খুব কম সংখ্যক শিশুই জন্মের পর তাদের শরীরে অনেক রকম জন্মচিহ্ন বা জন্মদাগ নিয়ে জন্মায়। এই ধরনের খুব পরিচিত চিহ্ন হল আঁচিল এবং তিল। জন্মের অনেক পরেও এই দাগগুলি শরীরে দেখা দিতে পারে।
নানা ধরনের দাগের মধ্যে যে দাগগুলি সম্বন্ধে আমরা পরিচিত সেগুলি হচ্ছে, বুলেটের ক্ষত চিহ্নের মতো দাগ, জরুল, শরীরে নানা স্থানে গর্ত চিহ্ন, পোড়া দাগ, সাদা প্যাচ, গলায় দড়ির মতো দাগ, সিস্ট, টিউমারের মতো উঁচু অংশ, শিশুর শরীরে লাল দাগ, আগুনের ঝলসানোর মতো চিহ্ন, ইত্যাদি।
এই ধরনের জন্মদাগের পিছনে কারণ কী? যাঁরা এই নিয়ে যাঁরা গবেষণা করেন, তাঁদের অধিকাংশের মত, এর সঙ্গে জড়িত পূর্বজন্ম। পূর্বজন্মের কোনও ঘটনা জড়িয়ে রয়েছে এই দাগগুলির পেছনে।
তাঁদের মত অনুসারে, প্রত্যেকের মৃত্যুই নানা কারণে হয়। বেশির ভাগই শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেন, আরোগ্য লাভ করতে। যিনি আগুনে ঝলসে গিয়েছেন, তিনি চেষ্টা করেন শরীরের ঝলসানো স্থানটা সারিয়ে তুলতে। শরীরে কোনও জায়গায় ক্ষতের সৃষ্টি হলে প্রকৃতি সেই জায়গার দাগ সারিয়ে তুলতে চায়। পরবর্তীতে, মৃত্যুর পরেও সেই চেষ্টা তাঁর সূক্ষ্ম শরীরে নিরন্তর ভাবে চলতে থাকে। কোনও কারণে সময়ের আগে তাঁর আবার জন্ম হলে, তাঁর আত্মা সেই পরিমাণ সময় পায় না ক্ষত সারিয়ে তুলতে। যখন তিনি ফের জন্মালেন, তাঁর শরীরে জন্মদাগ হিসেবে গত জন্মের চিহ্ন থেকে গেল। এটা একটা মতো।
আর একটা মত, আমাদের মনের ক্ষমতা আছে অতীতের জন্মগুলির সঙ্গে সংযোগ ঘটনোর। মনের ক্ষমতা আছে অতীতের ট্রমা বা ভয়ঙ্কর ঘটনাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করার, এবং একই সঙ্গে সারিয়ে তোলা এবং তার প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়ার। তাই যার জন্মদাগ আগের জন্মে ছিল, সেই জাতক নিজেই ঠিক করেছে সামনের জন্মে সে তাকে সারিয়ে তুলবে। সেই কারণে এই জন্মে অতীত জন্মের দাগ বহন করছে।
আরও পড়ুন: এই জিনিসগুলি দান করলে জীবনে চরম বিপদ আসতে পারে
এখানে বলাই বাহুল্য যে, বিশেষ কিছু ক্ষত আছে যা সারিয়ে তুলতে অনেক জন্ম লেগে যায়।
দেখে নেওয়া যাক বিভিন্ন জন্মদাগ ও তাদের তাত্পর্য:
(১) কালো বা ডার্কস্পট এবং শ্বেতীর মতো সাদা দাগ: এই দাগ শরীরের যেখানে থাকে সেই জায়গা গত জন্মে ভাল ভাবে পুড়ে গিয়েছিল। এই ধরনের দাগ থেকে এটা বোঝা যায়, অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল এই দাগকে সারিয়ে তোলার জন্য। কিন্তু ততটা সময় পাওয়া যায়নি। তার আগেই মৃত্যু হয়েছিল।
(২) বুলেটের ক্ষতের মতো দাগ: জন্মের পর পরই এই দাগ নিয়ে জাতক/জাতিকা জন্মায়। এই দাগ দেখতে গোলাকার রিং-এর মতো হয়ে থাকে। এতে বোঝায়, গত জন্মে খুব সম্ভবত জাতককে গুলি করে মারা হয়েছিল। ক্ষতটি নিরাময় করার সময় পাওয়া যায়নি। তাই এই জন্মে দাগটি কালো আকারের হয়ে রয়ে গিয়েছে।
(৩) ছুরির দাগ: এই জন্মদাগ শরীরে যে জায়গায় থাকে, সেখানে একটু বাঁকানো গোছের হয়ে থাকে। এতে বোঝায়, আততায়ী কোনও ধারাল ছুরি বা সে রকম কিছু দিয়ে খুব দ্রুততার সঙ্গে জাতককে আক্রমণ করেছিল। আর এই দাগ যদি মুখের যে কোনও অংশে থাকে, এর মানে বোঝায় জাতককে ঘুমের মধ্যে আক্রমণ করা হয়েছিল। তবে এই দাগ যেখানেই থাক না কেন, এর থেকে প্রমাণ হয়, আক্রমণ শানানো হয়েছিল খুব মারাত্মক ভাবে। মৃত্যুর মুখ থেকে অনেক কসরত করে গত জন্মে প্রাণ ফিরে পেয়েছিল জাতক।