Binge Eat

অফিসে, বাড়িতে সারাক্ষণ খাই খাই? ভর্তি পেটেও মুখ চলছে, কী এই সমস্যা, যাতে ভুগছে কমবয়সিরা

পেটের খিদে ঠিক নয়। দৃষ্টিখিদে। আরও বিশদে বললে মনের খিদে। এই খিদের অসুখেই ভুগছে গোটা বিশ্ব।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৪ ১৮:৪৬
Share:

খাই খাই বাতিক অসুখের পর্যায়ে যেতে পারে! ছবি: সংগৃহীত।

অফিসে কাজ করতে বসেই মনে হয় খিদেটা চাগাড় দিয়ে উঠল। বাড়িতে ভরপুর আহার করার কিছু ক্ষণ পরেই মনে হতে থাকে টুকটাক কিছু খেলে মন্দ হয় না। আবার রাতে যদি জাগতে হয়, তা হলে তো কথাই নেই! একটা গোটা চিপসের প্যাকেট খালি হয়ে যাবে নিমেষে। আবার ধরুন, পরীক্ষার ঠিক আগে, একগাদা পড়া বাকি, তখনই মনে হল পিৎজ়া বা বার্গার অর্ডার দিয়ে খেলে বেশ হয়। বেশি উদ্বেগ থেকে তখন খাই খাই ভাবটা আরও জাঁকিয়ে বসে। এই যে খাই খাই বাতিক, তার গালভরা নামই হল ‘বিঞ্জ ইটিং’। আর এটাই এখন অসুখের পর্যায়ে চলে গিয়েছে।

Advertisement

পেটের খিদে ঠিক নয়। দৃষ্টিখিদে। আরও বিশদে বললে মনের খিদে। এই খিদের-অসুখেই ভুগছে গোটা বিশ্ব। বিশেষ করে কমবয়সিদের মধ্যে এই খাই খাই ভাবটা যেন বেড়েই চলেছে। ভরা পেটেও তারা দিব্যি রোল-চাউমিন-কাটলেট গবগব করে খেয়ে যাচ্ছে। খিদে না পেলেও আইসক্রিম, চকোলেটে দিব্যি চেটেপুটে সাফ করে দিচ্ছে। মনোবিদেরা বলছেন, খাই খাই বাতিক মানেই সব সময়ে খিদের খাওয়া নয়। এমন হতে পারে, কিছু ক্ষণ আগেই একটা মিল শেষ হয়েছে। কিন্তু তার পরেই আবার খিদে পেয়ে গিয়েছে। হয়তো দুপুরের পেট ভরা খাবার খেয়েছেন, তার পরেও মনে হচ্ছে, আরও কিছু খাই। দুটো খাবারের মধ্যে খুব কম সময়ের বিরতি থাকছে। আর খেয়ে ফেলার পরেই মনে একরাশ উদ্বেগ জন্মাচ্ছে। ক্যালোরি বেড়ে যাবে না তো? মোটা হয়ে যাব না তো? এই সব চিন্তাভাবনা আবার মানসিক চাপকে বাড়িয়ে তুলছে। মনের খিদের সঙ্গে মানসিক সমস্যাও দেখা দিচ্ছে একটু একটু করে।

আপনারও যে এমন প্রবণতা আছে, সেটা মনে মনে বিলক্ষণ টের পাচ্ছেন। যতক্ষণ না খাচ্ছেন, মন-মাথা ঠান্ডা হবে না কিছুতেই। লক্ষণ আরও আছে। দেখবেন, কেউ যদি খেয়ে ফেলে এই ভয়ে খুব তাড়াতাড়ি একগাদা খাবার মুখে ঢোকাচ্ছেন, অথবা নিরিবিলি জায়গায় গিয়ে একা লুকিয়ে লুকিয়ে খাচ্ছেন। খাব না, খাব না করেও সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন রেস্তোরাঁয় গিয়ে তেলমশলাদার খাবার খেয়ে ফেলে হাঁসফাঁস করছেন। নিজের খাবার শেষ করেও অন্যের খাবারে হামলে পড়ছেন, ভাবছেন যে পেট ভরেনি। এই সবই মনের খিদে বা বিঞ্জ ইটিং-এর লক্ষণ।

Advertisement

কেন হয় এমন?

মনোবিদেরা বলছেন, বিভিন্ন কারণে উদ্বেগ, মানসিক চাপ বাড়লে কর্টিসল নামে এক ধরনের হরমোন বেরোয় আমাদের শরীরে। এই কর্টিসল ঝাল, মিষ্টি, মুখরোচক খাবারের ইচ্ছা বাড়িয়ে দেয়। তখনই মন খাই খাই শুরু করে। এই হরমোনের ক্ষরণ বাড়লে মনের খিদেও বেড়ে যায়।

মনে লাগাম পরান, খিদে আপনিই মিটে যাবে

আবেগ আর মনের খিদে মেটানোর একটাই উপায় আছে। মনের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা। মনকে ভাল রাখার উপায় খুঁজে নিতে হবে নিজেকেই। মন খাই খাই করলে ফ্রিজ খুলে ক্যাডবেরি বার করে নেবেন নাকি খোলা হাওয়ায় গিয়ে হাঁটাহাঁটি বা শরীরচর্চা করে নেবেন, সেটা একেবারেই আপনার সিদ্ধান্ত। মনোবিদেদের পরামর্শ, মানসিক চাপ কমাতে নিজের দৈনন্দিন কাজের বাইরেও সৃজনশীল কিছু কাজ করতে হবে, যেমন— ছবি আঁকা, বই পড়া, গান শোনা ইত্যাদি যার যেমন শখ। নিয়ম করে মেডিটেশন করলেও মনের অস্থিরতা কমে যায়।

প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। এমন সমস্যা হচ্ছে কিনা অথবা যদি ধরা পড়ে তাহলে কী করতে হবে, কী ধরনের চিকিৎসা জরুরি, ডায়েটে কী বদল আনতে হবে তা অবশ্যই চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিদের থেকে জেনে নিন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement