মোবাইলের নেশায় তাদের মধ্যেই বই পড়ার প্রবণতা কমে যাচ্ছে, এমনটা হতে দেবেন না। ছবি: শাটারস্টক
সকলেই চান তাঁর সন্তান তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন ও মেধাবী হোক। তাই শিশুর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হওয়ার পাশাপাশি তার মগজাস্ত্রেও শান দেওয়াও প্রয়োজন রয়েছে। সাধারণত ৫ বছর বয়সের মধ্যেই শিশুর মস্তিষ্কের সার্বিক গঠন ও বিকাশ প্রায় সম্পন্ন হয়ে যায়। তবে একটু নজর না রাখলেই এই বয়স থেকে শিশুরা গ্যাজেট কিংবা টিভির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। এতে তাদের মস্তিষ্কের বিকাশ ব্যহত হয়। দোষটা তাঁদের নয়, আমরাই তো আমাদের সুবিধার্থে তাদের হাতে বাড়িয়ে দিই মোবাইল কিংবা অন্য কোনও গ্যাজেট। বুঝতেও পারি না এই অভ্যাস তাদের পক্ষে কতটা ক্ষতিকর।করোনাকালে শিশুদের শিক্ষার জন্য কম্পিউটার, ল্যাপটপ, স্মার্টফোনের মতো বৈদ্যুতিন সামগ্রীর উপর নির্ভরতা আগের তুলনায় বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে। নার্সারির শিশুদেরও চলেছে অনলাইন ক্লাস। ফলে মোবাইলের প্রতি ঝোঁক অনেক বেড়েছে তাঁদের। খাওয়ার সময় হোক বা অবসর সময়ে মোবাইলে হয় কার্টুন নয় গান শুনেই দিন কাটাচ্ছে খুদেরা। এখনই লাগাম না টানলেই কিন্তু বিপদ!
১) মোবাইলের নেশায় তাদের মধ্যেই বই পড়ার প্রবণতা কমে যাচ্ছে। এমনটা হতে দেবেন না। পড়ার বইয়ের পাশাপাশি গল্পের ও ছড়ার বই পড়ার প্রতি তাদের উৎসাহী করে তুলুন। এই উপায়ে তাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়বে। বুদ্ধিরও বিকাশ হবে।
২) সন্তানের সঙ্গে কথা বলার সময় বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করতে পারেন। অনেক শিশুর মধ্যেই অঙ্গভঙ্গি নকল করার প্রবণতা থাকে। এই উপায়ে শিশুদের স্মৃতিশক্তি ভাল হয় বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
৩) পড়াশোনার সময় উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার করুন। ধরুন আপনি খুদেকে ‘অ,আ,ক,খ’ শেখাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে যদি আপনি বিভিন্ন গাঢ় রঙের রঙ ব্যবহার করে খাতায় লেখেন তা হলে শিশুর মনে রাখতে সুবিধা হবে।
৪) মেমরি গেম খেলাও শিশুদের বুদ্ধির বিকাশে সহায়ক হতে পারে। এতে শিশুদের একাগ্রতা বাড়ে।
৫) শিশুর বুদ্ধির বিকাশে সহায়তা করতে পারে গান। ছোটদের মনোযোগ বাড়াতেও গান শেখার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের চর্চা করাও ভাল। এতে বুদ্ধিও বাড়ে, মনও ভাল থাকে।
৬) শিশুদের বেশি করে প্রশ্ন করতে উৎসাহী করে তুলুন। তাঁরা যত প্রশ্ন করবে ততই তাদের ভাবনার বিকাশ হবে। বাড়বে বুদ্ধি।
৭) ছোট থেকেই শিশুর খাদ্যতালিকায় এমন কিছু খাবার রাখা দরকার, যা শিশুর বুদ্ধির বিকাশে ঘটাতে পারে। এই বয়সে শিশুদের পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজন। জাঙ্ক ফুড বা প্রসেসড ফুড থেকে শিশুদের যতটা দূরে রাখতে পারবেন, ততই ভাল। শিশুদের রোজ অল্প করে আমন্ড খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ থাকে। বাদাম খেলে শরীরে উপকারী ফ্যাট যুক্ত হয়। স্মৃতিশক্তিও ভাল হয় আর মস্তিষ্কের কর্মদক্ষতাও বাড়ে। শিশুদের রান্নায় নুন, চিনি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকুন।