অ্যালার্ম দিয়েও অনেক সময় ঘুম ভাঙতে চায় না। প্রতীকী ছবি।
বছর ২৮-এর তনিমা। সম্প্রতি একটি আইটি সংস্থায় চাকরি পেয়েছেন। সকালের শিফ্ট। তাই ভোর ভোর ঘুম থেকে উঠে পড়তে হয়। তনিমা এমনিতে ঘুমকাতুরে। সকালে উঠতেই পারেন না। অফিস যাওয়ার তাড়ায় এখন প্রতিদিনই অ্যালার্মের বিকট আওয়াজে ঘুম থেকে ওঠেন তিনি । অ্যালার্ম দিয়েও অনেক সময় ঘুম ভাঙতে চায় না। বেশ কিছু দিন এমন চলার পরে দুর্বল হয়ে পড়েন তনিমা। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসক জানালেন, সকালে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস নেই। অথচ জোর করে ঘুম থেকে ওঠার কারণেই এমন হচ্ছে।
সকলেরই এমন কিছু অভ্যাস আছে, যা দিনের পর দিন চলতে থাকলে শরীরের বারোটা বাজে। কখনও জেনে-বুঝে কিংবা কখনও না বুঝেই আমরা রোগবালাই ডেকে আনি। জেনে নিন, সকালের কোন কোন অভ্যাস অবিলম্বে বদলাতে হবে আপনাকে।
১) রাতে একটার পর একটা অ্যালার্ম লাগিয়ে শোওয়ার অভ্যাস অনেকেরই আছে! ফলে ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে একটার পর একটা অ্যালার্ম বন্ধ করতে হয়। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, যদি কেউ জোর করে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করেন, সে ক্ষেত্রে তার প্রভাব পড়ে ‘সার্কেডিয়ান ক্লক’, অর্থাৎ শরীরবৃত্তীয় ঘড়িতে। ঘুমের একটি নির্দিষ্ট চক্র রয়েছে। এক জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। রাত করে ঘুমিয়ে অনেকেই সকাল সকাল ওঠেন। ঘুমের চক্র অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এতে শরীরের কার্যক্ষমতা অনেক কমে যায়। তাই এক বারের বেশি অ্যালার্ম নয়।
২) অনেকেই ঘুম থেকে উঠে অগোছালো বিছানা রেখেই অন্য কাজে লেগে পড়েন। নানা গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজের বিছানা নিজে পরিষ্কার করলে সারা দিন চনমনে থাকা যায়। কর্মদক্ষতাও বাড়ে। নইলে সারা দিন অলস্য আসে।
ঘুম ভাঙার পর কফিতে চুমুক না দিয়ে দিন শুরু হয় না অনেকের। ছবি: সংগৃহীত।
৩) ঘুম ভাঙার পর কফিতে চুমুক না দিয়ে দিন শুরু হয় না অনেকের। ঘুম থেকে উঠলে এমনিতেই শরীরে কর্টিসোল হরমোন উৎপাদনের হার বেড়ে যায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, খালি পেটে একটু বেশি মাত্রায় কফি খেলেই কর্টিসোলের ক্ষরণ আরও অনেক বেশি বাড়ে। মানসিক চাপ বা ‘স্ট্রেস’-এর অত্যতম কারণ এই হরমোনটি। ফলে ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে দু’-তিন কাপ কফি খেয়ে নিলে মন ভাল হওয়ার পরিবর্তে মানসিক চাপ বেড়ে যাবে। শরীরে স্বাভাবিক মাত্রায় কর্টিসোলে ক্ষরণ বিপাকহার, রক্তচাপ আর রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তবে অত্যধিক মাত্রায় এর ক্ষরণ হাড়ের ক্ষতি করে, উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ ২ ডায়াবিটিস, এমনকি, হৃদ্রোগের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়।