উপযুক্ত চিকিৎসার সাহায্য নিয়ে ব্রেন টিউমারের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া খুব কঠিন নয়।
মানসিক চাপ, প্রবল ধকলের ফলে মাথা ব্যথা হতেই পারে। কিন্তু মাথার যন্ত্রণার সঙ্গে যদি থাকে বমি, ভুলে যাওয়া ও আচমকা ব্ল্যাক আউটের মতো উপসর্গ, তবে সতর্ক হতে হবে বইকি। এ সব মস্তিষ্কের টিউমারের উপসর্গ হতেই পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, মোট ২ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ প্রতি বছর ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হন।
ব্রেন টিউমার শব্দটি কানে এলেই আতঙ্ক দানা বাঁধে মনে। অথচ উপযুক্ত চিকিৎসার সাহায্য নিয়ে ব্রেন টিউমারের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া খুব কঠিন নয়। তবে টিউমার যদি ক্যানসার-যুক্ত হয়, তা হলে সেটা চিন্তার বিষয়। চিকিৎসকদের মতে, ঠিক সময়ে রোগ শনাক্ত করে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মস্তিষ্কের টিউমার বাদ দিয়ে রোগীকে আবার স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দেওয়া যায়।
কী কী লক্ষণ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে?
১) এই অসুখের অন্যতম উপসর্গ হল মাথার যন্ত্রণা। টিউমারের ক্ষেত্রে মাথা ব্যথার ধরনটা অন্য রকম হয়। এ ক্ষেত্রে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তীব্র মাথার যন্ত্রণা করে।
২) শরীরে জ্বর নেই, তবুও কাঁপুনি শুরু হতে পারে। কিছু ক্ষণ পর আপনা থেকেই কমে যায়। মাথা ব্যথার সঙ্গে সারা ক্ষণ বমি বমি ভাব হয়।
৩) সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কোনও ঘটনার কথা বেমালুম ভুল যাওয়া।
প্রতীকী ছবি।
৪) সারা দিন ঘুম ঘুম ভাব থাকে, ঘুম পায়। কোনও কাজ করতে আলস্য আসে।
৪) মস্তিষ্কের কোন অংশে টিউমার হয়েছে তার উপরেও কিছু কিছু লক্ষণ নির্ভর করে। সেরিব্রামের টেম্পোরাল লোবে টিউমার হলে দেখতে অসুবিধে হয়।
৫) হাত পা নাড়াচাড়া করতে সমস্যা হয়। হাঁটাচলার সময় ভারসাম্য বজায় থাকে না।
৬) ভাবনা ও বলার মধ্যে তালমিলের অসুবিধে হতে পারে।
৭) হাত দিয়ে কোনও জিনিস শক্ত করে ধরতে সমস্যা হয়। হাতে জোর কমে যায়।
৮) ঢোক গিলতে ও খাবার খেতে অসুবিধা হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে গন্ধের বোধ চলে যায়।
ব্রেন টিউমারে খাওয়ার ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। তবে রোগের লক্ষণগুলির চিকিৎসা ওষুধ দ্বারা করা সম্ভব। টিউমারের যে সব লক্ষণ, যেমন মাথাব্যথা ও বমি হওয়া— এই সব লক্ষণের চিকিৎসা ওষুধ দিয়ে করা হয়, কিন্তু সাময়িক ভাবে। টিউমার যখন আস্তে আস্তে বড় হবে, টিউমারের লক্ষণগুলি আরও বেশি প্রকট হয়ে ধরা পড়বে। যার ফলে ওষুধ দিয়ে সাময়িক ভাবে তার লক্ষণগুলিকে কিছু দিন কমিয়ে রাখা যাবে। কিন্তু ওষুধের চিকিৎসা টিউমারের জন্য নয়।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, পুষ্টিকর খাদ্যাভাস ও নিয়মিত শরীরচর্চা করে ব্রেন টিউমার ঠেকানো যায়। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক গ্যাজেট ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিত। রেডিয়েশনের ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে। উপরে আলোচ্য উপসর্গগুলি দেখা দিলে হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।