হাসপাতালেই পর পর শিশু খুন! প্রতীকী ছবি
কখনও হাওয়া-ভরা ইঞ্জেকশন, কখনও আবার অতিরিক্ত ইনসুলিন! চিকিৎসাবিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন উপায়ে অন্তত ৭ শিশুকে হত্যা ও আরও দশ শিশুকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠল ব্রিটেনের এক নার্সের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তের নাম লুসি লেটবি। ৩২ বছর বয়সি লুসি ব্রিটেনের চেস্টার হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। ব্রিটেনের একটি আদালতে শুরু হল শুনানি।
ওয়ারিংটনের ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টে সোমবার এই শিশুহত্যা মামলায় ওই নার্সের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ দেখে চমকে উঠেছেন অনেকেই। আইনজীবীরা কোর্টে দাবি করেছেন, ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে আচমকাই শিশুমৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যায় চেস্টার হাসপাতালে। কর্তৃপক্ষ দেখেন, বেশ কিছু শিশুর স্বাস্থ্য হঠাৎ করেই খারাপ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ঠিক কী কারণে এমন হচ্ছে তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না তাঁরা। তদন্ত শুরু হতে দেখা যায় প্রতিটি শিশুমৃত্যুর ঘটনায় একটিই মিল। সব ক্ষেত্রেই উপস্থিত ছিলেন অভিযুক্ত নার্স।
একটি ক্ষেত্রে হঠাৎ করেই একাধিক শিশুর দেহে শর্করার মাত্রা মারাত্মক ভাবে কমে যায়। তদন্তকারীদের দাবি, লুসি ইনসুলিন ইঞ্জেকশন দিয়ে দিয়েছিলেন নবজাতকদের। অন্য একটি ক্ষেত্রে দুই সদ্যোজাতের শিরাতে ইঞ্জেকশন দিয়ে হাওয়া ভরে দিয়েছিলেন লুসি। বিষয়টিকে ডাক্তারি পরিভাষায় ‘এয়ার এম্বোলাস’ বলা হয়। শুধু তা-ই নয়, লুসি কোনও কোনও শিশুর মুখে অতিরিক্ত দুধ ঢেলে দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেন বলে অভিযোগ তদন্তকারীদের। চিকিৎসকদের তৎপরতায় যদি কোনও শিশু বেঁচে যেত, তিনি আবারও তাদের হত্যার চেষ্টা করতেন বলে অভিযোগ।
লুসি লেটবি। ছবি: সংগৃহীত
লুসি নিজে অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। চেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নার্সিংয়ের ডিগ্রিপ্রাপ্ত ওই নার্স ঠিক কী কারণে এমন ‘সিরিয়াল কিলার’ হয়ে উঠলেন তা নিয়ে অবশ্য নিশ্চিত নন কেউই। মামলা প্রায় ছ’মাস ধরে চলতে পারে বলে জানিয়েছেন জুরিরা।