ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যাওয়া, চুলকানি, খসখসে হয়ে যাওয়া, ফোস্কা পড়া এগজিমার অন্যতম লক্ষণ। ছবি: সংগৃহীত।
চামড়ার অসুখ হিসাবে এগজিমা খুবই পরিচিত নাম। চিকিৎসা পরিভাষায় এর নাম ‘অ্যাটপিক ডার্মাইটিস’। ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যাওয়া, চুলকানি, খসখসে হয়ে যাওয়া, ফোস্কা পড়া এগজিমার অন্যতম লক্ষণ। চিকিৎসার পরিভাষায় এরই নাম অ্যাটপিক ডার্মাটাইটিস।
ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাকের সংক্রমণের কারণেও এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। ছবি: সংগৃহীত।
কেন হয় এই রোগ?
এই সমস্যার নির্দিষ্ট কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে অনেক চিকিৎসক মনে করেন, জিনগত এবং পরিবেশগত কারণের সমন্বয়েই এগজিমা হয়। বাবা কিংবা মায়ের কারও এই সমস্যা থাকলে, সন্তানেরও রোগ হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। এ ছাড়া সাবান, শ্যাম্পু, ডিটারজেন্ট, ডিজ়ইনফেকট্যান্ট থেকে অ্যালার্জি হয়েও এগজিমা হতে পারে। ধুলো, কোনও পোকামাকড়, পোষ্য, ফুলের রেণুর কারণেও এই রোগ হতে পারে। ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাকের সংক্রমণের কারণেও এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত ঠান্ডা, বেশি আর্দ্রতা বা আর্দ্রতার অভাব কিংবা বেশি ঘাম হওয়া— আবহাওয়াগত কারণেও এগজিমা হতে পারে। অনেকের দুগ্ধজাত খাবার, ডিম, বাদামজাতীয় তৈলবীজ, সয়াবিন, আটা-ময়দার খাবার, রেডমিট, মাশরুম সহ্য হয় না, খাবারও অনেক সময়ে এগজিমার ঝঁকি বাড়ায়। আগে বলা হত, এই রোগের কোনও চিকিৎসা হয় না। তবে এখন চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন এগজিমা থেকে সম্পূর্ণ আরোগ্য সম্ভব। ঠিক চিকিৎসায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই একেবারেই সেরে যায় এই রোগটি। তবে ধৈর্যের সঙ্গে চিকিৎসার প্রক্রিয়াটি চালিয়ে যেতে হবে।
কী ভাবে সুস্থ হবেন?
১) সারা বছর ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করার অভ্যাস করুন। স্নান করার পর খুব বেশি ক্ষণ ভেজা গায়ে না থেকে ভাল করে মুছে নিয়ে ময়েশ্চারাইজ়ার লাগিয়ে নিন।
২) এক জামা দু’দিনের বেশি পরা উচিত নয়। অতিরিক্ত ঘাম হলে রোজের জামা রোজ ধুয়ে নিন। নিয়মিত ধোয়া অন্তর্বাস পরুন।
৩) অতিরিক্ত ক্ষার আছে এমন সাবান ব্যবহার না করাই ভাল। খেয়াল রাখতে হবে সাবান যেন মৃদু প্রকৃতির হয়।
৪) নারকেল তেল, অ্যালো ভেরা জেল অথবা অ্যাপল সাইডার ভিনিগার ব্যবহারেও উপকার পাবেন। এগুলি সারা গায়ে, বিশেষ করে আক্রান্ত স্থানগুলিতে অবশ্যই ব্যবহার করা যেতে পারে।
৫) ক্রিম, ময়েশ্চারাইজ়ারের মতো প্রসাধন সামগ্রীগুলি ফ্রিজে রাখুন। সেগুলি গায়ে মাখলে আরাম পাবেন।সাধারণ র্যাশ, চুলকানি হলে সেটা কয়েক দিনের মধ্যে সেরে যায়, তবে দীর্ঘ দিন ত্বকের সমস্যা কমতে না চাইলে এগজিমার বিষয়ে সতর্ক হোন।