কনুইয়ে গুঁতো লাগলে হাতের ভিতর কনকন করে, তার কারণ এই অঙ্গে রয়েছে বিশেষ একটি স্নায়ু। ছবি: সংগৃহীত
অফিস থেকে ফিরে ভাবলেন চেয়ারে বসে চা খাবেন। কিন্তু যেই না বসতে যাবেন, অমনি চেয়ারের হাতলে কনুইতে গুঁতো লাগল বেখেয়ালে। নামমাত্র সংঘর্ষেই পুরো হাত ঝনঝন করে উঠল। আর শীত হলে তো কথাই নেই। অনেক সময়ে বন্ধুবান্ধবরাও মজা করেও কনুইয়ের কাছে আঙুল দিয়ে খোঁচা মারেন। তাতেও একই রকম অনুভূতি হয়। কিন্তু কনুইতে গুঁড়ো লাগলেই বিদ্যুতের ঝটকার মতো ব্যথা কেন হয় হাত জুড়ে?
কনুইয়ে গুঁতো লাগলে হাতের ভিতর কনকন করে, তার কারণ এই অঙ্গে রয়েছে বিশেষ একটি স্নায়ু। চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে বলা হয় ‘আলনার নার্ভ’। সারা শরীরেই স্নায়ু থাকে। কিন্তু কনুই যেহেতু অস্থিসন্ধি, তাই কনুইয়ের স্নায়ুর উপরে মেদ এবং পেশির আস্তরণ অত্যন্ত কম থাকে। স্নায়ুটি ত্বকের ঠিক নীচেই থাকে। ফলে ন্যূনতম আঘাত বা ছোট্ট টোকাতেও সেটির উপর প্রভাব পড়ে এবং শিহরনের মতো অনুভূতি হয়।
খুব তীব্র কোনও আঘাত লাগলে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
আমেরিকার ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছে। সেখানেও বলা হয়েছে একই কথা। কনুইয়ের কাছে এই স্নায়ুটি সবচেয়ে স্পর্শকাতর থাকে। ফলে এই জায়গায় টোকা লাগলেই শিহরনি বা কনকনানি হয়। একে চিকিৎসার ভাষায় বলে ‘আলনার নার্ভ এনট্র্যাপমেন্ট’। কিন্তু অল্প আঘাতে খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা নয় বলেও দাবি করা হয়েছে ওই গবেষণাপত্রে। বিজ্ঞানীদের দাবি, এটি একেবারেই প্রতিবর্ত ক্রিয়ার মতো জিনিস। হাতে তাপ লাগলে যে প্রক্রিয়াতে ছ্যাঁকা লাগার অনুভূতি হয়, এই বিষয়টিও কিছুটা তেমনই। তাই এর থেকে বড় কোনও সমস্যার আশঙ্কা নেই। তবে খুব তীব্র কোনও আঘাত লাগলে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তখন চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে হবে।