ঋতুস্রাবের যন্ত্রণা অসহনীয় হয়ে উঠলে সাবধান! ছবি: ফ্রিপিক।
ঋতুস্রাবের সময় তলপেটে, কোমরে যন্ত্রণা কমবেশি সব মেয়েরই হয়। কিন্তু, জানেন কি, এই যন্ত্রণার তীব্রতা ঠিক কতখানি হতে পারে? চিকিৎসকেরা বলছেন, কিছু ক্ষেত্রে এই যন্ত্রণা সহ্যের অতীত হয়ে যায়।
প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে এক জন মহিলা এই সমস্যায় ভোগেন। তাঁদের কাছে মাসের ওই কয়েকটা দিন দুঃস্বপ্নের মতো। হটব্যাগ, প্যারাসিটামল বা অন্য কোনও ব্যাথানাশক ওষুধ খেয়ে ভীষণ কষ্টদায়ক সমস্যাকে জোর করে চেপে রাখার চেষ্টা চলে। যন্ত্রণাদায়ক ঋতুস্রাবের অনেক কারণ থাকতে পারে। এখনকার মেয়েরা যে সব সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন, তার কয়েকটি জেনে রাখা ভাল। অস্বাভাবিক যন্ত্রণাকে দিনের পর দিন অবহেলা করলে তা বড় বিপদের কারণ হতে পারে।
ডিসমেনোরিয়া খুবই কষ্টের
যন্ত্রণাদায়ক ঋতুস্রাবের একটা কারণ হতে পারে প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া। হরমোনের ওঠানামা, জরায়ুর সঙ্কোচনের কারণে পেট, তলপেট, কোমরে অসহ্য যন্ত্রণা হতে থাকে। শরীরের বিভিন্ন অস্থিসন্ধিতেও ব্যথা শুরু হয়। হরমোনের তারতম্যের কারণে ঘন ঘন মেজাজ বদলে যেতে থাকে। টান ধরে হাত ও পায়ের পেশিতে।
জরায়ুতে ফাইব্রয়েড
স্ত্রীরোগের মধ্যে বেশি দেখা যায় ‘ইউটেরাইন ফাইব্রয়েড’। তবে ফাইব্রয়েড থাকলেই যে সমস্যা থাকবে, তা নয়। অনেকের অসুবিধা থাকে আবার অনেকের কোনও সমস্যাই থাকে না। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোন মাসিক ঋতুচক্রের সময়ে জরায়ুর আবরণে প্রদাহ তৈরি করে। তখন ফাইব্রয়েড হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এই রোগে অতিরিক্ত রক্তপাতের ফলে শরীরে রক্তাল্পতার প্রবণতা বেড়ে যায়।
এন্ডোমেট্রিয়োসিস
অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক অবস্থা। যে কোষগুলি সাধারণত জরায়ুর মধ্যে তৈরি হয়, সেগুলি জরায়ুর বাইরে, মূলত পেলভিস অঞ্চলে বাড়তে শুরু করে। চিকিৎসা না করালে এন্ডোমেট্রিয়োসিস থেকে বন্ধ্যত্বও আসতে পারে।
অ্যাডিনোমায়োসিস
জরায়ুর আকার বড় হয়ে যায়। এটি জরায়ুর এক অংশে হতে পারে, আবার গোটা জরায়ু জুড়েও হতে পারে। এর প্রভাবে বেদনাদায়ক ঋতুস্রাব, অতিরিক্ত রক্তক্ষয়, পেট ফুলে থাকা, পেলভিক অংশে ব্যথা হয়।
পিসিওএস
প্রতি ১০ জনের মধ্যে এক জন মহিলার জরায়ুতে পিসিওএস-এর সমস্যা দেখা যায়। এই পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম বা পিসিওএস অসুখটি হলে হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যায়। ফলে ঋতুস্রাব যন্ত্রণাদায়ক, অনিয়মিত বা অতিরিক্ত হতে পারে।
জরায়ুতে সিস্ট
জরায়ুতে সিস্ট হওয়ার অন্যতম কারণ ইস্ট্রোজেন হরমোনের সাম্য নষ্ট হওয়া। এখনকার মেয়েদের সবচেয়ে বড় শারীরিক সমস্যা ‘ওভারিয়ান সিস্ট’। এর ফলে অনিয়মিত বা অতিরিক্ত ঋতুস্রাব, অল্প বয়সে ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। ঋতুস্রাব খুব বেদনাদায়কও হয় অনেকের। বাড়তি ওজন, ভুলভাল খাওয়ার অভ্যাস, দেরিতে গর্ভধারণের কারণে এমন সমস্যা বেড়েই চলেছে।