রক্তে শর্করার মাত্রা কখন, কেমন থাকে তার উপরেই নির্ভর করে তার শরীরচর্চা, ডায়েট এবং ওষুধের ধরন। ছবি- সংগৃহীত
বয়স ৪০ পেরিয়েছে। তার উপর প্রতি সপ্তাহান্তে বাইরে খানা-পিনা। রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ল কি না বাড়ল, সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই জিম করতে ছুটলেন। সন্ধেবেলা বাড়ি ফিরেই যোগাসন। ক্যালোরি ঝরাবেন বলে দু’বেলা এমন শরীরচর্চা করলেন যে হঠাৎ এক দিন অসুস্থ হয়ে পড়লেন।
সুস্থ থাকার জন্য সকলেরই শরীরচর্চা জরুরি। তবে ডায়াবিটিস রোগীর ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু আলাদা। এই সব রোগীর ক্ষেত্রে রক্তে শর্করার মাত্রা কখন, কেমন থাকে তার উপরেই নির্ভর করে তার ডায়েট এবং ওষুধের ধরন। শরীরচর্চার ক্ষেত্রেও কিন্তু এই একই নিয়ম মেনে চলতে হবে।
শরীরচর্চার আগে ডায়াবিটিস সম্পর্কে কী জানা জরুরি?
ডায়াবিটিসকে চিকিৎসাশাস্ত্রে ‘হাইপারগ্লাইসেমিয়া’ বলা হয়। হালকা খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টা পরে ব্যায়াম শুরু করতে পারেন। কিন্তু এমন ব্যায়াম করবেন না যে, হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়। ধরুন কোনও ডায়াবেটিক রোগীর ইনসুলিন বা ওষুধ চলছে। ফলে রক্তে তার গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের কাছাকাছিই রয়েছে। কিন্তু রোগী বাইরে থেকে সেটা বুঝতে পারছেন না। তিনি খালি পেটে খুব ভারী ব্যায়াম করতে গেলেন। এতে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। অর্থাৎ, রক্তে শর্করার মাত্রা হুট করে অনেকটা নেমে যায়। হঠাৎ মাথা ঘোরা, বমি পাওয়া, চোখে অন্ধকার দেখার মতো নানা রকম উপসর্গ দেখা যায়।
কিছু খেয়ে ব্যায়াম শুরু করুন। খালি পেটে নয়। ছবি- সংগৃহীত
তবে কী করবেন?
চর্বি ঝরানোর জন্য শরীরচর্চা করতেই হবে। তবে কখন ব্যায়াম করছেন এবং কী ধরনের ব্যায়াম করছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে ঘুম থেকে উঠেই শরীরচর্চা করতে চলে যান। এতে হিতে বিপরীত হয়। ডায়াবিটিসের রোগীদের খালিপেটে শরীরচর্চা করতে বারণ করা হয়। খেয়াল করে দেখবেন, ডায়াবিটিসের পরীক্ষায় সব সময়ে ফাস্টিংয়ের চেয়ে পিপি-র রিপোর্টে রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি আসে। কারণ খাবার খাওয়ার পরে শর্করা শরীর কত তাড়াতাড়ি ভাঙতে পারছে এবং রক্তে পৌঁছচ্ছে, তার উপরেই নির্ভর করে কতটা সুস্থ থাকবেন। তাই কিছু খেয়ে ব্যায়াম শুরু করুন। খালি পেটে নয়। প্রাতরাশের কিছু ক্ষণ পরে শুরু করা যায় ব্যায়াম। বিকেলে হাঁটতে পারেন।