প্যাকেট বা কন্টেনারের খাবার থেকে কী বিপদ ঘনাচ্ছে? প্রতীকী ছবি।
জেনেবুঝেই বিষ খাচ্ছেন? প্যাকেটজাত খাবার এখন পছন্দ অনেকের। সে চিপ্স হোক বা অর্ধেক রান্না করা মাছ-মাংস। আর তা-ই হয়ে উঠছে বিপদের কারণ। গবেষণা বলছে, ফুড প্যাকেজিংয়ের যে প্রক্রিয়া আর তাতে যা যা ব্যবহার করা হয়, তা থেকে ক্ষতিকারক সব রাসায়নিক ঢোকে শরীরে। এমনই প্রায় ৩৬০০ রকম রাসায়নিক চিহ্নিত করা গিয়েছে, যা প্যাকেটজাত খাবার থেকে মানব শরীরে ঢুকেছে। ‘এক্সপোজ়ার সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল এপিডেমোলজি’ বিজ্ঞান পত্রিকার একটি গবেষণাপত্রে এমনটাই দাবি করা হয়েছে।
গবেষকরা বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষায় দেখেছেন, পিৎজ়া, বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই থেকে শুরু করে যে কোনও রকম ‘জাঙ্ক ফুড’, প্যাকেটজাত পানীয়ে ব্যবহার করা হয় গ্রিজ প্রুফ পেপার। যার মধ্যে থাকা ফ্লোরিনেটেড যৌগ বাড়িয়ে দেয় ক্যানসারের ঝুঁকি। ফুড প্যাকেজিংয়ের মধ্যে থাকে ফ্লোরিনেটেড রাসায়নিক, পলিফ্লুরোঅ্যালকাইল যৌগ, যা ক্যানসারের ঝুঁকি যেমন বাড়ায়, তেমনই বন্ধ্যত্বেরও কারণ হতে পারে। দীর্ঘ দিন ধরে এই সব রাসায়নিক শরীরে ঢুকলে থাইরয়েডের সমস্যা বাড়ে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, এমনকি শিশুদের ক্ষেত্রে মানসিক বিকাশও থমকে যেতে পারে।
৩৬০০ রকম রাসায়নিকের মধ্যে অন্তত ১০০টি মানুষের শরীরের জন্য বিষ। গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, খাবার প্যাকেটবন্দি করা ও সংরক্ষণের জন্যও কিছু রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে ‘বিসফেনল এ’ বা ‘বিপিএ’-র মতো রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছে, যা রক্তে মিশলে কিডনির সমস্যা তৈরি হতে পারে। সমস্যা হতে পারে প্রজননেও। বিজ্ঞান বলছে, যাঁদের মূত্রে বিপিএ রাসায়নিকটির ঘনত্ব বেশি, তাঁদের হৃদ্যন্ত্রের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও অধিক। পাশাপাশি ডায়াবিটিসের ঝুঁকিও বাড়ে।
দোকান থেকে প্যাকেট বা কন্টেনারে কোনও খাবার কিনে এনে তা সেই কন্টেনারেই গরম করা হয় অনেক সময়ে। এর থেকেও রাসায়নিক ঢোকে শরীরে। গবেষকদের দাবি, সারা বিশ্বে ব্যবহৃত পেপার র্যাপারের (বার্গার, প্যাস্ট্রি ব্যাগ) অথবা প্লাস্টিক কন্টেনারে থ্যালেট জাতীয় রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছে, যা হরমোনের ভারসাম্যই নষ্ট করে দিতে পারে। এই রাসায়নিক শরীরে বেশি ঢুকলে স্নায়বিক সমস্যা হতে পারে। পাশাপাশি, স্তন ক্যানসার ও জরায়ুমুখের ক্যানসারের ঝুঁকিও বহু গুণে বাড়িয়ে তোলে।