পেশির শক্তি বাড়ানোর জন্য ছ’রকমের ব্যায়াম খুব কার্যকরী। ছবি: সংগৃহীত।
টান টান, ঝকঝকে চেহারা আর তরতাজা লুক পেতে নিয়মিত শরীরচর্চাই দরকার। শুধু কঠোর ডায়েটে কাজের কাজ হয় না। মেদ কমলেও শরীরকে ভিতর থেকে মজবুত করতে, পেশির শক্তি বাড়াতে ব্যায়াম একান্তই দরকার। দিনভর কাজের চাপ, খাওয়াদাওয়ার অনিয়ম, ভুল ডায়েট, শরীরচর্চার সময় কমে যাওয়ার কারণে মেদও জমছে পরতে পরতে। অথচ রোজ কিছুটা সময় শরীরচর্চায় দিলে ক্যালোরি পুড়বে, চেহারাও হবে নির্মেদ, টান টান।
কম সময়ে বেশি ঘাম ঝরানো.. এটাই যে কোনও ব্যায়ামের মূল কথা। ওজন ঝরানো, পেশির ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ‘কার্ডিয়োভাসকুলার ফিটনেস’ বাড়ানোর জন্য ছ’রকমের ব্যায়াম খুব কার্যকরী।
১) ডিএমটি সার্কিট
অল্প সময়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভাবে ‘ক্যালোরি বার্ন’ করতে ডিএমটি বা ‘ডায়নামিক মুভমেন্ট ট্রেনিং’ খুব ভাল ব্যায়াম। এর মধ্যে অনেকগুলি ব্যায়াম পড়ে যেমন—বার্পিস, মাউন্টেস ক্লাইম্বার্স, স্কোয়াট জাম্প, হাই নি ইত্যাদি। বার্পিসে আবার চার ধরনের ব্যায়াম করা যায় যেমন জাম্প, স্কোয়াট, পুশ-আপ এবং প্ল্যাঙ্ক। এই ব্যায়াম বুক, হাত, পা এবং মূল পেশি-সহ একাধিক পেশিকে শক্ত করে তোলে। হজমশক্তি বাড়ায়। স্কোয়াট জাম্প পা, নিতম্ব শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
২) ফ্যাট বার্নআউট
তাড়াতাড়ি মেদ ঝরাতে অনেক রকম ‘পাওয়ার এক্সারসাইজ়’ আছে। তার মধ্যে পড়ে জাম্পিং জ্যাক, দৌড়নো, বক্স জাম্প, কেটলবেল সুইংস, ডাম্পবেল স্কোয়াট, মেডিসিন বল স্ল্যাম্প ইত্যাদি। এগুলি সবই কার্ডিয়ো ব্যায়াম। শরীরের প্রতিটি পেশি ব্যবহৃত হয় এই সব ব্যায়ামের সময়ে। তাই দ্রুত ক্যালোরি ঝরে, ওজনও কমতে থাকে।
৩) স্ট্রেনথ ও কন্ডিশনিং
মূলত পেশির ব্যায়াম। স্কোয়াট, ডেডলিফটস, বেঞ্চ প্রেস, পুল আপ নিয়ম মেনে করলে পেশির শক্তি বাড়বে, পাশাপাশি ক্যালোরিও ঝরবে। পুল এক্সারসাইজ়ের ক্ষেত্রে নজরে থাকে পিঠ, বাইসেপস, রিয়ার ডেল্ট। এর মধ্যে থাকে পুল আপ, চিন আপ, ল্যাট পুলডাউন, বারবেল রো, কেবেল কার্লস, হ্যামার কার্লস, রিভারস পেক ডেক ইত্যাদি।
পেশির শক্তি বাড়াবে এই ব্যায়াম। ছবি: সংগৃহীত।
৪) আফটারবার্ন ইপিওসি
শরীরচর্চার সময় শেষ হয়ে গেলেও ক্যালোরি ঝরতে থাকবে আপনা-আপনিই। তার জন্য এই বিশেষ রকম অভ্যাস রপ্ত করিয়ে দেন প্রশিক্ষকেরা। একে বলা হয় ‘একসেস পোস্ট-এক্সারসাইজ় অক্সিজেন কনসাম্পশন’।
৫) ব্যাটল রোপস
দড়ি নিয়ে কসরত। শরীরের উপরিভাগের মেদ ঝরানোর জন্য আদর্শ ব্যায়াম। এতে হার্টও ভাল থাকে। দড়ি দিয়ে কসরতের অনেক ধরন আছে সেটা প্রশিক্ষকের থেকে শিখে নিতে হয়, যেমন-অল্টারনেটিভ ওয়েভস, ডাবল ওয়েভস, স্ল্যামস।
৬) প্লায়োমেট্রিক বক্স জাম্প
লাফঝাঁপের শরীরচর্চা। ঘাম ঝরানো এবং পেশির ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য উপযোগী প্লায়োমেট্রিক ব্যায়াম। শরীর যত হালকা হবে, তত এই ব্যায়াম করতে সুবিধা। ওজনে ভারী ব্যক্তিরা প্রথমেই এই ওয়ার্কআউট করার চেষ্টা করবেন না। তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে। কারণ এই প্রশিক্ষণে জাম্পিং এবং হপিংয়ের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। পায়ের পেশি এবং গ্লুটেল মাসলের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর জন্যই এই ব্যায়াম করা হয়। প্লায়ো ব্যায়াম করার জন্য খোলামেলা জায়গা দরকার হয়। উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা, ডায়াবিটিস ঘটিত স্নায়ুর সমস্যা থাকলে, এই ব্যায়াম না করাই ভাল। হাঁটু-অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, আর্থ্রাইটিস থাকলেও এই ব্যায়াম করা উচিত নয়।