কাল পূর্ণিমা, কেন উপবাস করবেন জানুন, জেনে নিন সময়সূচিও

সাধারণ অর্থে বিশেষ বিশেষ তিথিতে আহার সংযমকে উপবাস বলে। একাদশী, পূর্ণিমা, অমাবস্যা প্রভৃতি তিথিতে গ্রহ-উপগ্রহের অবস্থান ও জোয়ার-ভাটার কারণে দেহে জলীয় পদার্থের পরিমাণ বেড়ে যায়।

Advertisement

পার্থপ্রতিম আচার্য

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৯ ১৫:২৪
Share:

উপবাস=উপ+বাস। উপ অর্থ নিকট আর বাস অর্থ অবস্থান করা। উপবাস শব্দের অর্থ নিকটে অবস্থান করা। অর্থাৎ বাচিক ও মানসিক সংযমের দ্বারা কায়মনোবাক্যে ইষ্টদেবতার নিকটে অবস্থান বা সান্নিধ্য অনুভব করার নাম উপবাস।

Advertisement

সাধারণ অর্থে বিশেষ বিশেষ তিথিতে আহার সংযমকে উপবাস বলে। একাদশী, পূর্ণিমা, অমাবস্যা প্রভৃতি তিথিতে গ্রহ-উপগ্রহের অবস্থান ও জোয়ার-ভাটার কারণে দেহে জলীয় পদার্থের পরিমাণ বেড়ে যায়। আর সেই সময় ভাত প্রভৃতি খাবার খেলে শরীর ভারী ও অলস হয়ে যায়। তাই সে সময় আহার সংযম করা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের বাতজনিত ব্যথা বা কোনও আঘাতজনিত ব্যথা পূর্ণিমা-অমাবস্যায় বেড়ে যায়। এর থেকে সহজেই অনুমান করা যায় যে, পূর্ণিমা-অমাবস্যা প্রভৃতি তিথির সঙ্গে দেহের একটা যোগ আছে।

তা ছাড়া নিয়মিত আহার গ্রহণে পাকস্থলীতে অনেক খাবার জমে থাকে যা পূর্ণরূপে হজম হয় না। তাই একদিন আহার সংযম করলে সেই জমে থাকা খাবারগুলো হজম হয়ে পাকস্থলীকে পরিষ্কার ও সুস্থ রাখে।

Advertisement

সেই সঙ্গে যেহেতু আহার সংক্রান্ত সময় অপচয় হচ্ছে না, তাই সেই সময় ঈশ্বরের নাম করলে শরীর ও মন দুইই সুস্থ থাকে। সে দিন মন দিয়ে ইষ্টদেবতার আরাধনা করা সহজ হয়। তা ছাড়া কাম, ক্রোধ, লোভ-সহ ষড়রিপুকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেও এই আহার সংযম বিশেষ ভূমিকা রাখে।

বিশেষ বিশেষ পূজা-পার্বণ ও অনুষ্ঠানে উপবাসের বিধি রয়েছে। সে সব দিনে উপবাস দ্বারা তাঁর আরাধ্য দেব-দেবীর ভাব ও আদর্শকে কায়মনোবাক্যে অনুভব করেন এবং অন্তরে ভক্তি ভাব জাগ্রত হয়। সরস্বতী পুজোর দিন শিক্ষার্থীরা উপবাস করে পূজা দিতে যায়। এতে তাদের অন্তরে আদর্শ শিক্ষাগ্রহণের ভাব জাগ্রত হয়।

প্রশ্ন হতে পারে, খেয়ে কি আরাধনা হয় না? উত্তর- না। কারণ, আরাধনার জন্য চাই দেহ ও মনের সংযম। আর বাস্তববাদী ব্যক্তিগণ এ কথার অর্থ সহজেই অনুভব করতে পারবেন।

আরও একটা বিষয়, উপবাস শেষে অতিথি ভোজন করিয়ে পরে নিজে খাবার করতে হয়। আর কেউ যখন উপবাস করে তখন সে হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারে অর্থাভাবে অনাহারে-অর্ধাহারে থাকা মানুষগুলোর কষ্টটা কেমন, যা অন্যের পক্ষে সম্ভব নয়।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: উপবাসের নিয়ম না খেয়ে থাকা নয়, উপবাসে আহার সংযম করতে হয় অর্থাৎ শরীর রক্ষার্থে ন্যূনতম আহার্য গ্রহণ।

আরও পড়ুন: বৃষ রাশির জীবনে কী কী ঘটতে পারে বাংলার নতুন বছরে

এখন জেনে নেওয়া যাক ১৪২৬ সনের চৈত্রী পূর্ণিমার সময়সূচি:

বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে:

পূর্ণিমার আরম্ভ:

বাংলা তারিখ: ৪ বৈশাখ ১৪২৬, বৃহস্পতিবার।

ইং তারিখ: ১৮/৪/২০১৯।

সময়: রাত্রি ঘ ৭/২৭ মিনিট থেকে।

পূর্ণিমা শেষ:

বাংলা তারিখ: ৫ বৈশাখ ১৪২৬, শুক্রবার।

ইং তারিখ: ১৯/৪/২০১৯।

সময়: বিকাল ঘ ০৪/৪২ মিনিট পর্যন্ত।

পূর্ণিমার উপবাস:

বাংলা তারিখ: ৫ বৈশাখ ১৪২৬, শুক্রবার।

ইং তারিখ: ১৯/৪/২০১৯।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement