শারীরিক কসরত ছাড়া ওজন কমে যাওয়ার নেপথ্যে আরও একটি কারণ হতে পারে থাইরয়েড। ছবি: শাটারস্টক
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেই অনেক রোগবালাইতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে। অতিরিক্ত ওজন নানা শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকেই বিভিন্ন নিয়ম, বিধিনিষেধ মেনে চলেন। রোজ জিমে যান। নিয়ম মেনে পরিমিত খাওয়াদাওয়া করেন। দৌড়ঝাঁপ, হাঁটাহাঁটি, যোগাসন, প্রাণায়াম তো আছেই। অনেক কসরত করলে তবে ওজন বাগে আনা সম্ভব হয়। কিন্তু অনেক সময়ে দেখা যায়, কোনও রকম পরিশ্রম ছাড়াই হঠাৎ ওজন কমে যাচ্ছে। এ কিন্তু শরীরের জন্য একেবারেই ভাল নয়। কোনও কারণ ছাড়াই ওজন হু হু করে কমতে থাকলে, অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে যদি শরীরের ওজন কোনও চেষ্টা ছাড়াই ৫ কেজি মতো কমে যায়, তা হলে বুঝতে হবে শরীরের অন্দরে কোনও সমস্যা দেখা দিয়েছে।
কী কী শারীরিক অসুস্থতার কারণে ওজন কমে যায়?
ডায়াবিটিস: রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে অনেকেরই ওজন কমে যায়। টাইপ-২ ডায়াবিটিস মানে ডায়াবিটিস মানে রক্তে ইনসুলিনের পরিমাণ কমে যাওয়া। ইনসুলিনের অভাবে শরীরে কোষগুলি নিজেদের সচল ও শক্তিশালী রাখতে পেশি ও চর্বির সাহায্য নেয়। ফলে শরীরের সামগ্রিক ওজন হ্রাস পায়।
ডিমেনশিয়া: ওজন কমার সঙ্গে ডিমেনশিয়ারও যোগসূত্র আছে। ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়া মানেই স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়া। এর প্রভাব পড়ে খাওয়াদাওয়াতেও। সঠিক সময়ে ও পরিমাণে খাওয়ার কথা মনে থাকে না। দীর্ঘ দিন ধরে এমন অনিয়ম চললে স্বাভাবিক ভাবে ওজন কমবে।
মানসিক চাপ: ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বা কাজের প্রবল চাপ— মানসিক উদ্বেগ দিন দিন বাড়ছে সকলের মধ্যে। স্ট্রেস হরমোন বিপাকহারের উপর প্রভাব ফেলে। বিপাকক্রিয়া আবার শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে বিপাকক্রিয়ার অস্বাভাবিকতায় বাড়তে পারে ওজন।
শরীরে থাইরক্সিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে গেলে বিপাকক্রিয়ায় তার প্রভাব পড়়ে। ছবি: শাটারস্টক।
থাইরয়েড: শারীরিক কসরত ছাড়া ওজন কমে যাওয়ার নেপথ্যে আরও একটি কারণ হতে পারে থাইরয়েড। শরীরে থাইরক্সিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে গেলে বিপাকক্রিয়ায় তার প্রভাপ পড়়ে। এই ফলে বিপাক হার পেড়ে যায়, ফলে ওজন কমে যাওয়া, হৃদ্স্পন্দন বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা হয়।
ক্যানসার: কর্কট রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলির মধ্যে অন্যতম হল ওজন কমে যাওয়া। ক্যানসার আক্রান্তদের মধ্যে ৪০ শতাংশ রোগীর ওজন হ্রাস পেতে দেখা যায়। বিশেষ করে খাদ্যনালি, পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়, ফুসফুসের ক্যানসারের ক্ষেত্রের ওজন হ্রাস পাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে।