কোন কোন কারণে পিছিয়ে যেতে পারে ঋতুবন্ধ? ছবি: সংগৃহীত।
বয়স ৫০ ছুঁইছুঁই হলেই মহিলাদের রাতের ঘুম উড়ে যায় ঋতুবন্ধ বা মেনোপজের কথা ভেবে। ঋতুবন্ধ একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া, একটি বয়সের পর সব মহিলাই ঋতুবন্ধের সম্মুখীন হন। তবুও ঋতুবন্ধের কারণে অনেকেই অবসাদে ভোগেন। ৪০-এর পর মহিলাদের শরীর থেকে দ্রুত হারে ডিম্বাণুর সংখ্যা কমতে শুরু করে। এর সঙ্গে কমে আসে সন্তানধারণের সম্ভাবনাও। ডিম্বাণু নিঃশেষিত হয়ে গেলে ডিম্বাশয়ে আর ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের ক্ষরণ হয় না। তখনই হয় ঋতুবন্ধ। বছর খানেক টানা ঋতুস্রাব না হলে ধরে নিতে হবে যে, ঋতুবন্ধ হয়ে গিয়েছে।
স্ত্রীরোগ চিকিৎসকদের মতে, মহিলাদের গড়ে ৫১ বছর বয়সে ঋতুবন্ধ হয়। মূলত ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সের মধ্যই অধিকাংশ মহিলার ঋতুবন্ধ হয়। তবে অনেকের ক্ষেত্রেই ধূমপান, গর্ভনিরোধকের অধিক ব্যবহার, বাড়তি ওজন ঋতুবন্ধ পিছিয়ে যায়।
ঠিক কী কী কারণে পিছিয়ে যেতে পারে ঋতুবন্ধ?
১) জিনগত কারণে ঋতুবন্ধ দেরিতে হতে পারে। যাঁদের মায়েদের ঋতুবন্ধ দেরিতে হয়েছে, সেই মহিলাদের ক্ষেত্রেও সম্ভাবনা থেকে যায়।
২) ওজন বেশি হলেও ঋতুবন্ধ দেরিতে হতে পারে। শরীরে অতিরিক্ত মেদ থাকলে সেই মেদ থেকে ইস্ট্রোজেন তৈরি হয়। তাই স্বাভাবিক ভাবেই ঋতুবন্ধ পিছিয়ে যায়।
৩) যাঁদের থাইরয়েডের সমস্যা আছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও ঋতুবন্ধ দেরিতে হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
৪) যে সব মহিলার শরীরে ইস্ট্রোজেনের ক্ষরণ বেশি, তাঁদেরও দেরিতে ঋতুবন্ধ হয়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে বেশি বার যাঁরা অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন, তাঁদের ঋতুবন্ধ দেরিতে হয়েছে।
৫) বেশি বয়সেও যে মহিলারা নিয়মিত সঙ্গম করেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও ঋতুবন্ধ দেরিতে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ঋতুবন্ধ দেরিতে হলে মহিলাদের মূত্রথলি, জরায়ু এবং স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। ৫৫ পেরিয়ে গেলেও ঋতুস্রাব বন্ধ না হলে অবশ্যই এক বার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। শরীরের স্থিতি বুঝে তাঁরা বিভিন্ন পরীক্ষা করে বুঝতে পারবেন, আদৌ ক্যানসারের আশঙ্কা আছে কি না