কী ভাবে কমবে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি? ছবি: সংগৃহীত।
ভুলো মন নিয়ে অনেকেই নানা রকমের ব্যঙ্গ করে থাকেন। কিন্তু স্মৃতিভ্রম কতটা বিপজ্জনক হতে পারে, তার উদাহরণ হল ডিমেনশিয়া। ল্যানসেট পত্রিকার রিপোর্ট বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যে ভারতবর্ষে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হবেন প্রায় এক কোটি চোদ্দ লক্ষেরও বেশি মানুষ। সামগ্রিক বা আংশিক স্মৃতিশক্তি লোপ, যুক্তি দিয়ে ভেবেচিন্তে কথা বলতে অসুবিধা, সিদ্ধান্ত নেওয়ার অক্ষমতার মতো একাধিক সমস্যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় ডিমেনশিয়া বলা হয়। সবচেয়ে বহুল ও দূরারোগ্য ডিমেনশিয়ার উদাহরণ হল অ্যালঝাইমার্স। শুধু ভারতই নয়, বিশ্ব জুড়েই বাড়ছে এই রোগের প্রকোপ। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অফিসে দীর্ঘ ক্ষণ যাঁরা বসে কাজ করেন, তাঁদের অন্যদের তুলনায় ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। জামা জার্নালে প্রকাশিত সমীক্ষা অনুযায়ী, অফিসে যাঁরা দীর্ঘ ক্ষণ একটানা বসে কাজ করেন, তাঁরা নিয়ম করে শরীরচর্চা করলেও এই রোগের ঝুঁকি এড়াতে পারেন না। সমীক্ষায় প্রায় ৪৯, ৮৪১ জন পুরুষ ও মহিলা অংশগ্রহণ করেছিলেন, যাঁদের সকলেরই বয়স ৬০ বা তার উপরে ছিল। সমীক্ষা অনুযায়ী, দীর্ঘ ক্ষণ বসে কাজ করার অভ্যাস আমাদের মস্তিষ্কের পাশাপাশি আমাদের শরীরকেও প্রভাবিত করে। নিয়মিত ব্যায়াম করেও সেই ক্ষতির হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায় না। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা দিনে ১০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বসে অফিসে কাজ করেন, তাঁদের সাত বছরের মধ্যে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। যাঁরা ১০ ঘণ্টার কম সময় কাজ করেন, তাঁদের থেকে আট শতাংশ বেশি। কেবল অফিসের ডেস্কেই নয়, বাড়িতে ফিরে টিভির সামনে কিংবা গাড়িতে দীর্ঘ ক্ষণ বসে থাকলেও একই সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে।
তা হলে কি দীর্ঘ ক্ষণ বসে থাকার মাঝে উঠে দাড়ালে কোনও লাভ হয়?
অনেকেই আছেন, যাঁরা দীর্ঘ ক্ষণ বসে কাজ করার মাঝে উঠে হাঁটাচলা করেন। তবে সমীক্ষা বলছে, এই অল্প হাঁটাহাঁটিতেও কোনও লাভ হবে না। হাঁটাহাঁটি করলেন অথচ ১০ ঘণ্টা চেয়ারে বসে কাজও করলেন, সে ক্ষেত্রে ক্ষতিটা কিন্তু একই হবে।
ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমাতে হলে সচল থাকতে হবে। ছবি: সংগৃহীত।
তা হলে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমবে কী করে?
ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমাতে হলে সবার আগে অফিসে বসে কাজ করার সময়টা কমাতে হবে। চেষ্টা করতে হবে ৯ থেকে সাড়ে ৯ ঘণ্টার মধ্যে কাজ শেষ করে ফেলার। এক জায়গায় বসে দুপুরের খাবার না খেয়ে অন্য জায়গায় গিয়ে খেতে পারেন। সকালের দিকটা বেশি হাঁটাচলা করতে হবে। দিনের বেশির ভাগ সময়টা সচল থাকতে হবে।