বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘ইনসমনিয়া’ ছবি: সংগৃহীত
দোলের আনন্দে ঘুম উড়েছে অনেকের। কিন্তু আজ ‘বিশ্ব নিদ্রা দিবস’ও বটে। বিশ্ব নিদ্রা দিবস শুনে প্রাথমিক ভাবে মনে হতেই পারে, ঘুম আবার আলাদা করে উদ্যাপন করার কী আছে! তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পর্যাপ্ত ঘুম সুস্থ জীবনের অন্যতম একটি প্রধান চাবিকাঠি। প্রতিদিন অন্তত ছ’ঘণ্টা নিরবিচ্ছিন্ন ঘুম না হলে দেখা দিতে পারে একাধিক শারীরিক ও মানসিক রোগ। কাজেই অনিদ্রার সমস্যা থাকলে তা অবহেলা করা উচিত নয়। অনিদ্রার সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে থেকে গেলে তা একটি স্থায়ী রোগ ডেকে আনতে পারে। বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘ইনসমনিয়া’। এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা যেমন তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যেতে পারেন না, তেমনই এক বার ঘুম ভেঙে গেলে ফের ঘুমাতে মারাত্মক অসুবিধা বোধ করেন তাঁরা। রইল এমন কিছু কৌশল, যা কিছুটা হলেও আরাম দিতে পারে এই সমস্যা থেকে।
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
১। ঘুমাতে যাওয়ার সময় যেন আশপাশের পরিবেশ থাকে শান্ত। উজ্জ্বল আলোর বদলে মৃদু নীল রঙের আলো থাকলে সুবিধা হতে পারে ঘুমাতে।
২। অনিদ্রা দূর করতে হলে যথাসম্ভব কমাতে হবে ক্যাফিনের পরিমাণ। সন্ধ্যার পর চা-কফি পান করা চলবে না।
৩। পুষ্টিবিদের পরামর্শ মেনে বদল আনতে হবে খাদ্যাভ্যাসে। রোজকার খাবারে প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবারের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে।
৪। মানসিক চাপ ও অনিদ্রা কার্যত জয় ও বীরুর জুটির মতো। যদি মানসিক চাপের সমস্যা থাকে তবে অবশ্যই মনোবিদের পরামর্শ নিতে হবে।
৫। ধ্যান ও সঠিক ভাবে শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার ব্যায়াম ঘুমে খুবই সহায়তা করতে পারে। প্রতিদিন নিয়ম করে এই ধরনের অনুশীলন করলে মানসিক চাপ ও অনিদ্রা, দুই সমস্যা থেকেই মুক্তি মিলতে পারে।
৬। প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটি নির্দিষ্ট অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। বই পড়তে পারেন, লিখতে পারেন রোজনামচা। আপাত ভাবে তুচ্ছ মনে হলেও এই ধরনের অভ্যাস দীর্ঘস্থায়ী ভাবে অনিদ্রা উপশমে সহায়তা করে।
৭। ঘুমাতে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই বন্ধ করতে হবে বৈদ্যুতিন সামগ্রীর ব্যবহার। শুতে যাওয়ার ঘণ্টা খানেক আগে থেকে ল্যাপটপ বা মোবাইলের পর্দায় চোখ রাখা চলবে না একেবারেই।
৮। অশ্বগন্ধার মতো একাধিক ভেষজ অনিদ্রার সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। তবে এই ধরনের কোনও উপাদান নিয়মিত খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
৯। কারও কারও ক্ষেত্রে সমস্যা এতই গভীর হয়ে যায় যে, ঘরোয়া টোটকায় তা নিরাময় সম্ভব হয় না। এমনকি, অনিদ্রার পিছনে লুকিয়ে থাকতে পারে হরমোনের সমস্যা বা মস্তিষ্কের টিউমারের মতো গভীর সমস্যাও। কাজেই, অনিদ্রা দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বাঞ্চনীয়।