প্রথা হিসেবে বহু বছর ধরে ভ্যালেন্টাইন দিবসের আগের দিন অর্থাৎ ১৩ ফ্রেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে চুমু খাওয়ার দিন হিসেবে পালন করে প্রায় বিশ্বেরএকাধিক দেশ।
হৃদয়ে যে ভালবাসা বা প্রেম আছে তা প্রকাশ করতে আমরা নানা রকম মাধ্যমের সাহায্য নিয়ে থাকি। তারই একটা মাধ্যম চুমু, যা ইউরোপ ও আমেরিকার প্রায় সব দেশেই হয়ে থাকে। এশিয়াতে চুমুর সাহায্যে ভালবাসা প্রকাশ সাধারণত ঘরের ভিতর। প্রকাশ্যস্থানে এর ব্যবহার নেই বললেই চলে।
বলা হয়ে থাকে, চুমুর প্রকারভেদ দিয়ে ভালবাসা যে নানা স্তরের তা প্রকাশ করা হয়ে থাকে। এখানে নানা ধরনের চুমু খাওয়ার রেওয়াজ নিয়ে আলোচনা করা হবে-
(১) কপালে চুমু খাওয়া- প্রথম ঘনিষ্ঠতা বা প্রথম বন্ধুত্ব ঘটলে কপালে চুমু খেয়ে ভালবাসা প্রকাশ করা হয়ে থাকে। এটা সব থেকে সুন্দর ও ভদ্র ধরনের চুমু। এটাকে সাধারণত স্টার্টার কিস-ও বলা হয়ে থাকে।
(২) এস্কিমো কিস- নামের শুনেই বোঝা যায় এই কিস বা চুমু এস্কিমোদের থেকে আমদানি করা হয়েছে। এই চুমুর বৈশিষ্ট হচ্ছে, একজনের নাক অপরজনের নাকের সঙ্গে ঘষাঘষি করা, কিছুটা সময় ধরে। মূলত স্নেহ প্রকাশ করতেই এই চুমু খাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: আসছে কিস ডে, কী কী কারণে চুমু খাওয়া হয় জানেন?
(৩) ফ্রেঞ্চ কিস- সাধারণত আমরা জানি চুমু খেতে দুই ঠোঁটের ব্যবহার হয়ে থাকে। অদ্ভুত ব্যাপার, এই চুমুতে ঠোঁটের কোনও গুরুত্ব সে ভাবে নেই। এখানে একজনের জিহ্বা অপরজনের জিহ্বাকে স্পর্শ করতে হবে, তারপরে উভয়ে তাদের জিহবাকে স্পর্শ করে ঘোরাতে হবে। চুমু বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, এই চুমুতে পারদর্শী হতে বেশ কয়েক বছর সময় লেগে যায়। এই চুমু বেশ রোমান্টিক, প্যাশনেট এবং উষ্ণ। সাধারণত এই চুমু গভীরভাবে শরীর, মন নার্ভাস সিস্টেমকে নাড়া দেয়।
(৪) সিঙ্গল লিপ কিস: স্বামী ও স্ত্রী বা প্রেমিক প্রেমিকারা যখন তাদের সম্পর্কটাকে অনেকটা গভীরে নিয়ে যেতে পেরেছেন, তারা তখন এই ধরনের চুমু খেয়ে থাকে। এই চুমু যেনন অনেকটা স্যান্ডুইচের মতো— প্রেমিক হয়তো প্রেমিকার নীচের ঠোঁটটাকে নিজের দুই ঠোঁটের মধ্যে টেনে নিয়ে চুষতে থাকে। বিপরীতে প্রেমিকাও ওই একই ভাবে প্রেমিকের ঠোঁটা টেনে নিয়ে চুষতে থাকে।
(৫) লিঙ্গারিং কিস: এই চুমুর বৈশিষ্ট হচ্ছে এতে জিহ্বার কোনও রকম ব্যবহার হয় না। মুখ বন্ধ করে শুধু একজনের ঠোঁট অপরজনের ঠোঁটকে আলতো করে ছোঁয়াতে হয়। তারপর তারা অনেক সময় ধরে এই ভাবে থাকে। যাদের ভালবাসা খুব গভীর তারা ভাবপ্রকাশে এই ধরনের চুমুর আশ্রয় নিয়ে থাকে।
(৬) বাটার ফ্লাই কিস: সাধারণত স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের গভীরতায় এই চুমু ব্যবহার হয়ে থাকে। এই চুমুতে ঠোঁটের কোনও ব্যবহার নেই। প্রথমে, এখানে একজনের চোখের পাতাকে অপরজন চোখের পাতার সাহায্যে স্পর্শ করে, তারপর দু’জনেই তাদের চোখের পাতা ঝাপটাতে থাকে প্রজাপতির ডানা ঝাপ্টানোর মতো করে।
(৭) ইয়ারলোব কিসিং: এই চুম্বনে ঠোঁটে চুমু না খেয়ে কানের লতিতে চুমু খেতে হয়। এতে অদ্ভুত সেনসেশন সৃষ্টি হয় কারণ কানে আমাদের অনেক নার্ভ এন্ডিং আছে। এই চুমু সাধারণত প্রেমিক প্রেমিকারা খেয়ে থাকে।
(৮) গালে চুমু খাওয়া: একজনের গাল আর একজনের গাল স্পর্শ করে যে চুমু খাওয়া হয়, তাকে চিক কিসিং বলে। মা শিশুকে এই ভাবে চুমু খেয়ে থাকেন। আত্মীয়স্বজনের মধ্যে ইউরোপীয় সমাজে এই ধরনের চুমুর প্রচলন আছে।
(৯) হাতে চুমু খাওয়া- কারও হাত সামনের দিকে টেনে করতলের পিছনে চুমু খাওয়ার রেওয়াজ ইউরোপে বহু প্রাচীন। এর সাহায্যে অপরকে সম্মান ও সৌজন্য প্রকাশ করা বোঝায়।
(১০) অ্যাঞ্জেল কিসিং: যখন কাউকে বিদায় জানাতে হয়, তখন তার প্রতি ভালবাসা বা স্নেহ প্রকাশ করতে তার চোখের পাতায় বারবার চুমু খেয়ে বিদায় সম্ভাষণ জানাবার রীতিকে অ্যাঞ্জেল কিসিং বলে। আবার মা তার শিশুকে কখনও এই ভাবে চুমু খেয়ে থাকেন। এই চুমুতে স্নেহের প্রকাশ থাকে বেশি।
(১১) লিজার্ড কিসিং: প্রেমিক বা প্রেমিকার মধ্যে যে কোনও একজন অপরজনের মুখের ভিতর জিহ্বা ঢোকাবে আর বের করবে। এই চুমু তারাই খেয়ে থাকে যাদের প্রেমের বোঝাপোড়া আর বিশ্বাসের বন্ধন দৃঢ়।
(১২) ভ্যাম্পায়ার কিসিং: এই চুম্বনে প্রেমিক বা প্রেমিকার ঘাড়ে খুব গভিরভাবে দাঁত লাগিয়ে হালকাভাবে কামড়াবে ও চুমু খাবে। এটা অনেকটা লাভ বাইটের মতো। এই চুমুকে অনেকে সেক্সি কিসিংও বলেন।
(১৩) এয়ার কিস: কারও উদ্দেশে চুমু ছুড়ে দেওয়ার যে প্রথা আছে, তাকে এয়ার কিস বলে। কেউ কেউ একে ফ্লাইং কিসও বলে।
(১৪) লিভ আ মার্ক কিস: এই চুমু শুধু মেয়েরাই খেয়ে থাকে, কারণ এই চুমু খেতে হলে দু’ঠোঁটে ভাল করে লিপস্টিক লাগাতে হয়। তারপর সঙ্গীর গালে, মুখে, কপালে বা শরীরের অন্য স্থানে ভাল করে চুমু খেয়ে ঠোঁটের ছাপ করে দিতে হবে।
(১৫) চোয়াল বরাবর চুমু- এই চুমু পার্টনারের চোয়াল বরাবর খাওয়া হয়ে থাকে। এই চুমু অবিশ্বাস্য রকমের সেন্সিটিভ। এটা তারাই খেয়ে থাকে যারা শারীরিক দিক থেকে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছেন।
(১৬) সিডাক্টিভ কিস: নামের মধ্যেই চুমুর স্বভাব ব্যক্ত হয়েছে। এটা ফ্রেঞ্চ কিসের মতোই কিন্তু এখানে জিহ্বার কোনও ব্যবহার হবে না। এখানে মুখের ব্যবহার বেশি হয়ে থাকে। এর স্পন্দন হৃদয়ে পৌঁছে এবং যৌন উত্তেজনা বাড়ায়।