ওমিক্রনের উপসর্গগুলি হালকা ঠান্ডা লাগার মতোই। ছবি: সংগৃহীত
করোনাভাইরাসের নয়া রূপ ওমিক্রন ডেল্টার তুলনায় কম সক্রিয় হলেও, এর দ্রুত সংক্রমণের ক্ষমতা চিন্তায় ফেলেছে চিকিত্সকদের। তবে শারীরিক অসুস্থতার হার আগের দুটি তরঙ্গের তুলনায় কম হওয়ায়, চলতি স্ফীতিতে করোনার উপসর্গ তাই ‘মৃদু’ বলে চিহ্নিত হয়েছে। বিগত দুই স্ফীতিতে করোনার প্রভাব মূলত শ্বাসযন্ত্র ও ফুসফুসের উপরে সবচেয়ে বেশি পড়তে দেখা গিয়েছে। তবে ওমিক্রন ফুসফুসের উপর কম প্রভাব ফেলায় হাসপাতালগামী আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কম।
ওমিক্রনের উপসর্গগুলি হালকা ঠান্ডা লাগার মতোই। ডেল্টা রূপের গন্ধ এবং স্বাদের ক্ষতিও করে না। মাথা ব্যথা, গলা ব্যথা, সর্দি, নাক দিয়ে জল পড়া এবং ক্লান্তি ওমিক্রনের কিছু সাধারণ লক্ষণ। এই রূপের আরও একটি উপসর্গ হল পেটের সমস্যা। ওমিক্রনে আক্রান্ত অনেক রোগীদের ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে তাঁদের ফুসফুসে কোনও রকম ক্ষতি হয়নি, কেবল পেটের সমস্যায় ভুগেছেন তাঁরা।
ওমিক্রনে আক্রান্তদের বিভিন্ন উপসর্গের সম্মুখীন হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। এর অন্যতম কারণ হল কোভিড টিকা। যাঁরা টিকা নিয়েছেন এবং যাঁরা নেননি তাঁদের মধ্যে ওমিক্রনের পৃথক উপসর্গ দেখা যায়। যাঁদের ইতিমধ্যেই টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে তাঁদের মধ্যে সংক্রমণের লক্ষণগুলি তুলনামূল ভাবে হালকা। যদিও টিকা ১০০ শতাংশ সুরক্ষা দিতে পারে না, তবুও এটি তীব্রতা এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি প্রায় অর্ধেকে কমিয়ে দিতে পারে, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।
প্রতীকী ছবি
এ ছাড়া যে ব্যক্তিরা আগে থেকেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন তাঁদের ক্ষেত্রে ওমিক্রন সংক্রমণের তীব্রতা অনেক বেশি লক্ষণীয়। যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়েছে, তাঁরা একজন সুস্থ ব্যক্তির তুলনায় করোনার গুরুতর লক্ষণগুলি অনুভব করতে পারেন।
এক বার ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে, এক জন ব্যক্তির শরীরে দু’–তিন দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে। ডেল্টা রূপের ক্ষেত্রে, কোভিডের লক্ষণগুলি শরীরে দেখা দিতে সাধারণত পাঁচ-ছয় দিন সময় লাগে। শুধু তাই নয়, ওমিক্রনের ক্ষেত্রে রোগীরা দশ দিনেই মোটামুটি সুস্থ হয়ে যান, আর ডেল্টার ক্ষেত্রে ১৫ দিন বা তার বেশি সময় লাগতে পারে।
তবে ওমিক্রনে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পরেও হালকা কিছু উপসর্গ থেকে যাচ্ছে। ক্লান্তি, মাথা ব্যথা তার মধ্যে অন্যতম। এগুলি মূলত লং কোভিডের লক্ষণ। করোনা পরবর্তী শারীরিক অসুস্থতাও যেন রূপ বদলেছে। রকমারি সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সে সব যে করোনারই প্রভাব, বুঝতেই বেশ সময় লেগে যাচ্ছে। তাই কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরেও বেশ কিছু দিন শরীরের প্রতি যত্নশীল হওয়া উচিত। অতিরিক্ত পরিশ্রম না করাই ভাল।