাছে যায় না। শুধু তাই নয়, যারা ধর্ম চর্চা করবে না বলে ঠিক করেছে তারা আবার এর চরম বিরোধিতাও করে।
মিথুন রাশি: মিথুন আবার এমন স্বভাবের রাশি, যাদের বেশির ভাগই প্রবল ঈশ্বর বিশ্বাসী। এদের প্রায় সবাই ধর্ম সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিকতাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে।
আরও পড়ুন: তন্ত্রেই সমাধান বহু সমস্যার
কর্কট রাশি: প্রথমেই বলে রাখি, কর্কটের জাতক/জাতিকারা গভীর ভাবে ধর্মপ্রাণ। এরা ধর্মাচরণকে জীবনের অচ্ছেদ্য অংশ হিসেব মনে করে। তাই এদের সব কাজেই ইশ্বরকে স্মরণ করতে দেখা যায়। এরা সংসারে থেকেও নিত্য মালা জপ করে চলেছে। এরা অফিসেও দেবদেবী বা গুরুর ছবি টাঙায়। কর্কটের জাতক গঙ্গায় স্নান করতে গেলে ভিখারিদের সাধ্য মতো অর্থ দান করে। মুশকিল হচ্ছে, এরা আবার ধর্মের ব্যাপারে কখনও কখনও অত্যন্ত গোঁড়া হয়ে ওঠে। এরা ভাবে, এরা যা করছে সেটাই সবার করা উচিত।
সিংহ রাশি: সিংহের জাতক/জাতিকারা যদি একবার বোঝে যে ধ্যান করলে উপকার আছে, বা উপবাস আধ্যত্মিক পথে অগ্রসর হতে সাহায্য করে, সঙ্গে সঙ্গে তারা সেটা সারা জীবনের জন্যে করতে লেগে যাবে। কোনও দিন উপবাস না করা সিংহের জাতকও উপবাসের গুণের কথা শুনে তা করতে শুরু করবে। কোনও দিন ধর্মাচরণ না করা সিংহের জাতকও হঠাৎ কোনও গুরুর সংস্পর্শে এসে প্রতি দিন তিলক কেটে জপ করা শুরু করে।