ফ্যাটি লিভার নিয়ে সতর্ক না হলে লিভার সিরোসিসও হয়ে যেতে পারে। ছবি- প্রতীকী
আধুনিক জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাসে অনিয়ম, শারীরিক কসরত না করা— এমন কিছু কারণে যে সব অসুখ সহজেই শরীরে বাসা বাঁধে, তার অন্যতম ফ্যাটি লিভার। ফ্যাটি লিভারের অসুখে ভুগছেন কি না, তা সব সময় বাইরে থেকে বোঝার উপায় থাকে না। চিকিৎসকরা বলছেন, প্রত্যেকের লিভারে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ চর্বি থাকে। তা নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তবে এই চর্বির পরিমাণ যদি বেড়ে যেতে থাকে, তা হলেই মুশকিল। তখনই দেখা দেয় নানাবিধ সমস্যা। অনেকেই মনে করেন, মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপানই বোধহয় ফ্যাটি লিভারের একমাত্র কারণ। চিকিৎসকরা বলছেন, ফ্যাটি লিভার দু’রকম— অ্যালকোহলিক এবং নন-অ্যালকোহলিক। মদ্যপান করার ফলে লিভারে মেদ জমলে তা অ্যালকোহলিক ফ্যাট। অতিরিক্ত তেল-মশলা, ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে লিভারে মেদ জমলে তা ‘নন-অ্যালকোহলিক’ ফ্যাটি লিভার। এটি বংশগত কারণেও হতে পারে। যে কারণেই হোক ফ্যাটি লিভার নিয়ে সতর্ক না হলে লিভার সিরোসিসও হয়ে যেতে পারে। লিভার নিজের কার্যক্ষমতা হারিয়ে মৃত্যুর দিকেও ঠেলে দিতে পারে। চিকিৎসকরা বলছেন, ফ্যাটি লিভার থেকে সুরক্ষিত থাকতে মদ্যপান বন্ধ করা জরুরি। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া।
কয়েকটি খাবার আছে যেগুলি খেলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। ছবি-সংগৃহীত
ইতিমধ্যেই যাঁরা ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের অনেক নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া করতে হয়। সব কিছু খাওয়ার উপায় থাকে না। অনিয়ম করলেই ঝুঁকি বাড়ে। এমন কয়েকটি খাবার আছে যেগুলি খেলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। জেনে নিন সেগুলি কী কী?
শাকসব্জি
শরীরের যত্ন নিতে সবুজ শাকসব্জির কোনও বিকল্প হয় না। যে কোনও অসুস্থতায় নিশ্চিন্তে খাওয়া যায় নানা রকম সব্জি। কিছু রোগের ক্ষেত্রে শাকসব্জিই হয়ে ওঠে অন্যতম ওষুধ। তেমনই একটি ফ্যাটি লিভার। ফাইবার, মিনারেলস, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের মতো উপকারী পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার রোজের পাতে রাখুন। ভাত কম খান, ক্ষতি নেই। কিন্ত সব্জি বেশি করে খাওয়ার অভ্যাস করুন।
মাছ
চিকিৎসকদের মতে, সুস্থ থাকতে রোজের পাতে এক টুকরো মাছ খুব জরুরি। ফ্যাটি লিভারের সমস্যা থাকলেও মাছ খেতেই পারেন। মাছে রয়েছে ওমেগা-৩, যা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। ছোট মাছ খেতে পারেন, উপকার পাবেন। তবে ফ্যাটি লিভারের রোগীদের তেল-চর্বির পরিমাণ বেশি, এমন মাছ না খাওয়াই শ্রেয়।
মুরগির মাংস
এই মাংসে রয়েছে ভরপুর পরিমাণে প্রোটিন। শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করতে খাদ্যাতালিকা থেকে মুরগির মাংস বাদ দেওয়া ঠিক হবে না। তবে বেশি তেল-ঝাল-মশলা দিয়ে রান্না করা ঠিক হবে না। চিকেন স্টু খেতে পারেন। একেবারে অল্প তেল দিয়ে পাতলা ঝোলও তৈরি করতে পারেন। তাই বলে রোজ মাংস খাওয়া ঠিক হবে না। সপ্তাহে দু-তিন দিন খেতে পারেন।
তবে, ফ্যাটি লিভারে ভুগে থাকলে কী কী খাবেন, সে বিষয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।