প্রতীকী চিত্র।
শনি রাশিচক্রের ১২টি রাশিকে পূর্ণ আবর্তন করতে সময় নেয় প্রায় ৩০ বছর। ১২টি রাশি আবর্তন করার অর্থ ১২টি স্থান। ১২টি স্থানের বেশির ভাগেই শনি অশুভ ফল দান করে। অর্থাৎ এই ৩০ বছরের বেশির ভাগ সময়ই অশুভ ফল দান করে। ১২টি স্থানের মধ্যে অষ্টম স্থানে শনি অবস্থান কালে বেশি অশুভ ফল দান করে। এই কারণে শনির অষ্টমে অবস্থানকে কাঁটার সঙ্গে তুলনা করে ঋষিরা একে কণ্টক শনি বলেছেন।
জন্মরাশির অষ্টমে শনির গোচর কালকে অষ্টম শনি বলা হয়। এই সময় আড়াই বছর। এই সময় শনি গ্রহের কারণে বিভিন্ন প্রকার ঝামেলা, যন্ত্রণা, দুঃখ, কষ্ট, পীড়া, বিভিন্ন বাধা বিপত্তি ঘটে। এই সময়কাল খুবই যন্ত্রণাদায়ক (রাশি অনুযায়ী কম বেশি)।
শনির বিশেষ দৃষ্টির কারণে শনি যে ক্ষেত্রে অবস্থান করে সেই ক্ষেত্র এবং তিনটি ক্ষেত্রে দৃষ্টি দান করে। যে কারণে রাশিচক্রের চারটি ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করে। অষ্টমে অবস্থান কালে অষ্টম, দ্বিতীয়, পঞ্চম এবং দশম স্থান প্রভাবিত করে।
রাশির দ্বিতীয় ক্ষেত্র প্রভাবিত করার কারণে ধন সংক্রান্ত বিষয়ের উপর প্রভাব দান করে। পরিবারের উপর প্রভাবের কারণে, পারিবারিক সদস্যদের সঙ্গে মতবিরোধ বা মনমালিন্য হয়। কথার উপর প্রভাব পড়ে এবং আচরণের উপর প্রভাব পরে। বড় মামা, বড় মাসির সঙ্গে সম্পর্কের উপর প্রভাব পড়ে।
পঞ্চম স্থানের উপর প্রভাব দান করার ফলে সন্তানের উপর প্রভাব পড়ে (প্রথম সন্তানের উপর এই প্রভাব বেশি)। পড়াশোনা এবং উপস্থিত বুদ্ধির পরিবর্তন হয় বা প্রভাব পড়ে। সম্মান, খ্যাতি, যশের উপর প্রভাব পড়ে। এই সময়কালে আবেগ এবং প্রেম প্রণয়ের উপর প্রভাব পড়ে।
অষ্টম ক্ষেত্রে প্রভাব দান করার জন্য পৈত্রিক সম্পত্তি, অনার্জিত সম্পত্তির উপর প্রভাব দান করে। গুপ্ত জ্ঞান, গুপ্ত রোগ ইত্যাদির উপর প্রভাব দান করে। পেটের নীচের দিকে এবং যৌনাঙ্গে প্রভাব ফেলে।
দশম স্থানের উপর প্রভাব দান করার ফলে কর্মক্ষেত্রের (চাকরি বা ব্যবসার) উপর প্রভাব দান করে। দশম স্থান সমস্ত কর্ম নির্দেশ করার কারণে সমস্ত কাজের উপরই প্রভাব পড়ে। বিদেশে ভ্রমণকালে বিভিন্ন সমস্যা, মানসম্মানের উপর প্রভাব পড়ে বা সম্মানহানি হয়।
অষ্টমে শনির প্রভাব নির্ভর করে জন্মকালীন গ্রহের অবস্থান রাশি লগ্ন, মহাদশা, অন্তর্দশা ইত্যাদির উপর।
প্রতিকার
অর্ধ কণ্টক শনি এবং কণ্টক শনির প্রতিকার প্রায় একই।
নিষ্ঠাভরে শনিদেব এবং দক্ষিণাকালীর উপাসনা। গৃহের বয়স্ক সদস্য বা যে কোনও বয়স্কদের সেবা। শনিবার শনি মন্দিরে তেলের প্রদীপ, ধূপ-সহ নিজে হাতে পুজো দিলে উপকার মেলে।
নিষ্ঠাভপে দেবাদিদেব মহাদেবের উপাসনা অর্ধ অষ্টম শনির মৃত্যুসম যন্ত্রণা থেকে মুক্তির অব্যর্থ প্রতিকার। প্রয়োজনে অভিজ্ঞ জ্যোতিষীর পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।