বয়সের সঙ্গে শরীরের স্নায়ু সংবেদন কমতে থাকে। ছবি: শাটরস্টক
বাবা-মায়ের বয়স বাড়ছে। মাঝেমধ্যেই এটা-ওটা ভুলে যাচ্ছেন। অনেকেই ভাবেন, এ এমন কোনও অস্বাভাবিক বিষয় নয়। কিন্তু আপাত সাধারণ এই সমস্যার পিছনে থাকতে পারে গুরুতর কারণও। অনেক সময় দেখা যায়, বাড়ির বয়স্ক ব্যক্তিরা আঘাত লাগলে ঠিক মতো বুঝতে পারছেন না, শ্লথ হয়ে যাচ্ছেন, কখনও হাত থেকে পড়ে যাচ্ছে জিনিসপত্র। এই ধরনের ঘটনা দেখলেই সতর্ক হতে হবে। এ সবই পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি নামের একটি স্নায়ুর অসুখের উপসর্গ হতে পারে।
কাকে বলে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি?
মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ড থেকে বার্তা ও সংবেদন শরীরের নানা অংশে পৌঁছে দেয় বিভিন্ন স্নায়ু। এই স্নায়ুপথে সমস্যা তৈরি হলেই এই রোগ দেখা দেয়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির আশঙ্কা বাড়ে। বয়সের সঙ্গে শরীরের স্নায়ু সংবেদন কমতে থাকে। রোগটি এমনই, যে গোড়ায় রোগী নিজেও বুঝতে পারেন না, তাঁর আদৌ কোনও অসুবিধা হচ্ছে। নিয়ন্ত্রণ কমে আসায় হাত-পা কাঁপে। জিনিস পড়ে যায়। এই রোগ মূলত ৩ ধরনের।
এমন কোনও উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বাঞ্ছনীয়। প্রতীকী ছবি
ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি: ডায়াবিটিস বা মধুমেহ একা আসে না। ধীরে ধীরে দেহের অন্যান্য অঙ্গকেও অকেজো করে। ডায়াবিটিস রোগ থাকলে এই ধরনের নিউরোপ্যাথি দেখা দিতে পারে। এতে শরীর দুর্বল, অসাড় লাগে। প্রতিবর্ত ক্রিয়া ভীষণ কমে যায়। অর্থাৎ, ধরুন, কোনও গরম জায়গায় হাত পড়ল, রোগী তৎক্ষণাৎ বুঝতে পারবেন না। আবার রোগীর চট করে ঘুরতে, উঠতে বা বসতেও অসুবিধা হতে পারে। চিকিৎসা সত্ত্বেও এই অসুখ থেকে সেরে ওঠা কঠিন।
কার্পাল টানেল সিনড্রোম: এতে মূলত হাতের সমস্যা দেখা যায়। কব্জির স্নায়ুতে চাপ পড়ার কারণে দুই হাত অবশ হয়ে যায়। জিনিসপত্র হাতে নিতে সমস্যা হয়।
সার্ভাইকাল স্পন্ডিলোসিস স্পাইনাল কর্ড ডিজ়িজ়: এ ক্ষেত্রে আবার পায়ে সমস্যা দেখা দেয়। হাঁটাচলায় সমস্যা দেখা যায়। পায়ের হাঁটাচলার জায়গা উঁচুনিচু হলেও বুঝতে পারেন না। ক্রমশ পা থেকে শরীরের নিম্নাংশ পর্যন্ত এই নিউরোপ্যাথি ছড়িয়ে যায়। পক্ষাঘাত হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
তবে সাধারণ মানুষের পক্ষে এই রোগ চিহ্নিত করা খুবই কঠিন। তাই এমন কোনও উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বাঞ্ছনীয়।