হস্তরেখায় রয়েছে মানুষের সমগ্র জীবনের প্রতিচ্ছবি । জীবনের শুরু থেকে সফর, বিরতি, হৃদয় স্পন্দন, মনের গতি-প্রকৃতি সমস্ত কিছুই সেই করতলের সঙ্গেই সংযুক্ত। আর আমাদের হাতের আঙ্গুলের মুদ্রাও স্বাস্থ্যকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে।
শরীররূপী যন্ত্র ঈশ্বরের এক অদ্ভুত সৃষ্টি। প্রাচীন মুনি ঋষিরা শরীর ও মনের শক্তিকে অনুধাবন করেছিলেন এবং শরীরকে সুস্থ ও আয়ুপূর্ণ করে রাখবার জন্য সাংখ্য, যোগ, আয়ুর্বেদ, হস্তমুদ্রা, অধ্যাত্ম, নৃত্য, সঙ্গীত ইত্যাদি বিষয়ে অনুসন্ধান করেছিলেন এবং নিজেরাই তার প্রথম উপযোগ করে দীর্ঘায়ু হয়েছিলেন। এই হল মানব জীবনের জন্য তাঁদের মহাদানস্বরূপ। আলোচ্য বিষয় তাঁদের আবিষ্কৃত সেই হস্তমুদ্রারূপী সঞ্জীবনী শক্তির সম্পর্কেই।
আমরা একথা জানি যে, মানুষের শরীর পঞ্চতত্ত্বের সমন্বয়ে গঠিত। এই পঞ্চতত্ত্ব হল জল, পৃথ্বী, আকাশ, বায়ু, অগ্নি। আমাদের এক একটি হাতও পাঁচটি আঙ্গুলের সমন্বয়ে গঠিত। এই পাঁচটি আঙ্গুল পঞ্চতত্ত্বেরই দ্যোতক। আমরা হাতের আঙ্গুলগুলিকে পরস্পর স্পর্শ করে বিভিন্ন রকম মুদ্রা সৃষ্টি করি, যার ফলে শরীরে সেই পঞ্চতত্ত্বের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রিত হয়। আঙ্গুলের বিশেষ বিশেষ স্থিতিকেই মুদ্রা বলা হয়। এই মুদ্রাগুলিকে পদ্মাসন, সিদ্ধাসন, বজ্রাসন বা সুখাসনে বসে প্রয়োগ করা উচিত। আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত মুদ্রা প্রয়োগ করা সম্ভব। একেবারে না করে দু-তিন বারেও হস্তমুদ্রা করা যেতে পারে। এই মুদ্রাগুলি করবার সাথে সাথে যদি আপনি আপনার আহার বিহারের উপরেও নজর দিতে পারেন তা হলে শীঘ্রই আপনি তার সুফল ভোগ করতে পারেন। অনেক রকম মুদ্রা প্রচলিত আছে, এখানে এমন কিছু মুদ্রারই উল্লেখ করলাম, যেগুলি মানুষের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।