সঙ্গীতশিল্পী অদিতি মুন্সী গলার স্বর বুজে আসার মতো সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন কেন? ছবি: সংগৃহীত।
আবহাওয়ায় পরিবর্তন, পরিবেশ দূষণ, বিশ্রামহীন গলার কাজ। এই সময়ে গলার স্বর ভাঙা কিংবা বুজে আসার মতো সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন অনেকেই। সাধারণ মানুষ তো বটেই, শিক্ষক, সঙ্গীতশিল্পীরাও পড়ছেন বিপদে। উৎসবের এই সময়টা জুড়ে সঙ্গীতশিল্পীদের ব্যস্ততা থাকে তুঙ্গে। গলার স্বরের সমস্যা হওয়ায় একের পর এক অনুষ্ঠান বাতিল করতে হচ্ছে তাঁদের। আবার, পুজোর ছুটি শেষে নিয়মিত স্কুল, কলেজ শুরু হয়। পেশার তাগিদেই জোরে, চিৎকার করে কথা বলতে হয় অনেককে। সে ক্ষেত্রেও কথা বলতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তাঁরা। সম্প্রতি সঙ্গীতশিল্পী অদিতি মুন্সীও এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন বলে আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন। আপাতত তাঁকে ‘ভয়েস রেস্ট’ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তাই একের পর এক অনুষ্ঠান বাতিল করতে হয়েছে তাঁকেও।
কান, নাক, গলার চিকিৎসকেরা এই ধরনের সমস্যার জন্য সাধারণত আবহাওয়ার পরিবর্তনকেই দায়ী করেন। তবে সমস্যা বাড়িয়ে তোলার পিছনে দূষণের যথেষ্ট হাত রয়েছে। চিকিৎসা পরিভাষায় এই ধরনের সমস্যাকে ‘ভয়েস বক্স ইনজ্যুরি’ বলা হয়। এই রোগে আক্রান্ত হলে গলা দিয়ে স্বর নিক্ষেপ করতেই সমস্যা হয়। কথা বলা, গান গাওয়া বা পড়ানোর মতো কাজ করতে গেলে সমস্যা হওয়ারই কথা। অনেকেরই আবার সকালের দিকে গলার স্বর একেবারে স্বাভাবিক থাকে। বেলা বাড়তে থাকলে গলার স্বরের পরিবর্তন হতে থাকে। গলা থেকে আওয়াজ বার করতেই বেগ পেতে হয়। পেশাদার শিল্পীদের লাগাতার অনুষ্ঠান এবং গলাকে বিশ্রাম না দেওয়ার অভ্যাস এই ধরনের সমস্যাকে আরও মারাত্মক করে তোলে। আবার বাড়িতে ছোট বাচ্চা থাকলে তাদের পিছনে অনর্গল কথা বলে যেতে হয়। তখনও গলা বিশ্রাম পায় না। সচেতন না হলে স্বরযন্ত্রের উপর অবাঞ্ছিত নডিউল বা টিউমারও হতে পারে।
সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখবেন কী করে?
জলবায়ুর পরিবর্তন বা দূষণের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব নয়। কিন্তু সচেতন থাকা সম্ভব। পেশাগত কারণে যাঁদের কথা বলতেই হয় বা গান গাইতে হয়, তাঁদের ঠান্ডা-গরমে গলার যত্ন নেওয়া, ধোঁয়া, ধুলো থেকে বাঁচতে মুখে মাস্ক পরা, ঠান্ডা জল বা আইসক্রিম না খাওয়া, বাড়ি ফিরে নিয়মিত ঈষদুষ্ণ জলে গার্গল করা বা গরম জলের বাষ্প নেওয়ার অভ্যাস রাখতেই হবে। টানা কথা বলা, গান গাওয়া যাবে না। মাঝে ১০ মিনিটের বিরতি নিতেই হবে। সমস্যা যদি গুরুতর হয়, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতেই হবে। গলার ভিতরে ঠিক কোথায়, কী কারণে সমস্যা হচ্ছে, তা ল্যারিঙ্গোস্কোপ ছাড়া বাইরে থেকে কোনও ভাবেই বোঝা সম্ভব নয়।