পিসিওএস হলে মেনে চলবেন কী বিধি নিষেধ? — প্রতীকী ছবি।
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস) হল একটি সাধারণ হরমোনজনিত ব্যাধি, যা অনেক মহিলাকে প্রভাবিত করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র মতে, পিসিওএস আনুমানিক ৮-১৩ শতাংশ মহিলাকে প্রভাবিত করে এবং তার মধ্যে ৭০ শতাংশ মহিলা কখনও সে বিষয়ে জানতেও পারেন না।
পিসিওএস কী?
পিসিওএস হল মূলত একটি শারীরিক অবস্থা যাতে ডিম্বাশয়ে একাধিক ছোট সিস্টের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এ ক্ষেত্রে অনিয়মিত মাসিক চক্র, ব্রণ এবং স্থূলতার মতো বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে পারে। পিসিওএস-এর সঠিক কারণ সম্পূর্ণরূপে বোঝা যায় না, তবে পিসিওএস-এ আক্রান্ত মহিলাদের প্রায়ই ইনসুলিন প্রতিরোধমাত্রা অত্যধিক বেশি থাকে।
পিসিওএস থাকলে খাদ্যতালিকায় কিছু উপাদান অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। তার মধ্যে রয়েছে:
ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য
ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে এবং রক্তে চিনির উপস্থিতি কমিয়ে ইনসুলিন প্রতিরোধের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। ফাইবারের উৎকৃষ্ট উৎসের মধ্যে শাক-সবজি, মটরশুঁটি, গাজর, পেয়ারা, ডালিম, আপেল এবং নাশপাতি গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণা দেখায় যে বাদামজাত উচ্চ প্রোটিন রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র মতে, পিসিওএস আনুমানিক ৮-১৩ শতাংশ মহিলাকে প্রভাবিত করে। ছবি: সংগৃহীত
চর্বিহীন প্রোটিন
পেশীর ভর বজায় রাখার জন্য এবং পরিপাক প্রক্রিয়াকে সক্রিয় রাখার জন্য প্রোটিন অপরিহার্য। এই কারণে মুরগির মাংস, ডিম, মাছ, দুধ এই ধরনের খাদ্যগুলি বেছে নেওয়া যেতে পারে।
স্বাস্থ্যকর চর্বি
স্বাস্থ্যকর চর্বি হরমোন উৎপাদন এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পিসিওএস-এ আক্রান্ত মহিলাদের জন্য বাদাম বিশেষ ভাবে উপকারী। বাদামে থাকে স্বাস্থ্যকর চর্বি, ভিটামিন এবং খনিজ, যা ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং সামগ্রিক বিপাকীয় স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সহায়তা করতে পারে। একটি সুষম খাদ্যতালিতায় স্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত খাবার থাকা পিসিওএস-এ আক্রান্ত মহিলাদের জন্য বিশেষ উপকারী।
কী কী খাবেন না?
পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট
পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট, যেমন সাদা রুটি, সাদা ভাত, ময়দা জাতীয় খাদ্য, মিষ্টি, পেস্ট্রি ইত্যাদি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি করতে পারে, যার ফলে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। পরিবর্তে, বাদামি চাল, গোটা গম এবং বাজরা (বাজরা, জোয়ার, রাগি) এ রকম গোটা শস্য বেছে নিন।
চিনিযুক্ত স্ন্যাকস এবং পানীয়
উচ্চ চিনিযুক্ত খাবার এবং পানীয় ইনসুলিন প্রতিরোধ আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে, তাতে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। প্যাকেটজাত ফলের রসের মতো মিষ্টি পানীয় এড়িয়ে চলুন। পরিবর্তে, পুরো ফল এবং সাধারণ জল বা ডাবের জল বেছে নিন।
অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার
অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবারে প্রায়ই অস্বাস্থ্যকর চর্বি এবং চিনি থাকে যা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে। চিপ্স, ফ্রাই, বেকারির খাবার, বার্গার, ইনস্ট্যান্ট নুডল্স, প্যাকেটজাত খাদ্য এড়িয়ে চলুন।
ট্রান্স ফ্যাট
বাজারের ভাজাভুজি, কেক— এ সবে ট্রান্স ফ্যাট থাকতে পারে। পরিবর্তে বাদাম এবং অ্যাভোকাডো খাওয়া যেতে পারে। এতে থাকে স্বাস্থ্যকর চর্বি। এটি দিয়ে ট্রান্স ফ্যাটকে প্রতিস্থাপন করলে উপকার পাওয়া যাবে।