কিছু দৈনন্দিন অভ্যাসে দূরে থাকবে অবসাদ। ছবি: সংগৃহীত।
অবসাদ একটি মানসিক রোগ যা বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করে চলেছে। দুঃখ, ক্লান্তি, সব কাজে আগ্রহ হারানো এবং দৈনন্দিন কাজকর্মে অসুবিধা এর কিছু সাধারণ লক্ষণ। ওষুধ ও থেরাপির মাধ্যমে অবসাদ নিরাময় করা সম্ভব, তবে সঙ্গে জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন করলে অবসাদ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়।
অবসাদ প্রতিরোধে সহায়ক কিছু অভ্যাস পরিবর্তন:
১) নিয়মিত ব্যায়াম:
নিয়মিত ব্যায়াম স্নায়ুতে রক্ত চঞ্চালন বৃদ্ধি করে। এটি স্নায়ুর চাপ কমাতে এবং ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন তিরিশ মিনিট হাঁটা, দৌড়নো, সাঁতার কাটা, ব্যায়াম করা, হালকা ওজন তোলা বা কোনও শক্তি প্রশিক্ষণও উপকারী হতে পারে।
২) স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস:
প্রক্রিয়াজাত খাবার, চিনি এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বি খাওয়া কমিয়ে দিলে উপকার হতে পারে। ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য এবং মাছের মতো প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়ার অভ্যাস করা ভাল। নিয়মিত খাওয়া এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করাও গুরুত্বপূর্ণ।
৩) পর্যাপ্ত ঘুম:
প্রতি রাতে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘুমের একটি সময়সূচি তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমোতে যাওয়া ও ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ। শোয়ার আগে স্মার্টফোন ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। শোয়ার আগে ঈষদুষ্ণ গরম জলে স্নান উপকারী হতে পারে। ঘুমোতে যাওয়ার আগে বই পড়ার অভ্যাস ঘুমের মান ভাল করতে সাহায্য করতে পারে।
পর্যাপ্ত ঘুম দূরে রাখতে পারে অবসাদ। ছবি: সংগৃহীত
৪) মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ:
মানসিক চাপ অবসাদের একটি প্রধান কারণ। যোগাসন, ধ্যানের অভ্যাস বা গভীর শ্বাসের ব্যায়ামের মতো কৌশল মনের চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। প্রয়োজনে বন্ধু, পরিবার বা বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া দরকার।
৫) সামাজিক সংযোগ:
সামাজিক ভাবে বিচ্ছিন্ন থাকা অবসাদের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটালে উপকার পাওয়া যেতে পারে। নতুন বন্ধু তৈরি করার চেষ্টা করতে হবে। বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করলে সাধারণত মন ভাল থাকে।
৬) নতুন কিছু শেখা:
নতুন কিছু শেখা মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখতে এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। একটি নতুন ভাষা শেখা, একটি বাদ্যযন্ত্র বাজাতে শেখা উপকারী হতে পারে।
৭) স্বেচ্ছাসেবক:
অন্যদের সাহায্য করা নিজের মনকে ভাল রাখার এক দুর্দান্ত উপায়। অন্যদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। অন্যদের সমস্যার কথা শুনুন। এতে নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়।
(এই প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশে লেখা। মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে অবশ্যই মনোবিদের পরামর্শ নিতে হবে।)