কেতু ছায়াগ্রহ। কেতু ৭ মার্চ ধনু রাশিতে প্রবেশ করল। এই ঘরে দেড় বছর অবস্থান করে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ সালে বৃশ্চিকে প্রবেশ করবে। এই দেড় বছর বিভিন্ন রাশি বা লগ্নের জাতক কেমন ফল পাবেন তা নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।
১) মেষ লগ্ন বা মেষ রাশি: মেষের পক্ষে কেতু নবমে। এই সময়ে টাকা কোথাও বিনিয়োগ বা কাউকে ধার দেওয়ার ক্ষেত্রে খুব সাবধান হতে হবে। সব রকম আর্থিক লেনদেন বন্ধ রাখতে পারলেই ভাল। যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তা ভাল করে যাচাই করে না নিতে পারলে সেই সিদ্ধান্ত পরিত্যাগ করাই ভাল। এই সময় পিতার সঙ্গে সম্পর্ক ভাল যাবে না। সাংসারিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে এই সময়ে মন্দির বা মঠে আশ্রয় নেওয়ার ইচ্ছা জাগবে। অনেকের শ্রীগুরু সান্নিধ্যে দীক্ষা হবে।
প্রতিকার: রোজ কিছুটা কালো তিল কাউকে দান করুন।
২) বৃষ লগ্ন বা বৃষ রাশি: বৃষের পক্ষে কেতু অষ্টমে। অষ্টমে কেতু প্রায় সব ব্যাপারে খারাপ ফল দিয়ে থাকে। এই সময় খুব সাবধানে গাড়ি চালাবেন। এই সময়ে আয় কম হবে আর ব্যয় বহু গুণ বেড়ে যাবে। আয়-ব্যয়ের মধ্যে সমতা রক্ষা করা খুব কঠিন হবে। কারও হঠকারী ব্যবহারের জন্য দুঃখ পাওয়ার বা অপমানিত হওয়ার যোগ রয়েছে। বন্ধু বা নিকটজনের সঙ্গে কোনও বিতর্কে যাবেন না, বন্ধুত্বে চিরবিচ্ছেদ হতে পারে। স্ত্রীর সঙ্গে ছোটখাটো সমস্যা হলে মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন। পারিপার্শ্বিক কারণে এই সময়ে আপনার মধ্যে বৈরাগ্য ভাব আসতে পারে।
প্রতিকার: কালো তিলের তেল রোজ কিছুটা করে দান করুন, খারাপ ফল কেটে যাবে।
৩) মিথুন লগ্ন বা মিথুন রাশি: মিথুনের সপ্তমে কেতু। কেতুর এই অবস্থানে সবচেয়ে সমস্যা আসে দাম্পত্য জীবনে। এই কেতু দাম্পত্য জীবনে বিনা কারণে অবিশ্বাস, সন্দেহ তৈরি করে দাম্পত্য জীবনে ধস নামিয়ে দেয়। তাই এই সময়ে স্ত্রীকে আঘাত দিয়ে কোনও কথা না বলাই ভাল। দাম্পত্যের মতো ব্যবসাও খুব খারাপ যায়। যে কোনও পেশার ক্ষেত্রে এই সময়টা মোটেই ভাল নয়। যাঁরা প্রেম করছেন খুব যত্ন করে প্রেম করে যান, ভুলেও প্রেমিক/প্রেমিকার ভুল ধরবেন না।
প্রতিকার: দুর্বা ঘাস দিয়ে গণেশ পূজা করুন।
৪) কর্কট লগ্ন বা কর্কট রাশি: কর্কটের ষষ্ঠে কেতু। এই সময়টা কর্কটের পক্ষে শুধু খরচ, খরচ আর খরচ। আয়ের দিক থেকে, বিশেষ করে যাঁরা ব্যবসা করেন, তাঁদের পক্ষে মোটেই ভাল সময় নয়। যাঁরা কারখানায় কাজ করেন, তাঁদের অবস্থা বেশ খারাপ। নানা ভাবে উপরওয়ালার মন রাখার চেষ্টা করতে হয়, তাতেও তাঁর মন পাওয়া যায় না। কাজের চাপ বেড়ে যায়। এই সময়ে ব্যবসার ক্ষেত্রে গ্রাহকের মন বুঝে চলতে হয়। অযথা কোনও কথা কাটাকাটিতে না যাওয়াই ভাল। স্বাস্থ্য নিয়ে এই সময়ে নানা ধরনের জটিলতার সৃষ্টি হয়ে থাকে।
প্রতিকার: বজরংবলির পূজা এই সময়ে বিধেয়।
আরও পড়ুন: এই মাসে ঘর পাল্টালো রাহু, কোন রাশিতে কী প্রভাব জেনে নিন (শেষ অংশ)
৫) সিংহ লগ্ন বা সিংহ রাশি: কেতু পঞ্চমে ঢোকার পর থেকে সিংহের জাতক/জাতিকার হঠাত্ করে আর্থিক চাপ বেড়ে যায় যার ধাক্কা সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে। এই সময় কাউকে ধার দিলে তা ফেরত পাওয়া প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। জমিজমা, বাড়ি বা কোনও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এই সময়টা মোটেই আশানুরূপ নয়। যাঁরা ব্যবসা করছেন, তাঁদের পক্ষে খুব কঠিন সময় বলা চলে। যাঁরা স্কুল বা কলেজে পড়াশোনা করছেন, তাঁদের উচিত খুব বেশি মনোযোগী হওয়া। না হলে পরীক্ষার ফল আশানুরূপ হবে না। যাঁরা প্রেমে পড়েছেন, এই সময়ে প্রেমিক/প্রেমিকার সঙ্গে কোনও অশান্তিতে যাবেন না। যাঁরা সদ্য বিয়ে করেছেন, স্ত্রীর মন বুঝে চলার চেষ্টা করুন। শুধু স্ত্রী বা প্রেমিক নয়, সকলের সঙ্গেই বুঝে কথা বলুন। চেষ্টা করুন কোনও বিতর্কে না যেতে। এই সময়ে সন্তানের স্বাস্থ্য নিয়ে আপনাকে অনেক বেশি ভাবতে হবে।
প্রতিকার: ভৈরবদেবের মন্দিরে কালো পতকা বেঁধে দেবেন।
৬) কন্যা লগ্ন বা কন্যা রাশি: কন্যার পক্ষে কেতু চতুর্থে। এই সময় কেতু আপনার জীবনে অর্থের সমস্যা সৃষ্টি করবে। আপনার বাড়িতে নানা ভাবে গৃহসুখের অভাব ঘটবে। বাড়িতে সব সময় অশান্তি বিরাজ করবে এবং বাড়িতে নেগেটিভ ভাইব্রেশনের প্রভাব চলবে। পেশাগত জীবনে নানা কারণে অত্যধিক কাজের চাপ বেড়ে যাবে। নানা ভাবে কর্মক্ষেত্রে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হবে। ফলে এক সময় মনে হবে কাজ ছেড়ে বাড়িতে বসে থাকি। সংসার খরচও এই সময়ে বেড়ে যাবে। এর ফলে স্ট্রেস, টেনশন ও দুশ্চিন্তা বহু গুণ বাড়বে। এই সময়ে আপনার মায়ের স্বাস্থ্য নিয়ে যারপরনাই ব্যতিব্যস্ত থাকতে হবে। আবার অনেক ক্ষেত্রে মাকে নিয়ে পারিবারিক সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
প্রতিকার: মন্দিরে গিয়ে নীল ফুল দিয়ে আপনার প্রিয় দেবতার উপাসনা করুন।