ছবি: সংগৃহীত।
সময় বাঁচাতে মাঝেমধ্যে বিমানে চাপতেই হয়। অনেকটা দূরের পথ খুব অল্প সময়ে পেরিয়ে যাওয়া যায় আকাশপথে। অল্প কিছু ক্ষণের জন্য বিমানে চাপলে খুব একটা অসুবিধে হয় না। তবে, দীর্ঘ ক্ষণের বিমানযাত্রায় ‘জেট ল্যাগ’ হওয়া স্বাভাবিক। মাটি ছেড়ে খানিকটা উপরে ওঠার পর শরীরে অল্পবিস্তর অস্বস্তি হয়ই। কানে তালা লেগে যাওয়া তো খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। কারও গা বমি ভাব দেখা দেয়।আবার কারও মাথা হালকা লাগে। তবে ‘জেট ল্যাগ’-এর সমস্যা ঠিক ততটা সাধারণ নয়।
দীর্ঘ পথ পাড়ি দিলে ‘টাইম জ়োন’ পরিবর্তিত হয়। তার সঙ্গে দেহঘড়িটি কিছুতেই খাপ খাওয়াতে পারে না। ফলে অনিদ্রাজনিত সমস্যা দেখা যায়। দিনের বেলা ঘুম পায়। আর সারা রাত জেগে থাকতে হয়। কাজে মন দিতেও সমস্যা হয় অনেকের। ফলে শরীরও ম্যাজম্যাজ করতে থাকে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই ধরনের অস্বস্তি নিয়ে তো বেশি ক্ষণ থাকা যায় না! তা হলে কী করণীয়? বিমান থেকে নামার পর তিনটি আসন অভ্যাস করতে পারলেই জেট ল্যাগের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
১) হস্তপদাসন
ছবি: সংগৃহীত।
প্রথমে ম্যাটের উপর সোজা হয়ে দাঁড়ান। দুই পায়ের ব্যবধান যেন খুব বেশি না থাকে। দুই হাত থাকবে দেহের দু’পাশে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। এ বার ধীরে ধীরে কানের দু’পাশ দিয়ে দুই হাত তুলতে হবে। পরের ধাপে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে সামনের দিকে ঝুঁকতে হবে। কোমরের পেশি থেকে মেরুদণ্ড টেনে দেহের উপরিভাগ এবং মাথা ঊরুর কাছাকাছি নিয়ে যেতে হবে। দুই হাত থাকবে পায়ের পাতার দু’পাশে। হাঁটু যাতে না ভাঙে, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। পাঁচ থেকে ছ’বার অভ্যাস করা যেতে পারে এই আসন।
২) গরুড়াসন
ছবি: সংগৃহীত।
এই ব্যায়ামটি দাঁড়িয়ে বা বসে দু’ভাবেই করতে পারেন। প্রথমে সুখাসনে বসুন। তার পর একটি হাত আর একটি হাতের তলা দিয়ে পেঁচিয়ে এমন ভাবে নিয়ে একত্র করুন, যেন প্রণামের ভঙ্গিতে রাখতে পারেন। এই ভাবে দিনে অন্তত পক্ষে ৫ বার ৫ মিনিট করে অভ্যাস করুন।
৩) বক্রাসন
ছবি: সংগৃহীত।
ম্যাটের উপর দুই পা সামনে ছড়িয়ে বসুন। খেয়াল রাখবেন, মেরুদণ্ড, ঘাড়, কাঁধ যেন সোজা থাকে। দুই হাত শরীরের দু’পাশে রেখে আরাম করে বসুন। পা সোজা অবস্থায় রেখে কোমর থেকে ডান পাশে ঘুরুন। এই অবস্থানে ডান হাত ডান দিকের নিতম্বের পিছনে মাটিতে রাখতে হবে, আঙুল যেন পিছনের দিকে পয়েন্ট করা থাকে। এ বার বাঁ হাত যতটা সম্ভব ডান হাতের কাছাকাছি মাটিতে রাখতে হবে। বাঁ হাঁটু ভাঁজ করে ডান হাঁটুর বাইরের দিকে রাখুন। এ বার মাথা, ঘাড়, কাঁধ-সহ সম্পূর্ণ শরীর ডান দিকে ঘোরাতে হবে যতটা সম্ভব।
এই আসন করার সময় খেয়াল রাখবেন, মেরুদণ্ড যেন সোজা থাকে। এখানে দুই হাতকে লিভারের মতো ব্যবহার করা হয়। এই অবস্থানে ডান দিকের কাঁধ বরাবর যতটা সম্ভব সামনের দিকে তাকান। এই ভাবে কিছু ক্ষণ থাকতে হবে। খেয়াল রাখবেন, নিতম্ব যেন মাটি থেকে উঠে না যায়। শুরুর অবস্থানে ফিরে আসুন। এ বার একই পদ্ধতিতে বাঁ দিকে ঘুরে ডান পা হাঁটু থেকে ভাঁজ করে বাঁ পায়ের হাঁটুর বাইরের দিকে রেখে একই ভাবে আসনটি অভ্যাস করুন। পর্যায়ক্রমে ডান ও বাঁ দিকে ৫ বার করে অভ্যাস করতে হবে।