Carpal Tunnel Syndrome

রান্নার সময়ে কব্জিতে টান, মাউস ঘোরালেই হাত ঝিনঝিন, এই রোগে ভুগছেন অনেকেই

কম্পিউটারে কাজ, রান্না করা, ওজন তোলা, ঘরের কাজকর্ম করার সময়ে হাতের কব্জিতে ব্যথা হয় অনেকের। সাধারণ ব্যথা ভেবে এড়িয়ে গেলে পরে সমস্যা হতে পারে। কী কারণে ব্যথা হচ্ছে তা জেনে নিন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪ ১৯:০৯
Share:

হাতের কব্জিতে টান, ব্যথা টনটনিয়ে উঠলে সাবধান। ছবি: ফ্রিপিক।

রান্নার সময়ে একটানা অনেক ক্ষণ খুন্তি নাড়লেই কি হাতে ব্যথা করে আপনার? জামাকাপড় কাচা, ঘর পরিষ্কারের সময় হয়তো দেখলেন হাত কাঁপছে, অল্পেই ব্যথা হয়ে যাচ্ছে। লেখার সময় টান ধরছে আঙুলে। মোবাইল নিলেই হাত টনটনিয়ে উঠছে। কিছু ক্ষণ মাউস চালনা করলে হাতের কব্জিতে ভয়ানক ব্যথা হচ্ছে। কখনও কখনও আঙুল এতটাই অবশ হয়ে যায় যে, মুঠো করে কিছু ধরার শক্তিটুকু পর্যন্ত থাকে না। এমন সব লক্ষণ যদি দেখা দিতে থাকে, তা হলে আর দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়াই ভাল। এই সমস্যা এখন বেশিরভাগেরই। চিকিৎসার পরিভাষায় এই রোগকে বলা হয় ‘কারপাল টানেল সিনড্রোম’।

Advertisement

স্নায়ুর রোগ। রোগটি থেকে চটপট সেরে ওঠা যায়, যদি সমস্যার সূত্রপাত হতেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া যায়। কিন্তু অনেকেই যন্ত্রণা সহ্য করে, ঘরোয়া টোটকা অবলম্বন করে ভাবেন সেরে যাবে। এতে রোগ আরও জটিল হয়ে ওঠে।

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, হাতের কব্জির কাছে একটি সরু নালির মতো অংশ আছে যাকে ‘কারপাল টানেল’ বলা হয়। অনেকটা সুড়ঙ্গের মতো। এর মধ্যে দিয়ে চলে গিয়েছে ‘মিডিয়ান স্নায়ু’। এই স্নায়ুই হাতের বুড়ো আঙুল, তর্জনী, মধ্যমা ও অনামিকাকে নিয়ন্ত্রণ করে। যদি কোনও কারণে ওই নালি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা স্নায়ুর উপরে চাপ পড়ে, তখন হাতের কব্জিতে যন্ত্রণা শুরু হয়। চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, ‘কারপাল টানেল’ হলে কব্জির স্নায়ুকোষ মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেটি আর সঙ্কেত পাঠাতে পারে না। ফলে কব্জির পেশি শক্ত হয়ে যেতে থাকে। হাত নাড়তে গেলে, মুঠো করে কিছু ধরতে গেলে ব্যথা শুরু হয়।

Advertisement

কাদের হতে পারে এই রোগ?

হাইপোথাইরয়েড থাকলে এই রোগ বেশি হতে পারে। যাঁদের ওজন বেশি, তাঁদের কব্জির ভিতরের ওই নালি ফুলে গিয়ে স্নায়ুর উপর চাপ দেয়। তখন হাতে ব্যথা হয়। গর্ভবতী মহিলারাও এই রোগে ভুগতে পারেন। ‘রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস’ বা যে কোনও বাতের ব্যথা থাকলে এই রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে যাঁদের, তাঁরাও এই রোগে ভুগতে পারেন। ডায়াবিটিস থাকলেও ‘কারপাল টানেল’ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে হাতের আঙুলগুলি অসাড় হয়ে যেতে শুরু করে। হাত ফুলে যায়। দীর্ঘ সময় ধরে মাউস চালনা করলে এবং কি-বোর্ড ও হাতের অবস্থান সঠিক না থাকলে এই রোগের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। খুব বেশি ভারী জিনিসপত্র তোলেন যাঁরা, তাঁরাও ভুগতে পারেন ‘কারপাল টানেল’ রোগে।

রোগীর কেমন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে সেই বুঝে চিকিৎসা করা হয়। ফিজিয়োথেরাপি, আলট্রাসাউন্ড থেরাপিও করেন চিকিৎসকেরা। ইন্টারনেট ঘাঁটলেই কারপাল টানেল সিনড্রোম নিরাময়ে একাধিক ব্যায়াম পাওয়া যাবে। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সেইসব ব্যায়াম করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। চিকিৎসা চলাকালীন কব্জি যতটা বিশ্রামে রাখা যাবে তত দ্রুত সেরে ওঠা যাবে। তার জন্য হাতের কাজে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। ব্যথা কমানোর জন্য চিকিৎসক হাতে পরার যে ব্যান্ড দেবেন তা পরে থাকতে হবে। এতে হাতের পেশিতে চাপ কম পড়বে। ব্যথাও তাড়াতাড়ি সেরে যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement