থাইরয়েড হলে সুস্থ থাকতে ওজন কমানো জরুরি। প্রতীকী ছবি।
পরিশ্রম করেও ওজন না কমার নেপথ্যে যে কয়েকটি কারণ থাকে, থাইরয়েড অন্যতম। অথচ থাইরয়েড রোগীদের সুস্থ থাকতে হলে ওজন কমানো জরুরি। থাইরয়েড হলে বিপাকহার কিছুটা কমে যায়। ফলে অনেকেরই ওজন বাড়তে থাকে। কিন্তু থাইরয়েড হলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা কতটা জরুরি? চিকিৎসক সুর্বণ গোস্বামী বলেন, ‘‘থাইরয়েড বলে নয়, যে কোনও অসুখের ক্ষেত্রেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তবে রোগীর বয়স ৩৫-এর বেশি হলে ওজন কমানো কঠিন হয়ে যায়। কারণ, তখন মেদ সহজে ঝরতে চায় না। তবে কঠিন হলেও কমানো যায়। সে ক্ষেত্রে রোগীকে একটা নির্দিষ্ট ডায়েট চার্ট মেনে চলতে হবে। ওজন বেড়ে যাওয়ার পিছনে খাবার একটা অন্যতম কারণ।’’
থাইরয়েড রোগীদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে কী ধরনের খাবার খেতে হবে? সুবর্ণ বলেন, ‘‘কী খাচ্ছি, কখন খাচ্ছি এবং কতটা খাচ্ছি, ওজন নির্ভর করে এই বিষয়গুলির উপর। অল্প করে খাবার বার বার খেতে হবে। বেশি ক্ষণ খালি পেটে থাকা যাবে না। ভিটামিন সি যুক্ত ফল বেশি করে খেতে হবে। নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। সেই উদ্বেগ কমাতে হবে। অবসাদ এবং উদ্বেগ কিন্তু ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে।’’
এগুলি ছাড়াও রোজের জীবনে আর কী কী পরিবর্তন আনলে সুস্থ থাকা সম্ভব?
১) ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়ম মেনে খাবার খাওয়াও জরুরি। ডায়েটে যদি কম কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খেতে পারেন, তা হলে ভাল। থাইরয়েড রোগীরা বেশি কার্বোহাইড্রেট খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে।
২) থাইরয়েড হলে হজমের গোলমাল লেগেই থাকে। খাবার ঠিক করে হজম হয় না। সে কারণেই বাড়তে থাকে ওজন। প্রোটিন কিন্তু হজম ঠিক রাখে। থাইরয়েড রোগীদের রোজের পাতে তাই প্রোটিন রাখা জরুরি। তাতে নিয়ন্ত্রণে থাকবে ওজন। প্রোটিন পেট ভর্তি রাখে বহু ক্ষণ। ঘন ঘন খাবার খাওয়ার প্রবণতাও কমায়।
৩) প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং চিনি থাইরয়েড রোগীদের কাছে বিষের মতো। এতে থাইরয়েডের মাত্রা তো বেড়ে যায়। ওষুধ খেয়েও কোনও সুফল পাওয়া যায় না। সেই সঙ্গে ওজন বাড়তে থাকে। সুস্থ থাকতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই ধরনের খাবার থেকে শত হস্ত দূরে থাকতে হবে।
৪) নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। ওজন বশে রাখার এর চেয়ে ফলদায়ক বিকল্প আর হতে পারে না। বাড়িতে শরীরচর্চায় আলস্য এলে জিমে যান। শরীরচর্চা করলে থাইরয়েডের মাত্রাও বাড়তে পারবে না। পুল আপ কিংবা পুশ আপও করতে পারেন।
৫) থাইরয়েড হলে ওজন কমানো সত্যিই বেশ কঠিন। তবে পর্যাপ্ত ঘুম এই কাজটি সহজ করে দিতে পারে। ঘুম কম হলে ওজন স্বাভাবিক ভাবেই বেড়ে যায়। তাই পর্যাপ্ত ঘুম হচ্ছে কি না, সে দিকে নজর দেওয়া জরুরি। চেষ্টা করেও ঘুম কম হলে অতি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।