শীতে সুস্থ থাকার চাবিকাঠি। ছবি- সংগৃহীত
শীতের আমেজ পড়তে শুরু করেছে মানেই গুটিসুটি হয়ে লেপের তলায় একটু বেশিই সময় চলে যাচ্ছে। সকালে একেবারেই উঠতে ইচ্ছে করছে না, একটু বেশি অলস লাগে? আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পারলে শরীরে তার প্রভাব পড়ে। তাপমাত্রা এক হলেও এক এক জনের কাছে তার প্রভাব এক এক রকম হয়।
পুষ্টিবিদদের মতে, ঠান্ডা লাগা বা এই মরসুমে অসুস্থ হয়ে পড়ার তারতম্যের কারণ কিন্তু শরীরে বিভিন্ন যৌগের অভাব হতেই পারে। তাই গরম পোশাক জড়ানোর আগে রক্তে সব যৌগের মাত্রা যথাযথ আছে কি না, তা দেখে নেওয়া জরুরি।
এই শীতে সুস্থ থাকার চাবিকাঠি কোন কোন যৌগের হাতে?
আয়রন
আপনি কি একটু বেশিই শীতকাতুরে? অন্যদের থেকে বেশি ঠান্ডা লেগে যাওয়ার ধাত কিন্তু শরীরে আয়রনের অভাবেও হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে, শরীরকে উষ্ণ রাখতে আয়রনের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। এ ছাড়াও, ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেতে পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। রক্তে লোহিত কণিকার পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতেও এই যৌগের জুড়ি মেলা ভার।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়া যেতেই পারে। কিন্তু রোজের খাবারে শাকসব্জি, ডিম, দুধ, মাছ, মাংস, শুকনো ফল ও গুড় যোগ করলেও আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয়।
ক্যালশিয়াম
হাড়ের স্বাস্থ্য মজবুত রাখতে ক্যালশিয়ামের গুরুত্ব রয়েছে। শুধু হাড়ের স্বাস্থ্যই নয়, গবেষণায় দেখা গিয়েছে ভিটামিন ডি-র সঙ্গে ক্যালশিয়ামের যথাযথ প্রয়োগ ক্যানসার, ডায়াবিটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও নিয়ন্ত্রণ করে।
দুধ ছাড়াও দুগ্ধজাত যে কোনও খাবারেই ক্যালশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে। এ ছাড়াও কাঠবাদাম, শাকসব্জি, সামুদ্রিক মাছ খেলেও ক্যালশিয়ামের ঘাটতি পূরণ হয়।
জিঙ্ক
শীতে নানা রকম সংক্রামক রোগের থেকে বাঁচতে প্রতি দিন নির্দিষ্ট পরিমাণ জ়িঙ্ক যোগ করা জরুরি। এই যৌগটি ক্ষত নিরাময়ে, প্রদাহ রোধ করতে, জীবাণু ঘটিত যে কোনও রোগ থেকে বাঁচতে সাহায্য করে।
খাবারের মাধ্যমে প্রতি দিন নির্দিষ্ট পরিমাণ জ়িঙ্ক পেতে ডিম, মাংস, সামুদ্রিক খাবার, টফু যোগ করা যেতেই পারে।
ফলিক অ্যাসিড
শরীরে নতুন কোষ তৈরি করতে ফলিক অ্যাসিড যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যাঁরা সন্তানধারণ করতে চাইছেন বা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় রয়েছেন, তাঁদের জন্য এই যৌগটি খুব জরুরি।
পালং শাক, বিট, ব্রকোলির মতো সব্জি এবং কলা, কমলালেবুর মতো ফল প্রতি দিন খেতে পারলে যথেষ্ট পরিমাণ ফলিক অ্যাসিড স্বাভাবিক ভাবেই পাওয়া যেতে পারে।
ভিটামিন সি
রোগ প্রতিরোধে ভিটামিন সি-র ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি দিন সকালে উষ্ণ গরম জলে পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খেলে কিছুটা হলেও ভিটামিন সি-র ঘাটতি পূরণ হয়।
এ ছাড়াও গাজর, বিট, শাকসব্জি, টম্যাটো, কিউইতে যথেষ্ট পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে।