হার্টে ব্লক আছে কি না বোঝা যাবে কিছু লক্ষণে। প্রতীকী ছবি।
বুকে ব্যথা হচ্ছে মানেই কি হার্টের সমস্যা? অ্যাঞ্জিয়োগ্রাম করানোর দরকার আছে কি? একটানা ঠিক কত ক্ষণ ধরে বুকে ব্যথা হলে সেটা আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে? বুকের ঠিক কোনখানে ব্যথা হওয়া বিপজ্জনক? এমন নানা প্রশ্নের উত্তর ঠিকমতো না জানা থাকার কারণেই উদ্বেগ বাড়ে বেশির ভাগেরই। আচমকা চোখে অন্ধকার দেখা বা কয়েক মিনিটের জন্যে জ্ঞান হারিয়ে ফেলার সমস্যাকে অনেকেই গ্যাস বা অম্বলের সমস্যা বলে এড়িয়ে যান। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এর নেপথ্যে থাকে হৃদ্যন্ত্রের গোলযোগ। হার্টের ভাল্ভের ত্রুটি থাকলে বা হৃৎস্পন্দনের হার দ্রুত ওঠানামা করলে এমন নানা লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
এই প্রসঙ্গে হৃদ্রোগ চিকিৎসক দিলীপ কুমার জানাচ্ছেন, হার্টের রক্তনালিতে ব্লক রয়েছে কি না, তা জানতেই করোনারি অ্যাঞ্জিয়োগ্রাম করা হয়। এই পদ্ধতিকে বলে অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফি। অ্যাঞ্জিয়োগ্রাম কখন করতে হবে বা করার দরকার আছে কি না, তা কিছু লক্ষণ দেখে বোঝেন চিকিৎসকেরা।
কী কী সেই লক্ষণ?
চিকিৎসক জানাচ্ছেন, হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা হয় বুকের মাঝখানে। একটানা ২০ মিনিটের বেশি যদি ব্যথা করতে থাকে, বুকের সঙ্গে সঙ্গে যদি চোয়াল বা হাতে ব্যথা হয়, তা হলে তা যথেষ্ট উদ্বেগের। অনেক সময়ে দেখা যায়, হাঁটাচলা করার সময়ে বুকে চাপ চাপ ব্য়থা হচ্ছে, আবার বসে গেলে কিছুটা আরাম হচ্ছে। এটাই হৃদ্রোগের অন্যতম বড় লক্ষণ। তখন দেরি না করে কাছের কোনও হাসপাতালে পৌঁছে যাওয়া দরকার।
বুকের বাঁ দিকে ব্যথা তো বটেই, অনেক সময়ে গোটা বুক জুড়েই চাপ ও অস্বস্তি অনুভব করেন রোগী। সঙ্গে শ্বাসকষ্টের সমস্যাও দেখা যায়। অনেকেরই এই সময়ে দরদর করে ঘাম হয়। অম্বল বা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা হতেও দেখা যায়। খুব অল্পেই ক্লান্ত হয়ে পড়া, সামান্য শারীরিক কাজেই হাঁপাতে দেখা যায়। এমনকি, এক জায়গায় বসে থেকেও তীব্র ক্লান্তি বোধ হতে পারে।
চিকিৎসক জানাচ্ছেন, ক্রনিক কিডনির অসুখে রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে হার্ট ব্লক হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকেও এই ঝুঁকি তৈরি হয়।বয়স বাড়লে হৃদ্যন্ত্রে যে ব্লকেজ হয়, তা বহু ক্ষেত্রেই খুব ধীরে ধীরে হয়। ফলে শরীর কিছুটা মানিয়ে নেয়। তাই উপসর্গ খুব একটা তীব্র হয় না। অল্প শ্বাসকষ্ট থাকে। চলাফেরা করলে বাড়ে। ক্লান্তি, দুর্বলতার সঙ্গে সঙ্গে মাথা ঝিমঝিম করে মাঝেমাঝে। রোগ বাড়লে, রোগী কয়েক সেকেন্ডের জন্য চোখে অন্ধকার দেখতে পারেন। আচমকা মাথা ঘুরে যেতে পারে। কয়েক সেকেন্ডের জন্য অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। এমন হলে তখন হার্টের পরীক্ষা করিয়ে দেখে নেওয়া হয়, কোথায় ব্লকেজ হয়েছে। তাই লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়াই ভাল।