প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে মুলোর জুড়ি মেলা ভার। ছবি: সংগৃহীত
শীতকাল মানেই বাজার জুড়ে নানা সব্জির সমারোহ। বাঁধাকপি, ফুলকপি, পেঁয়াজকলি তো আছেই, সেই সঙ্গে যে সব্জিটি অনেকে দেখেও দেখেন না, তা হল মুলো। এই সব্জিটি খেতে পছন্দ করেন না অনেকেই। বিশেষ করে বাচ্চারা। মুলোর গন্ধ ভাল লাগে না অনেকেরই। কিন্তু তাই বলে যে মুলোর কোনও গুণ নেই, এমন নয়। বরং অন্য অনেক সব্জির থেকে মুলো বেশ উপকারী। ফলেট, ফাইবার, রাইবোফ্ল্যাবেন, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং ক্যালশিয়ামে সমৃদ্ধ মুলো স্বাস্থ্যকর। এ ছাড়াও মুলোতে আছে ‘অ্যান্থোসায়ানিন’ নামক যৌগ। হৃদ্রোগ দূরে রাখতে মুলোর জুড়ি মেলা ভার।
শরীরের যত্ন আর কী ভাবে নেয় মুলো?
মুলোতে জলের পরিমাণ অনেক বেশি। সেই সঙ্গে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ একেবারে কম। ফলে মুলো খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয় নেই। বরং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এই সব্জি। তা ছাড়া শরীরে জলের ঘাটতি পূরণ করতেও মুলো দারুণ উপকারী। মুলোতে উপকারী উপাদানের অভাব নেই। ভিটামিন বি১, বি১২, বি৩, বি৬, বি৯ ভরপুর পরিমাণে রয়েছে মুলোতে। এ ছা়ড়া মুলোতে ভিটামিন সি-র পরিমাণও কম নয়। প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে তাই মুলোর জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু মুলো রান্না করে খেলে এর সমস্ত স্বাস্থ্যগুণ নষ্ট হয়ে যায়। বেশি তাপে যে কোনও সব্জির স্বাস্থ্যগুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই চিকিৎসকরা অনেক সময় কাঁচা মুলো খাওয়ার পরামর্শও দিয়ে থাকেন। তাতে মুলোতে থাকা পুষ্টিগুণ ভরপুর পরিমাণে পেতে পারেন। রান্না করা মুলোই অনেকে খেতে চান না, সেখানে কাঁচা মুলো খাওয়া অনেকের কাছেই অসম্ভব মনে হতে পারে। এক বার কষ্ট করে খেয়ে নিলে মিলবে দ্বিগুণ উপকার।
মুলো রান্না করে খেলে এর সমস্ত স্বাস্থ্যগুণ নষ্ট হয়ে যায়। ছবি: সংগৃহীত
মুলো খেলেই গ্যাস হবে, এমন একটি ধারণা রয়েছে অনেকের। তা কিন্তু ঠিক নয় একেবারে। কারণ সঠিক সময়ে মুলো খেলে গ্যাস হওয়ার কথা নয়। গ্যাসের সমস্যা এড়িয়ে চলতে খালি পেটে কখনও মুলো খাবেন না। রাতের খাবারেও মুলো না রাখলে ভাল। এতে হজমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। সব সময় ভরপেট খাবার খাওয়ার পর মুলো খাওয়া ভাল। প্রথম পাতেই মুলো দিয়ে রান্না করা কোনও তরকারি খাবেন না। দু’ একটা পদ খাওয়ার পর খেতে পারেন। কাঁচা মুলো চাইলে খেতে পারেন। তবে সঙ্গে শসা খেতে পারলে ভাল। বদহজম হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। মুলো খাওয়ার পর এক জায়গায় বসে থাকবেন না। বরং একটু হাঁটাচলা করুন। উপকার পাবেন।