এই বছর শিবরাত্রি/শিব চতুর্দশী আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি, বাংলা ৮ ফাল্গুন ১৪২৬ সন। ওই দিন অনেকেই হয়তো কোনও মন্দিরে না গিয়ে বাড়িতে পূজার্চনা করবেন। বাড়িতে বসে শিবকে পূজা দিতে কী কী উপকরণ লাগবে, তা হয়তো অনেকেই জানেন না। আসুন সেগুলি সম্বন্ধে জেনে নেওয়া আজ।
পূজার সামগ্রী:
১। একটি শিবলিঙ্গ।
২। একটি ছোট ঘটিতে স্নান করানোর জল।
৩। একটি থালা, একটি গ্লাস ও কোশাকুশি। কোশাকুশি না থাকলে তামা বা পিতলের সাধারণ ছোট পাত্র ব্যবহার করবেন।
৪। একটু সাদা চন্দন।
৫। একটু আতপ চাল।
৬। কয়েকটি ফুল ও বেলপাতা।
৭। ধূপ, দীপ।
৮। নৈবেদ্য ও পানীয় জল (আপনার সাধ্য ও ইচ্ছামতো দেবেন। একটা বাতাসা হলেও চলবে।)
৯। প্রণামী (অন্তত একটি টাকা দেবেন। ইচ্ছা করলে বেশিও দিতে পারেন।)
১০। একটি ঘণ্টা।
উপচার সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞাতব্য হল এই যে, চন্দন, ফুল-বেলপাতা, ধূপ, দীপ ও নৈবেদ্য তথা ষোড়শোপচার, দশোপচার, না হলে পঞ্চোপচার পূজার ক্ষেত্রে অপরিহার্য্য। কোনও একটি উপচারের অভাব ঘটলে, সেই উপচারের নাম করে একটু জল দিলেও চলবে। আপনার প্রকৃত ভক্তিই সেই অভাব পূর্ণ করবে, এই কথা জানবেন। শিবপূজা সর্বদা উত্তরমুখে বসে করবেন এবং শিবলিঙ্গকেও উত্তরমুখী করে রাখবেন। উত্তরদিক ব্রহ্মলোকপথ। তাই পরমব্রহ্মময় শিবের পূজা সর্বদা উত্তরমুখে বসে করাই নিয়ম। শিবলিঙ্গকে তামা বা পাথরের পাত্রে বসানো হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: ১৪২৬ সনের মহাশিবরাত্রির নির্ঘণ্ট ও সময়সূচি
এ বার জেনে নেওয়া যাক পারণ সম্পর্কে:
যাঁরা শিবরাত্রি ব্রতের উপবাস করবেন, তাঁরা অবশ্যই পারণ শেষ করবেন। পরের দিন পারণ করতে হয়।
আসুন জেনে নেওয়া যাক পারণের সময়সূচি:
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে:
বাংলা তারিখ: ৯ ফাল্গুন ১৪২৬, শনিবার।
ইংরেজি তারিখ: ২২/০২/২০২০।
সময়: সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটের মধ্যে।
গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে:
বাংলা তারিখ: ৯ ফাল্গুন ১৪২৬, শনিবার।
ইংরেজি তারিখ: ২২/০২/২০২০।
সময়: সকাল ৯টা ৫৬ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের মধ্যে।
এর মাঝে মহাদেবকে অন্ন নিবেদন করে পারণ মন্ত্র উচ্চারণপূর্বক উপোস ভঙ্গ করতে হয়।
শিবরাত্রির পারণ মন্ত্র:
‘সংসার ক্লেশদগ্ধস্য ব্রতেনানেন শঙ্কর।
প্রসীদ সুমুখনাথ জ্ঞানদৃষ্টি প্রদোভব।।’
জেনে রাখুন শিবরাত্রির উপবাসের সময় কী করা উচিত:
১। উপবাস থাকার দিনে তেলমাখা, দিবানিদ্রা, সহবাস, কোনও রূপ ভোগবিলাস, পাশা/জুয়া খেলা, নেশাবস্তু গ্রহণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
২। পারণের দিন দু’বার খাওয়া, সহবাস, পরিশ্রমের কাজ, দিবানিদ্রা, পরের অন্ন ভোজন, দূরপথে যাত্রা নিষেধ।
৩। বারবার জলপান করলে বা দিবানিদ্রা গেলে “ওঁ নমঃ নারায়ণায়”— এই মন্ত্র ১০৮ বার জপ করতে হয়।
৪। সম্পূর্ণ উপবাস না করতে পারলে জল, দুধ, ফল, মূল, ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। গুরু কিংবা ব্রাহ্মণের অনুমতি নিয়ে রাতে বা পূজার শেষে হবিষ্যান্ন খেলে ব্রতভঙ্গ দোষ হয় না।